ধারণা
করা হয়, এর আদি নিবাস নেপাল ও ভারতের হিমালয় অঞ্চল। ক্রীতদাস
ক্রয়-বিক্রয়ের আমলে এই প্রথম চাষ হয় দক্ষিণ
আমেরিকার ব্রাজিল অঞ্চলে। কথিত আছে ক্রীতদাসরা পাতাকে বিছানায় তোষকের মত ব্যবহার
করতেন। বর্তমানে ব্রাজিল এবং হাওয়াই অঞ্চলে এই গাছটিকে আগাছা হিসেবে গণ্য করা হয়।
তবে এটি কিউবার এটি জাতীয় ফুল। কথিত আছে স্প্যানিশ উপনিবেশ আমলে নারীরা এই ফুলের
মধ্যে তাঁদের গোপন বার্তা লুকিয়ে আদান প্রদান করতেন। বর্তমানে ফ্লোরিডা,
ক্যারিবিয়ান অঞ্চল, গালফ কোস্টসহ সমগ্র ক্রান্তীয় উপক্রান্তীয় অঞ্চলে এই গাছ
দেখতে পাওয়া যায়। ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার অল্প ঠাণ্ডা অঞ্চলেও জন্মালেও,
শীতকালে মরে যায়। গ্রীষ্মে মাটির নিচের কন্দ থেকে আবার গজিয়ে ওঠে।এই গাছটি দেখতে অনেকটা কলাবতী আদা বা হলুদ গাছের মতো। এরূপ ভাবার কারণ হলো- এই গাছের পাতা আদার মতোই রাইজোম বা কন্দ থেকে গজায়। পাতাগুলো দেখতও আদার পাতার মতোই। গাছের উচ্চতা ৩-৫ ফুট হয়ে থাকে। এর পাতা বল্লমাকৃতির এবং অগ্রভাগ সূঁচালো। পাতার আকার ২০-৬১ সেমি লম্বা এবং ৫-১৩ সেমি চওড়া।
গ্রীষ্ম
থেকে শরৎকাল পর্যন্ত
শাখার মাথায় মঞ্জরী বের হয়। মঞ্জরীতে সাদা রঙের সুগন্ধী ফুল ফোটে।
ফুলের গুচ্ছ ১৫-৩০ সেমি লম্বা হয়। এর
পাপড়ির সংখ্যা চারটি। ফুটন্ত ফুল দেখতে অনেকটা প্রজাপতির মতো মনে হয়। তাই একে
ইংরেজিতে butterfly ginger lily
বলা হয়।
ফুলগুলো সন্ধ্যায় ফোটে, রাতে গন্ধ ছড়ায়, সকালে শুকিয়ে যায়। বাংলাদেশে এই ফুল ফোটে
বর্ষাকালে। তাই কদম, কেয়ার পাশাপাশি, দোলনচাঁপাকেও বর্ষার ফুল বলা হয়। তবে এর ফুল
গ্রীষ্ম থেকেই পাওয়া যায়। শীতকালে গাছের কাণ্ড মরে যায়। গ্রীষ্মে মাটির নিচের
কন্দ থেকে আবার কাণ্ড ও পাতা গজিয়ে ওঠে।অনেকে সখ করে টবে এই গাছ চাষ করে থাকেন। সাধারণত মাঝারি আকারের টবে এর চাষ হয়। অর্ধেক গোবর পাতা পচা সার, অর্ধেক দোআঁশ মাটির মিশ্রণ করে, টবের মাটি তৈরি করা হয়।