দ্বিতীয় শূরপাল
পাল রাজবংশের চতুর্দশতম রাজা১০৭৫ খ্রিষ্টাব্দে পাল রাজবংশের ত্রয়োদশতম রাজা দ্বিতীয় মহীপাল (১০৭২-১০৭৫ খ্রিষ্টাব্দ)-এর মৃত্যুর পর, তাঁর ভাই শূরপাল রাজত্ব লাভ করেন। ইতিহাসে তিনি দ্বিতীয় শূরপাল নামে অভিহিত হয়ে থাকেন। উল্লেখ্য প্রথম শূরপাল (৮৫৫-৮৬০) ছিলেন পাল রাজবংশের চতুর্থ রাজা।

পাল রাজবংশের দ্বাদশতম রাজা তৃতীয় বিগ্রহপাল (১০৫৪-১০৭২ খ্রিষ্টাব্দ)-এর মৃত্যুর পর, তাঁর পুত্র দ্বিতীয় মহীপাল রাজত্ব লাভ করেন। মহীপাল রাজ্যের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হন। ফলে প্রজা অসন্তোষ তীব্র আকার ধারণ করে। এরই ভিতরে তিনি কুচক্রীদের পরামর্শক্রমে তাঁর অপর দুই ভাই শূরপাল এবং রামপালকে কারারুদ্ধ করেন। এর ফলে বরেন্দ্র অঞ্চলের সামন্তরা প্রকাশ্যে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। মহীপাল এই বিদ্রোহ দমন করার জন্য সামন্তদের বিরুদ্ধে অভিযান চালান। শেষ পর্যন্ত তিনি বিদ্রোহীদের হাতে নিহত হন। এই সুযোগে বরেন্দ্র অঞ্চলের উচ্চাভিলাসী দিব্য কৈবর্ত বরেন্দ্রভূমিতে একটি স্বাধীন রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। এই সময় কারারুদ্ধ ছিলেন শূরপাল। দ্বিতীয় মহীপাল-এর মৃত্যুর পর শূরপাল মুক্তিলাভ করেন। এরপর শূরপাল রাজত্বলাভ করেন।

শূরপাল দুই বৎসর মগধে স্বাধীনভাবে রাজত্ব করেন। এই সময় শূরসেন বরেন্দ্রভূমির বিদ্রোহীদের বা কৈবর্ত-নায়ক দিব্য'র বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থাগ্রহণ করতে পারেন নি। ফলে বরেন্দ্রভূমি দিব্যের অধিকারেই থেকে যায়। এরপর ১০৭৭ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর কনিষ্ঠ ভাই
রামপাল (১০৭৭-১১৩০ খ্রিষ্টাব্দ) সমগ্র পালরাজ্যের অধিকার গ্রহণ করেন।


সূত্র :
বাংলাদেশের ইতিহাস/রমেশচন্দ্র মজুমদার।
ভারতের ইতিহাস । অতুলচন্দ্র রায়, প্রণবকুমার চট্টোপাধ্যায়।