বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম: কেন ঝুলনাতে একেলা দোলে
কেন ঝুলনাতে একেলা দোলে রাইকিশোরী।
বুঝি মেঘের মাঝে হারিয়ে গেল মেঘ-বরণ
হরি॥
সই
দধির মাঝে ননী থাকে
মোরা মথন করে আনি তাকে,
মোরা নিঙ্ড়ে মেঘের সাগর, শ্যামে আনব বাহির করি'॥
ঐ কালাকে সই
ভালো জানি, জানি তাহার ঢং,
তার কৃষ্ণ রূপের আঁধার করা শুধু রাধার রং।
যে না থাকিলে রাধার মাঝে
দোলনাতে রাই দুলত না যে
সই মেঘ যদি না থাকে সই
কেন চমকায় বিজরী॥
- ভাবসন্ধান: এই গানে রাধাকৃষ্ণের অভিন্ন রূপের কথা
উপস্থাপন করা হয়েছে। রাধা গভীরে লুকিয়ে থাকেন কৃষ্ণ। কবি মনে করেন রাধার
রূপ মন্থন করলেই কৃষ্ণের সন্ধান পাওয়া যায়।
বাইরে থেকে মনে হয়- ঝুলনোৎসবের ঝুলনাতে রাই কিশোরী (রাধা) একা দোলা খাচ্ছে।
বাস্তবে রাধার গভীর সত্তায় মিশে আছেন যে কৃষ্ণ, রাধার সাথে সাথে, দোল খান
কৃষ্ণও। মেঘবরণ হরি (কৃষ্ণ) রাধার রূপ-মেঘের আড়ালে লুকিয়ে থাকেন। তাই কবি
সখিদেরকে মেঘরূপী রাধাকে মন্থন করে কৃষ্ণকে বাইরে আনার জন্য আহবান করা হয়েছে।
সবাই কৃষ্ণের রঙ্গ সম্পর্কে অবগত আছেন। এই রঙ্গরসেই রাধার রূপ-রঙের আড়ালে,
কৃষ্ণ তাঁর আঁধার কালো রঙে বিরাজ করেন। কবি মনে করেন- রাধার ভিতরে এই রঙ না
থাকলে রাধা একলা দোলনাতে দুলতেন না। কবির আত্মজিজ্ঞাসা- যদি মেঘ না থাকে,
তাহলে বিজরি চমকাবে কি করে? মূলত রাধার ভিতরের কৃষ্ণ আছে বলেই সুন্দরী রাধা
হয়ে ওঠেন রূপে অনন্যা।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু
জানা যায় না। ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ আগষ্ট (মঙ্গলবার ২৮ শ্রাবণ ১৩৪৭), কলকাতা
বেতার কেন্দ্র থেকে নজরুলের রচিত গীতি-আলেখ্য 'হিন্দোলা' প্রচারিত হয়েছিল। এই
গীতি-আলেখ্যের সাথে এই গানটি প্রচারিত হয়েছিল।
এই
সময় নজরুলের বয়স ছিল ৪১ বৎসর ২ মাস।
- গ্রন্থ: নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ [নজরুল ইনস্টিটিউট ফেব্রুয়ারি ২০১২।
গান সংখ্যা ১২২০। পৃষ্ঠা: ৩৬৬]
- বেতার:
হিন্দোলা
গীতানুষ্ঠান। কলকাতা বেতার কেন্দ্র-ক। সান্ধ্য অনুষ্ঠান। [১৩ আগষ্ট ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দ (মঙ্গলবার
২৮ শ্রাবণ ১৩৪৭)] সন্ধা: ৮.০০-৮.৩৯। শিল্পী: চিত্তরায় ও কুসুম গোস্বামী
- পর্যায়
- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। সনতান হিন্দুধর্ম। বৈষ্ণবসঙ্গীত।
রাধাকৃষ্ণের লীলা
সূত্র:
- বেতারজগৎ। ১১শ বর্ষ, ১৫শ সংখ্যা। পৃষ্ঠা: ৮৩৫
- নজরুল সঙ্গীত নির্দেশিকা। ব্রহ্মমোহন ঠাকুর। কবি নজরুল ইনস্টিটিউট। জুন
২০১৮
- The
Indian-listener
1940, Vol V, No 15. page 1181