সাহেলান্থ্রাপাস
Sahelanthropus
প্রজাতিগত নাম: Sahelanthropus tchadensis

প্রাণিজগতের হোমিনিনাই উপগোত্রের একটি গণ বিশেষ। প্রায় ৭০ লক্ষ খ্রিষ্ট্রুর্বাব্দের দিকে এদের আবির্ভাব ঘটেছিল। আর ৬২ লক্ষ খ্রিষ্টপূর্ব্দের দিকে এদের এই গণের সকল প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যায়।

পশ্চিম-মধ্য আফ্রিকার চাদের তোরোস-মেনাল্লা অঞ্চলে এর জীবাশ্ম আবিষ্কার করেছিলেন- ফরাসি প্যালিওন্টোলজিস্ট মিশেল ব্রুনে
(Michel Brunet)- এর পরিচালিত প্রত্নতাত্ত্বিক।

এই প্রজাতটির সাথে নানা দিক থেকে হোমো গণ ও শিম্পাঞ্জির মিল রয়েছে। তাই অনেকে মনে করেন, জীবজগতের ক্রমবিবর্তনের ধারায় এই প্রজাতটি হয়তো হোমো গণ ও শিম্পাঞ্জির পূর্ববর্তী প্রজাতি ছিল। অনেকে এই প্রজাতিটিকে গরিলার পূর্ব-পুরুষ হিসেবেও বিবেচনা করে থাকেন।

John Gurche- এর আঁকা চিত্র

জীবাশ্ম হিসেবে পাওয়া গিয়েছিল ছোটো একটি করোটি, পাঁচ টুকরো চোয়ালের ভাঙা অংশ এবং কিছু দাঁত।
এগুলো ছিল পৃথক ছয় ব্যক্তির জীবাশ্ম।
এসকল নমুনা অনসরণ করে বিজ্ঞানীরা ধারণা করেছেন যে, এদের মস্তিষ্কের আধারটি ছিল ৩২০ থেকে ৩৮০ সিসি।  

প্রাপ্ত খুলিটিকে 'টুমাই খুলি' নামে অভিহিত করা হয়। উল্লেখ্য  স্থানীয় গোরান ভাষায় টুমাই শব্দের অর্থ হলো- জীবনের আশা।

এদের ছোট মুখে ছিল ছোটো ছেদন দাঁত। মূলত এই ছোটো ছেদন দাঁত থেকে অনুমান করা হয়- এরা ছিল গরিলা, শিম্পাঞ্জি'র পরের প্রজাতি। উল্লেখ্য, গরিলার ছেদন দাঁত খুব বড়, শিম্পাঞ্জির বড়, সাহেলান্থ্রাপাস-এর ছোটো, আধুনিক মানুষের খুব ছোট। এই ছোটো ছেদন দাঁত থেকে অনুমান করা যায়, এদের আগ্রাসী মনোভাব কম ছিল। আত্মরক্ষার জন্য এরা বড় বড় দলে বাস করতো। এবং দলের সদস্যদের ভিতরে পারস্পরিক সহযোগিত গড়ে উঠেছিল। এরা গরিলা ও শিম্পাজির চেয়ে অনেক বেশি শব্দ উচ্চারণের প্রাথমিক ক্ষমতা লাভ করেছিল। মস্তিষ্কের আকার বড় হওয়ায় এরা আগের প্রজাতিগুলোর তুলনায় অপেক্ষাকৃত জটিল চিন্তা করতে পারতো। সম্ভবত এরা দুই পায়ে চলতে শিখেছিল। 


সূত্র: