বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম:
অ মা! তোমার বাবার নাকে কে মেরেছে ল্যাং?
খাঁদু-দাদু
অ মা! তোমার বাবার নাকে কে মেরেছে ল্যাং?
খ্যাঁদা নাকে নাচছে ন্যাদা – নাক ডেঙাডেং ড্যাং!
ওঁর
নাকটাকে কে করল খ্যাঁদা র্যাঁদা বুলিয়ে?
চামচিকে-ছা বসে যেন ন্যাজুড় ঝুলিয়ে!
বুড়ো গোরুর টিকে যেন শুয়ে কোলা ব্যাং!
অ মা! আমি হেসে মরি, নাক ডেঙাডেং ড্যাং!
ওঁর
খ্যাঁদা নাকের ছেঁদা দিয়ে টুকি কে দেয় ‘টু’!
ছোড়দি বলে সর্দি ওটা, এ রাম! ওয়াক! থুঃ!
কাছিম যেন উপুড় হয়ে ছড়িয়ে আছেন ঠ্যাং!
অ মা! আমি হেসে মরি, নাক ডেঙাডেং ড্যাং!
দাদু বুঝি চিনাম্যান মা, নাম বুঝি চাং চু,
তাই বুঝি ওঁর মুখটা অমন চ্যাপটা সুধাংশু!
জাপান দেশের নোটিশ উনি নাকে এঁটেছেন!
অ মা! আমি হেসে মরি, নাক ডেঙাডেং ডেং!
দাদুর নাকি ছিল না মা অমন বাদুড়-নাক,
ঘুম দিলে ওই চ্যাপটা নাকেই বাজত সাতটা শাঁখ।
দিদিমা তাই থ্যাবড়া মেরে ধ্যাবড়া করেছেন!
অ মা! আমি হেসে মরি, নাক ডেঙাডেং ডেং!
লম্ফানন্দে লাফ দিয়ে মা চলতে বেজির ছা
দাড়ির জালে পড়ে জাদুর আটকে গেছে গা,
বিল্লি-বাচ্চা দিল্লি যেতে নাসিক এসেছেন!
অ মা! আমি হেসে মরি, নাক ডেঙাডেং ডেং!
দিদিমা কি দাদুর নাকে টাঙতে ‘আলমানাক’
গজাল ঠুকে দেছেন ভেঙে বাঁকা নাকের কাঁখ?
মুচি এসে দাদুর আমার নাক করেছে ‘ট্যান’!
অ মা! আমি হেসে মরি, নাক ডেঙাডেং ড্যাং!
বাঁশির মতন নাসিকা মা মেলে নাসিকে,
সেথায় নিয়ে চলো দাদু দেখন-হাসিকে।
সেথায় গিয়ে করুন দাদু গরুড় দেবের ধ্যান,
খাঁদু-দাদু নাকু হবেন, নাক ডেঙাডেং ড্যাং।
- রচনাকাল ও স্থান:
গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না।
১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিল
(চৈত্র-বৈশাখ ১৩৩৩)
মাসে প্রকাশিত হয়,
নজরুলের রচিত শিশুতোষ কাব্যগ্রন্থ
ঝিঙেফুল।
এই গ্রন্থে এই গানটি স্থান পেয়েছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ১৬ বৎসর ১১ মাস।
উলল্লেখ্য, ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দের
নভেম্বর মাসে শিশুদের জন্য 'খাঁদু দাদু' নামে একটি রেকর্ড নাটিকা রচনা করেন। এই
নাটকের ৪টি গান গেয়েছিলেন- শিশুমঙ্গল সমিতির শিল্পীরা।
- গ্রন্থ:
-
ঝিঙেফুল:
এপ্রিল ১৯২৬ (চৈত্র-বৈশাখ ১৩৩৩)। শিরোনাম:
খাঁদু দাদু
- নজরুল-রচনাবলী জন্মশতবর্ষ সংস্করণ। তৃতীয় খণ্ড। [বাংলা
একাডেমী ঢাকা। জ্যৈষ্ঠ ১৪১৮/মে ২০১১] ঝিঙেফুল (খাঁদু দাদু)। পৃষ্ঠা ৭-৮।
- রেকর্ড: এইচএমভি।
নভেম্বর ১৯৩২ (কার্তিক-অগ্রহায়ণ ১৩৩৯) ।
রেকর্ড নাটক: ঝিঙেফুল। শিরোনাম 'খাঁদু দাদু'।
জিটি ২০। শিশুমঙ্গল: শিল্পী: শিশুমঙ্গল সমিতি
(আশ্চর্যময়ী)। আসাদুল হক তাঁর 'নজরুলের
শ্রুতিধর ধীরেন দাস গ্রন্থে [হাতে খড়ি, ঢাকা। জানুয়ারি ২০০৪। পৃষ্ঠা: ৬৩-৬৪]
লিখেছেন- '...এই নাটকটিতে ধীরেন দাস অভিনয় করেন। এ তথ্য দিয়েছে ধীরেনদাসের
কনিষ্ঠ পুত্র, হিমাদ্রী দাস।'