সুকুমার রায়
(১৮৮৭-১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দ)
প্রখ্যাত শিশু সাহিত্যিক

১৮৮৭ খ্রিষ্টাব্দের ৩০শে অক্টোবর কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন প্রখ্যাত শিশুসাহিত্যিক
উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী । তাঁর মায়ের নাম বিধুমুখী। তাঁর অপর দুই ভাইয়ের নাম  সুবিনয় রায় ও সুবিমল রায়।

সুকুমার রায়ের শিক্ষাজীবনের প্রথম পর্যায় সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানা যায় না। ১৯০৬ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতার প্রেসিডেন্সী কলেজ থেকে রসায়ন ও পদার্থবিজ্ঞানে এব.এসসি (অনার্স) নিয়ে পাশ করেন। এই কলেজে পড়ার সময় তিনি ছাত্রদের নিয়ে একটি সংঘ গড়ে তোলেন। এর নাম দিয়েছিলেন 'ননসেন্স ক্লাব'। এই সংঘ থেকে প্রকাশিত হতো 'সাড়ে বত্রিশ ভাজা' নামের একটি পত্রিকা। এই পত্রিকার সূত্রে তাঁর ছড়া রচনা শুরু হয়। এই সময়ের ছড়াগুলো তাঁর 'আবোল তাবোল' ছড়াগ্রন্থে স্থান পেয়েছে।

এর ভিতরে ১৮৮৫ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর পিতা উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর প্রথম গ্রন্থ 'ছেলেদের রামায়ণ' প্রকাশিত হয়। এই বইটি বিশেষ জনপ্রিয়তা পেলেও মুদ্রণমানে তিনি সন্তুষ্ট ছিলেন না। এই কারণে, তিনি বিদেশ থেকে আধুনিক ছাপার যন্ত্র আমদানি করেন এবং ইউ রায় এন্ড সন্স নামে ছাপাখানা স্থাপন করেন। একই সাথে এই মুদ্রণবিদ্যা ও ফটোগ্রাফি শেখানোর জন্য সুকুমার রায়কে ইংল্যান্ডে পাঠানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। এই সূত্রে ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দে সুকুমার রায় ইংল্যান্ড পাঠান।

১৮১২-১৩ খ্রিষ্টাব্দের ভিতরে উপেন্দ্রকিশোর জমি ক্রয় করে, উন্নত-মানের রঙিন হাফটোন ব্লক তৈরি ও মুদ্রণক্ষম একটি ছাপাখানা স্থাপন করেছিলেন। ১৯১৩ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিল অর্থাৎ বাংলা ১৩২০ সনের বৈশাখ থেকে প্রকাশিত হ শিশুসাহিত্যের কিংবদন্তীতুল্য পত্রিকা 'সন্দেশ'। সম্পাদক, প্রকাশক, মুদ্রক, লেখক ও চিত্রকর ছিলেন স্বয়ং উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী। এই বৎসরের সুকুমার শিক্ষা শেষ করে কলকাতায় ফিরে আসেন এবং পিতার কাজে সাহায্য করতে থাকেন। এই সময় তিনি 'পাঠচক্র' তৈরি করেন। এর নাম ছিল মন্ডে ক্লাব (Monday Club)।

১৯১৫ খ্রিষ্টাব্দের ২০শে ডিসেম্বর উপেন্দ্রকিশোরের মৃত্যু হয়। এরপর সন্দেশ পত্রিকার সম্পাদনার দায়িত্ব নেন সুকুমার রায়। ছাপাখানা ও পত্রিকার কাজে তাঁর ছোটো ভাই এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা তাঁকে সহায়তা দিয়েছেন।

১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কালাজ্বরে মৃত্যুবরণ করেন।