নন্দনতত্ত্বের
ক্রমবিকাশ
প্রাগৈতিহাসিক আধুনিক মানব
আগের অধ্যায়ে আমরা জেনেছি যে, প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ
খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে
প্রাইমেট
বর্গের অন্তর্গত
হোমিনিডি
গোত্রের
হোমো
গণের অন্তর্গত
Homo sapiens
এর আবির্ভাব ঘটেছিল আফ্রিকার মরোক্কোর জেবেল ইর্হৌদ (Jebel
Irhoud)
-তে। উল্লেখ্য আগে মনে করা হতো, দুই লক্ষ
খ্রিষ্টপূর্বাব্দে
আধুনিক
মানুষ
তথা হোমো স্যাপিয়েন্সের উদ্ভব ঘটেছিল ইথিওপিয়া অঞ্চলে।
সম্ভবত আধুনিক
মানুষের
আদিম
জনগোষ্ঠী অনেক পথ পাড়ি দিয়ে
মরোক্কো
থেকে ইথিওপিয়া
এবং তৎসংলগ্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছিল। এরপর এদের একটি শাখা আফ্রিকার অভ্যন্তরে
ছড়িয়ে পড়ে, অন্য শাখা ইউরেশিয়া হয়ে অন্যান্য মহাদেশে নানা জাতের মানুষের সৃষ্টি
করে।
হোমো স্যাপিয়েনস্রা
হয়তো প্রাগ্-আধুনিক মানব গোষ্ঠীর কাছ থেকে পেয়েছিল পাথরের অস্ত্র তৈরির কৌশল,
আগুন জ্বালানো এবং তা নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি। সেই সাথে শিখেছিল আদিম নৃত্যগীতের
ধারা। এ সবের বাইরে আধুনিক মানুষের নিজস্ব অর্জন ছিল ভাষা এবং চিত্রাঙ্কন ও
ভাস্কর্য নির্মাণের কৌশল। গীত-বাদ্য-নৃত্য, চিত্রাঙ্কন এবং ভাস্কর্যের ভিতর দিয়ে
এদের মধ্যে নান্দনিক বোধের বিকাশ ঘটেছিল ধীরে ধীরে। এই পর্যায় চারটি হলো-
প্রাগৈতিহসিক যুগ বা প্রস্তর যুগ
আফ্রিকার
আফ্রিকা থেকে আগত ইউরেশিয়ার
আদি মানবগোষ্ঠীকে সাধারণভাবে
ক্রো-ম্যাগনান
বলা। ধারণা করা হয়
ক্রো-ম্যাগনান-দের
একটি দল
খ্রিষ্টপূর্ব ৪০ থেকে ৩০
হাজার অব্দের ভিতরে
আফ্রিকা
থেকে প্রথমে প্রবেশ করেছিল তুরস্কের আনাতোলিয়া অঞ্চলে। পরবর্তী ১৫০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের ভিতরে এরা ইউরোপের স্পেন, ফ্রান্স, অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি,
রুমানিয়া, ক্রোয়েশিয়া প্রভৃতি অঞ্চলে বসতি স্থাপন করেছিল। হোমো স্যাপিয়েন্স তথা
আধুনিক মানব গোষ্ঠীর এই আদি দলটির দ্বারা সৃষ্টি হয়েছিল অরিগ্নাসিয়ান সভ্যতার
(Aurignacian Civilization)
।