ভাষাংশ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর -এর রচনাবলী
রচনাবলী সূচি

মহুয়া
 


 

       প্রকাশ
    আচ্ছাদন হতে
ডেকে লহো মোরে তব চক্ষুর আলোতে।
    অজ্ঞাত ছিলাম এতদিন
        পরিচয়হীন —
   সেই অগোচরদুঃখভার
বহিয়া চলেছি পথে; শুধু আমি অংশ জনতার।
    উদ্ধার করিয়া আনো,
    আমারে সম্পূর্ণ করি জানো।
        যেথা আমি একা
    সেথায় নামুক তব দেখা।
         সে মহানির্জন
যে গহনে অন্তর্যামী পাতেন আসন,
    সেইখানে আনো আলো,
দেখো মোর সব মন্দ ভালো,
     যাক লজ্জা ভয়,
আমার সমস্ত হোক তব দৃষ্টিময়।

 

ছায়া আমি সবা-কাছে, অস্ফুট আমি-যে,
      তাই আমি নিজে
      তাহাদের মাঝে
নিজেরে খুঁজিয়া পাই না-যে।
তারা মোর নাম জানে, নাহি জানে মান,
তারা মোর কর্ম জানে, নাহি জানে মর্মগত প্রাণ।
      সত্য যদি হই তোমা-কাছে
      তবে মোর মূল্য বাঁচে,
          তোমার মাঝারে
      বিধির স্বতন্ত্র সৃষ্টি জানিব আমারে।
           প্রেম তব ঘোষিবে তখন
      অসংখ্য যুগের আমি একান্ত সাধন।
           তুমি মোরে করো আবিষ্কার,
পূর্ণ ফল দেহো মোরে আমার আজন্ম প্রতীক্ষার।
        বহিতেছি অজ্ঞাতির বন্ধন সদাই,
              মুক্তি চাই
       তোমার জানার মাঝে
       সত্য তব যেথায় বিরাজে।

 [কলিকাতা
 ২২ শ্রাবণ ১৩৩৫]