বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম: সবাইকে তুই বর দিলি মা পাষাণ-রাজার ঝি!

সবাইকে তুই বর দিলি মা পাষাণ-রাজার ঝি!
(আমি) ভিড় ঠেলে যে যেতে নারি, বর পাব না কি?
এই শেয়োলগুলোয় ভাঙাবেড়া কে দেখাল বল্
কাছা খুলে ছুটছে যত আকাল হুড়োর দল!
দূরে থেকেই বলছি মাগো, (আঃ কি গণ্ডগোল!)
তুই কি শুনতে পাবি মাগো বাজছে যা ঢাক ঢোল
বেশি কিছু চাইনে আমি, চাইব নাকো যা তা,
মা ঘোল ঢালতে পারি যেন মুড়িয়ে দুখের মাথা।
(তোর) সিঙ্গিটাকে দে মা ছেড়ে এক মিনিটের তরে
আমার যত পাওনাদার মা – সব কটাকে ধরে
ঠেসে গোটা কতক ক’রে মেরে আসুক থাবা,
মনের সুখে বল্ব, ‘বাবু আর কি টাকা চাবা?’
ঐ খাঁড়াটা নিয়ে মা তোর করতে পারিস তাড়া
বাড়িওয়ালা যেই আসবে চাইতে বাড়ি ভাড়া?
(আমার) টাকার খাঁকতি নাই মা তেমন, বছরে দশ হাজার
মা ছড়িয়ে যদি দিস, ভাব্ব, ধন পেয়েছি রাজার।
ছেলে হবে জজ মাজিস্টর, মেয়ে হবে রানী,
আমার যত শত্রু গিয়ে জেলে টান্বে ঘানি!

রাত্রে যেন কামড়ায় না ছারপোকা আর মশা,
আর দিনের বেলা সইতে পারি গায়ে মাছি বসা।
মা খঅবার কথা বলি যদি ভাববি পেটুক ছেলে,
আমি ভাত না খেয়েও থঅকতে পারি পোলাও লুচি পেলে!
মাছের মুড়ো, মাংসের ঝোল, পাঁচটা ভাজা ভুজি,
হ্যাদে দ্যাখো দই সন্দেশ বলিনিক বুঝি?
দেখ্লি তো মা, খাওয়ার আমার ইচ্ছেই নেই মোটে,
পেটুক বলে কলঙ্ক মোর তবু গেল রটে।
কাঁহাতক আর বেড়াই মাগো হেঁটে হটর হটর
পেট্রল যাতে খায় না, দিবি এমনি একটা মোটর।
জানিস্ত সন্ন্যাসী হব আমি দুদিন পরে,
একটা কথা বলে রাখি রাখিস্ মনে করে –
তোর বৌমার বাকস ভ’রে গা ভ’রে দিস্ গয়না
পাঁচটা লোকে তোর নামে মা মন্দ যেন কয় না।
আমিও যুদ্ধ করতে পারি, তোরই ত মা ছেলে,
পারি অসুর দানব খেদিয়ে দিতে ভুঁড়ি দিয়ে ঠেলে!
বলিস্ যদি ল্যাং মেরে মা ফেলেও দিতে পারি,
তা কাঁদিয়ে মাকে আমি কি আর যুদ্ধে যেতে পারি?
নাতিপুতি রেখে মা গো একশ বছর পরে
মায়ার সংসার ছেড়ে না হয় যাব তোরই ক্রোড়ে!
আরো অনেক চাওয়ার ছিল দিলুম সে সব ছেড়ে
হেসে ফেলে বল্বি হয়ত ‘খোকা বড্ডো একল্ ষেঁড়ে!’