ইন্দিরাদেবী চৌধুরাণী

সঙ্গীতশিল্পী।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভ্রাতুষ্পুত্রী ও প্রমথ চৌধুরীর স্ত্রী।  

১২৮০ বঙ্গাব্দের ১৫ পৌষ (সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ১৮৭৩ খ্রিষ্টাব্দ) তারিখে ভারতের বোম্বাই প্রদেশের বিজাপুরের অন্তর্গত কালাদ্‌গিত-এ ইনি জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর, মায়ের নাম জ্ঞানদানন্দিনী।

১৮৭৮ খ্রিষ্টাব্দে, অর্থা তাঁর পাঁচ বৎসর বয়সে, ইনি তাঁর মায়ের সাথে বিলেতে যান।
১৮৮০
খ্রিষ্টাব্দে পিতামাতার সাথে দেশে ফেরার পর সিমলার অকল্যাণ্ড হাউসে ভর্তি হন।
১৮৮১
খ্রিষ্টাব্দে ইনি সিমলা থেকে কলকাতায় এসে লরেটা হাউসে ভর্তি হন। সেখানে ছয় বৎসর পড়াশুনা করার পর-
১৮৮৭
খ্রিষ্টাব্দে ইনি এন্ট্রান্স পাশ করেন। এফ. এ. ও বি. এ. প্রাইভেট পরীক্ষা দেন।
১৮৯১
খ্রিষ্টাব্দে বি. এ. পরীক্ষায় ইনি ইংরেজিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন। পরীক্ষায় (স্নাতক) মেয়েদের মধ্যে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম হওয়ায় ইনি পদ্মাবতী পদক লাভ করেন।

এরপর ইনি মার্টিনিয়ার স্কুলের একজন শিক্ষয়িত্রীর কাছে ফরাসি ভাষা শিখেন। এই সময় ইনি স্লেটার কাছে পিয়ানো ও মনজাটোর কছে বেহালা বাজানো শিখেন। এরপর ইনি ট্রিনিটি কলেজ অব মিউজিকের ইন্টারমিডিয়েট থিয়েরি পরীক্ষায় পাস করে ডিপ্লোমা লাভ করেন। বাদ্রিদাস সুকুলের কাছে ইনি ভারতীয় রাগ সঙ্গীতের শিক্ষা গ্রহণ করেন। এই সময় ইনি কিছুদিন সেতার বাজানো শেখেন।

প্রমথ চৌধুরী ও ইন্দিরাদেবী

১৮৯৯ খ্রিষ্টাব্দে বাংলা সাহিত্যের অন্যতম লেখক প্রমথ চৌধুরী সাথে এঁর বিবাহ হয়।

১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দে  ইনি প্রমথ চৌধুরীর সাথে শান্তিনিকেতনে এসে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। এখানে এসে ইনি সঙ্গীতভবনে নিয়মিত রবীন্দ্রসঙ্গীতের শিক্ষাদান শুরু করেন।
১৯৪৪
খ্রিষ্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভুবনমোহিনী পদক লাভ করেন।
১৯৫৬
খ্রিষ্টাব্দে ইনি বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৫৭
খ্রিষ্টাব্দে বিশ্বভারতী থেকে ডি-লিট লাভ করেন। 
১৯৫৯
খ্রিষ্টাব্দে রবীন্দ্র-ভারতী সমিতি কর্তৃক রবীন্দ্র-পুরস্কার লাভ করেন।
১৯৬০
খ্রিষ্টাব্দে ১২ অগাষ্ট তারিখে ইনি মৃত্যুবরণ করেন।

ইনি রবীন্দ্রঙ্গীতের বিশিষ্ট শিল্পী ও স্বরলিপিকার। ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী'র বেশ কিছু গানের হারিয়ে যাওয়া সুর স্মৃতি থেকে উদ্ধার করে স্বরলিপি করেন। এই স্বরলিপিগুলি স্বরবিতানের একবিংশ খণ্ড ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী (২১)-এ স্থান পেয়েছে। এঁর কণ্ঠে গীত কয়েকটি হিন্দুস্থানী গানের সুর শুনে- সেই গানের সুর অবলম্বনে রবীন্দ্রনাথ কয়েকটি গান রচনা করেন ('বড় শা করে এসেছি গো', 'সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে- ইত্যাদি) ইনি রবীন্দ্রনাথের বেশকিছু রচনার ইংরেজি অনুবাদ করে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন।


ইনি বেশকিছু গ্রন্থের রচয়িতা। তাঁর রচিত গ্রন্থগুলি হলো-
১। নারীর উক্তি (১৯২০ খ্রিষ্টাব্দ)
২। রবী
ন্দ্রঙ্গীতের ত্রিবেণী সঙ্গম (১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দ)
৩। রবীন্দ্রস্মৃতি (১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দ)

এঁর সম্পাদিত গ্রন্থ :
১। বাংলার স্ত্রী-চার (১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দ)
২। পুরাতনী (১৯৫৭ িষ্টাব্দ)


তথ্যসূত্র :
সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান
। প্রথম খণ্ড। জানুয়ারি ২০০২।