রজনীকান্ত সেন
গীতিকার, কবি ও সঙ্গীতশিল্পী। বাংলা গানের পঞ্চ-স্থপতির একজন।

১৮৬৫ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ জুলাই (১২ শ্রাবণ ১২৭২ বঙ্গাব্দ) সিরাজগঞ্জ (পুরাতন পাবনা জেলার মহকুমা) জেলার ভাঙাবাড়ি গ্রামে জন্মগ্তহণ করেন। পিতার নাম গুরুপ্রসাদ সেন। মায়ের নাম মনোমোহিনী দেবী। তিনি ছিলেন পিতামাতার তৃতীয় সন্তান।

তাঁর পিতা গুরুপ্রসাদ সেন ১৮৭৫ খ্রিষ্টাব্দে বরিশালের সাব-জজ পদ থেকে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেন। এরপর তাঁদের পুরো পরিবার তাঁর জ্যেঠার বড় ছেলে - বরদা গোবিন্দ এবং কালী কুমারের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। দূর্ভাগ্যবশত ১৮৭৮ খ্রিষ্টাব্দে তাঁরা উভয়েই আকস্মিকভাবে মৃত্যুবরণ করেন। ফলে, আকস্মিকভাবেই আর্থিকভাবে স্বচ্ছল পরিবারটি চরম আর্থিক সঙ্কটে নিপতিত হয়। এই কারণে শৈশবে রজানীকান্তকে আর্থিক কষ্টের ভিতর দিয়ে কাটাতে হয়েছে।

সঙ্গীতশিল্পী ও কবি পিতার কাছে তাঁর সঙ্গীতে হাতেখড়ি হয়। শৈশবে তিনি লেখাপড়ায় অত্যন্ত অমনোযোগী ছিলেন। স্কুলের পরে তিনি বেশিরভাগ সময় প্রতিবেশীদের ঘরে খেলা করে সময় কাটাতেন। এরই ভিতরে তিনি প্রতিবেশী রাজনাথ তারকরত্ন মহাশয়ের কাছ থেকে সংস্কৃতের পাঠ নেন। লেখাপড়ার উন্নতির জন্য তাঁকে বোয়ালীয়া জিলা স্কুলে (বর্তমান রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল) ভর্তি করে দেওয়া হয়। এই স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করে তিনি কুচবিহার জেনকিন্স স্কুলে ভর্তি হন।

১৮৮৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি এই জেনকিন্স স্কুল থেকে এন্ট্রান্স পাস করে আবার রাজশাহীতে ফিরে আসেন। এই বৎসরে হিরন্ময়ী দেবীর সাথে তাঁর বিবাহ হয়।
১৮৮৪ খ্রিষ্টাব্দে ইনি রাজশাহী কলেজ থেকে এফ.এ. দ্বিতীয় বিভাগে পাস করেন। এরপর কলকাতা সিটি কলেজে বি.এ.-তে ভর্তি হন। এই কলেজ থেকে তিনি ১৮৮৯ খ্রিষ্টাব্দে বি.এ. পাস করেন।
১৮৯১ খ্রিষ্টাব্দে বি.এল. পাস করে রাজশাহী আদালতে আইন ব্যবসা শুরু করেন। এই সময় ইনি কিছুদিন নাটোর ও নওগাঁও-তে অস্থায়ী মুন্সেফ হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। 

সূত্র:

• কান্তকবি রজনীকান্ত। অশোককুমার রায় সম্পাদিত। পাতাবাহার পাবলিকেশান প্রাইভেট লিমিটেড, কলিকাতা। ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪।

• রজনীকান্তের আত্মজীবনী।  অশোককুমার রায় সম্পাদিত। পাতাবাহার পাবলিকেশান প্রাইভেট লিমিটেড, কলিকাতা। ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪।