আহসান মুর্শেদ
(১৯৩৬-২০১৯)

নজরুল সঙ্গীত শিল্পী, প্রশিক্ষক ও স্বরলিপিকার।

১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই মার্চ সাতক্ষীরায় জন্মগ্রহণ করেন। তবে পৈতৃক বাসস্থান ছিল মুর্শিদাবাদ জেলার সালার গ্রামে। পিতা মোহাম্মদ হোসেন ছিলেন কবি ও পেশায় ছিলেন ম্যাজিস্ট্রট। মায়ের নাম সাঈদা খাতুন। পাকভারত বিভাজনের পর, আহসান মুর্শেদের পিতামাতা তদানীন্তন পূর্ব-পাকিস্তানে চলে আসেন। ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর পিতা মোহাম্মদ হোসেন কুষ্টিয়া স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।

১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে কুষ্টিয়ার সিরাজুল হক মুসলিম উচ্চবিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাশ করেন। এরপর উচ্চতর শিক্ষার জন্য ঢাকা চলে আসেন। ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি  ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ কলেজ থেকে বাণিজ্য বিভাগ থেকে আইকম পাশ করেন।

১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ থেকে বি.কম পাশ করেন।

তাঁর সঙ্গীতে হাতে খড়ি হয়েছিল কুষ্টিয়ায় ওস্তাদ ইব্রাহিম হোসেন খানের কাছে। এরপর তিনি  ১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দে ছায়ানট সঙ্গীবিদ্যায়তনে ভর্তি হন। উল্লেখ্য, তিনি ছিলেন ছায়ানট সঙ্গীত বিদ্যায়তনের প্রথম শিক্ষা-আবর্তনের ছাত্র। এই বিদ্যায়তনের পাঁচ বছরের শিক্ষা লাভের পর, ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে নজরুলসঙ্গীত বিভাগ থেকে পাশ করেন এবং ওই বছরেই ছায়ানট সঙ্গীত বিদ্যায়তনের শিক্ষক হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। ছায়ানটে তিনি শিক্ষক হিসেবে পেয়েছিলেন ছায়ানটের প্রথম অধ্যক্ষ ওস্তাদ মতিউর রহমান খান (মতি মিয়া), ওস্তাদ ফুল মোহম্মদ, সোহরাব হোসেন, শেখ লুৎফর রহমান প্রমুখ। এছাড়া তিনি রাগ সঙ্গীতের তালিম নিয়েছিলেন আজাদ রহমানের কাছে।

১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ই আগষ্ট তিনি বিবাহ করেন। এছাড়া এই বছরেই তিনি ঢাকা বাংলাদেশ বেতারে সঙ্গীতশিল্পীর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং নিয়মিত বেতার শিল্পী হিসেবে গান গাওয়া শুরু করেন।

১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশ টেলিভশনের নজরজসঙ্গীতের কণ্ঠশিল্পী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।

১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দে নজরুল একাডেমিতে নজরুলসঙ্গীতের শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত
এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক হিসেবে ছিলেন। এ ছাড়া তিনি আব্বাসউদ্দিন সঙ্গীত একাডেমি, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল সঙ্গীত বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন।

২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

তিনি নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি প্রমিতকরণ পরিষদের সদস্য ছিলেন। নজরুল ইন্সটিটিউট থেকে তাঁর ১৬টি নজরুল সঙ্গীতের স্বরলিপি প্রকাশিত হয়েছে।

২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি নজরুল একাডেমি সম্মাননা লাভ করেন।
২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি নজরুল পুরস্কার লাভ করেন।


সূত্র: