ভাষাংশ | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচনাসংগ্রহের সূচি
কালমৃগয়া
|
তপোবন [ঋষিকুমারের প্রবেশ] মিশ্র ভূপালী- যৎ |
|
|
বেলা যে চলে
যায়, ডুবিল রবি। ছায়ায় ঢেকেছে ঘন অটবী। কোথা সে লীলা গেল কোথায়। লীলা, লীলা, খেলাবি আয়॥ [লীলার প্রবেশ] মিশ্র খাম্বাজ– কাওয়ালি |
|
| লীলা। | ও ভাই, দেখে যা, |
| কত ফুল তুলেছি। | |
| ঋষিকুমার। | তুই আয় রে কাছে আয়, |
|
আমি
তোরে সাজিয়ে দি! তোর হাতে মৃণাল-বালা, তোর কানে চাঁপার দুল, তোর মাথায় বেলের সিঁথি, তোর খোঁপায় বকুল ফুল! |
|
| মিশ্র খাম্বাজ– আড়খেমটা | |
| লীলা। | ও দেখবি রে ভাই, আয় রে ছুটে, |
|
মোদের বকুল গাছে রাশি রাশি হাসির মতো ফুল কত ফুটেছে। কত গাছের তলায় ছড়াছড়ি গড়াগড়ি যায়— ও ভাই, সাবধানেতে আয় রে হেথা, দিস নে দ'লে পায়! |
|
| মিশ্র বিভাস– আড়খেমটা | |
| লীলা। | কাল সকালে উঠব মোরা, |
|
যাব নদীর কূলে— শিব গড়িয়ে করব পুজো, আনব কুসুম তুলে। |
|
| ঋষিকুমার। | মোরা ভোরের বেলা গাঁথব মালা, |
|
দুলব সে দোলায়, বাজিয়ে বাঁশি গান গাহিব বকুলের তলায়। |
|
| লীলা। | না ভাই, কাল সকালে মায়ের কাছে |
|
নিয়ে যাব ধ'রে, মা বলেছে ঋষির সাজে সাজিয়ে দেবে তোরে! |
|
| ঋষিকুমার। | সন্ধ্যা হয়ে এল যে ভাই, |
|
এখন যাই ফিরে— একলা আছেন অন্ধ পিতা আঁধার কুটিরে। |