বিষয়: রবীন্দ্রসঙ্গীত।
গান সংখ্যা :
শিরোনাম:
বাজে
বাজে রম্যবীণা বাজে
পাঠ ও পাঠভেদ:
- গীতবিতান (বিশ্বভারতী, কার্তিক
১৪১২)-এর পাঠ:
পূজা:
৩২১
বাজে বাজে
রম্যবীণা বাজে-
অমলকমল-মাঝে,
জ্যোৎস্নারজনী-মাঝে,
কাজলঘন-মাঝে,
নিশি-আঁধার-মাঝে,
কুসুমসুরভি-মাঝে
বীনরণন শুনি যে-
প্রেমে প্রেমে বাজে
॥
নাচে নাচে
রম্যতালে নাচে-
তপন তারা নাচে,
নদী সমুদ্র নাচে,
জন্মমরণ নাচে,
যুগযুগান্ত নাচে,
ভকতহৃদয় নাচে
বিশ্বছন্দে মাতিয়ে-
প্রেমে প্রেমে নাচে
॥
সাজে সাজে
রম্যবেশে সাজে-
নীল অম্বর
সাজে,
উষাসন্ধ্যা সাজে,
ধরণীধুলি সাজে,
দীনদুঃখী সাজে,
প্রণত চিত্ত
সাজে বিশ্বশোভার লুটায়ে-
প্রেমে প্রেমে সাজে
॥
- পাণ্ডুলিপির
পাঠ:পাণ্ডুলিপি নাই
- পাঠভেদ:
-
তথ্যানুসন্ধান
-
ক.
রচনাকাল ও স্থান:
১৩১৫ বঙ্গাব্দের ৫
পৌষ তারিখে রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে একটি ভাষণ দেন। এই ভাষণটি 'শোনা' শিরোনামে
অন্তর্ভুক্ত হয়েছে তাঁর 'শান্তিনিকেতন' গ্রন্থে। এই ভাষণটির শুরুতেই রয়েছে-
'কাল
সন্ধ্যা থেকে এই গানটি কেবলই আমার মনের মধ্যে ঝংকৃত হচ্ছে- "বাজে বাজে রম্যবীণা
বাজে।"
এরপর গানটির
প্রথম স্তবক যুক্ত হয়েছে। যেহেতু এই ভাষণের সাথে গানটির প্রথম স্তবক পাওয়া যায়, তাই
নির্দ্বিধায় বলা যায়, এই অংশটুকু তিনি অন্তত ৪ পৌষ বা তার আগেই রচনা করেছিলেন। এই
গানটি তিনি একটি শিখ ভজন ভেঙে
তৈরি করেছিলেন। কিন্তু পুরো গানটি তিনি কোন সময়ে তৈরি করেছিলেন- তা স্পষ্ট
জানা যায় না। যদি পৌষ মাসেই তিনি গানটির পুরো অংশ রচনা করেন থাকেন, তাহলে ধারণা করা
যায় যে- গানটি রচনার সময়
তাঁর বয়স ছিল ৪৭ বৎসর ৮ মাস।
[রবীন্দ্রনাথের
৪৭ বৎসর অতিক্রান্ত বয়সে রচিত গানের তালিকা]
- খ.
প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি:
- গ্রন্থ:
-
কাব্যগ্রন্থ
-
দশম খণ্ড [ইন্ডিয়ান
প্রেস ১৩২৩ বঙ্গাব্দ। ধর্ম্মসঙ্গীত। পৃষ্ঠা ২১৩-২১৪] [নমুনা]
-
গান
-
দ্বিতীয় সংস্করণ
[ইন্ডিয়ান
প্রেস ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দ, ১৩১৬
বঙ্গাব্দ।
ব্রহ্মসঙ্গীত।
ইমন কল্যাণ- তেওরা। পৃষ্ঠা: ৩৮৭।
[নমুনা]
-
গীতবিতান
-
প্রথম খণ্ড, প্রথম সংস্করণ [বিশ্বভারতী, আশ্বিন ১৩৩৮।
সূচিতে আছে- গানটি '১৩১৫ সনে
প্রকাশিত 'গান' গ্রন্থ' থেকে গৃহীত হয়েছিল। কিন্তু
১৩১৫ সনে প্রকাশিত 'গান'
গ্রন্থ' -এ
গানটি ছিল না। প্রকৃতপক্ষে গানটি মুদ্রিত হয়েছিল গান ১৩১৬
বঙ্গাব্দে প্রকাশিত 'গান' গ্রন্থের দ্বিতীয় সংস্করণে। পৃষ্ঠা:
৩৮৭। [নমুনা:
প্রথমাংশ,
শেষাংশ]
-
প্রথম খণ্ড, দ্বিতীয় সংস্করণ
[বিশ্বভারতী, মাঘ
১৩৪৮। পর্যায়:
পূজা,
উপবিভাগ:
আনন্দ
১৩। পৃষ্ঠা: ১৩১]
[নমুনা]
-
অখণ্ড, তৃতীয় সংস্করণ (বিশ্বভারতী, কার্তিক ১৪১২),
পর্যায়:
পূজা
৩২১, উপবিভাগ:
আনন্দ
১৩।
-
গীতিচর্চ্চা [বিশ্বভারতী ,
পৌষ
১৩৩২ ব ঙ্গাব্দ।
গান ৯৩। পৃষ্ঠা ৭১]
[নমুনা]
-
ধর্ম্মসঙ্গীত
[ইন্ডিয়ান পাবলিশিং হাউস, ১৩২১। পৃষ্ঠা ১০১]
[নমুনা]
-
ব্রহ্মসঙ্গীত স্বরলিপি ষষ্ঠ ভাগ (জ্যৈষ্ঠ ১৩১৮ বঙ্গাব্দ)।
ইমন কল্যাণ-তেওড়া। কাঙ্গালীচরণ সেন-কৃত স্বরলিপি-সহ
মুদ্রিত হয়েছিল।
-
শান্তিনিকেতন<
প্রথম সংস্করণ (১৩৪১-১৩৪২) ।
শোনা। রবীন্দ্ররচনাবলী
ত্রয়োদশ খণ্ড। পৃষ্ঠা ৪৮৫।
-
স্বরবিতান সপ্তবিংশ খণ্ড
(২৭) খণ্ডের ১২ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা ৩৮-৪১।
[নমুনা]
- পত্রিকা:
-
সঙ্গীত
প্রকাশিকা পত্রিকা (মাঘ ১৩১৫
বঙ্গাব্দ)।
ইমন কল্যাণ-তেওরা। পৃষ্ঠা ৯১-৯৩।
-
তত্ত্ববোধিনী (ফাল্গুন
১৩১৫
বঙ্গাব্দ)।
ইমন কল্যাণ-তেওরা। পৃষ্ঠা ১৭৯-৮০]
[নমুনা
প্রথমাংশ,
দ্বিতীয়াংশ]
-
রেকর্ডসূত্র: পাওয়া যায় নি।
-
প্রকাশের
কালানুক্রম:
সঙ্গীত প্রকাশিকা পত্রিকা 'মাঘ ১৩১৫ বঙ্গাব্দ' সংখ্যায় প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। ১৩১৫ বঙ্গাব্দের ১১ই মাঘ ৭৯তম মাঘোৎসবে গানটি প্রথম পরিবেশিত হয়েছিল। এই সূত্রে গানটি তত্ত্ববোধিনী পত্রিকার 'ফাল্গুন ১৩১৫ বঙ্গাব্দ' সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিল। এরপর যে সকল গ্রন্থাদিতে গানটি অন্তর্ভুক্ত হয়ে প্রকাশিত হয়েছিল, সেগুলো হলো-গান দ্বিতীয় সংস্করণ (১৩১৬ বঙ্গাব্দ), ব্রহ্মসঙ্গীত স্বরলিপি ষষ্ঠ ভাগ (জ্যৈষ্ঠ ১৩১৮ বঙ্গাব্দ ), ধর্ম্মসঙ্গীত (১৩২১ বঙ্গাব্দ), ব ঙ্গাব্দ। ও কাব্যগ্রন্থ দশম খণ্ড (১৩২৩ বঙ্গাব্দ) ও গীতিচর্চ্চা ( পৌষ ১৩৩২ বঙ্গাব্দ)।
এরপর ১৩৩৮ বঙ্গাব্দে গানটি গীতবিতান --এর প্রথম খণ্ড, প্রথম সংস্করণ অন্তর্ভুক্ত হয়ে প্রকাশিত হয়েছিল। এই গ্রন্থের সূচিতে আছে- গানটি '১৩১৫ সনে প্রকাশিত 'গান' গ্রন্থ হইতে'। কিন্তু ১৩১৫ সনে প্রকাশিত 'গান' গ্রন্থ'-এ গানটি ছিল না। প্রকৃতপক্ষে গানটি মুদ্রিত হয়েছিল গান ১৩১৬ বঙ্গাব্দে প্রকাশিত 'গান' গ্রন্থের দ্বিতীয় সংস্করণে। পৃষ্ঠা: ২৬৭]
এরপর ১৩৪৮ বঙ্গাব্দের মাঘ মাসে প্রকাশিত গীতবিতান -এর প্রথম খণ্ড, দ্বিতীয় সংস্করণে গানটি অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল পূজা পর্যায়ের উপবিভাগ আনন্দ-এর ১৩ সংখ্যক গান হিসেবে। ১৩৭১ বঙ্গাব্দের আশ্বিন মাসে প্রকাশিত অখণ্ড গীতবিতানের পূজা পর্যায়ের ৩২১ সংখ্যক গান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। গানটি একইভাবে অখণ্ড গীতাবিতানের তৃতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছিল পৌষ ১৩৮০ বঙ্গাব্দের পৌষ মাসে।
- গ. সঙ্গীত বিষয়ক তথ্যাবলী:
-
ভাঙা গান: এটি একটি ভাঙা গান। মূল
গানটি একটি শিখ ভজন।
রবীন্দ্র্রনাথ
গানটির প্রায়
আক্ষরিক
অনুবাদ করেন।
রবীন্দ্র্রনাথ
গানটি ক্ষিতিমোহন সেন-এর
নিকট
থেকে
পেয়েছিলেন।
মূল গানটিতে একটি স্তবক থাকলেও
রবীন্দ্র্রনাথ
তাঁর অনুবাদের সাথে আরও নূতন দুটি স্তবক যোগ
করেন।
মূল গান:
বাদে বাদে রম্ম বীণ বাদৈ
অমল কমল বীচ, বিমল রজনী
বীচ,
কাজর ঘন বীচ, নিস
আঁধিয়ারা
বীচ,
কুসুম সুরভী বীচ, বীণ রণণ
সুণায়ে
প্রেম প্রেম বাদৈ
॥
ইন্দিরাদেবী সংগৃহীত
দ্র :
রবীন্দ্র্রসঙ্গীত
গবেষণা গ্রন্থমালা/ ৩য় খণ্ড। প্রফুল্লকুমার দাস। পৃষ্ঠা ১০৫।
এই গানটির একটি পাঠান্তর
গীতবিতানের নাট্যগীতি পর্যায়ের ১০২ [নাট্যগীতি
-১০২] সংখ্যক হিসাবে গৃহীত হয়েছে।
আর
এর স্বরলিপি গৃহীত হয়েছে স্বরবিতান-৫২ খণ্ডে। গানটির বিস্তারিত দেওয়া হলো- বাজে রে
বাজে ডমরু বাজে' শিরোনামে।
দেখুন :
বাজে রে বাজে ডমরু বাজে [নাট্যগীতি -১০২]
[তথ্য]
-
১৩১৫ বঙ্গাব্দের ২২ অগ্রহায়ণ [৭ ডিসেম্বর ১৯০৮] তারিখে রবীন্দ্রনাথ তাঁর
ভৃত্য উমাচরণ-কে সাথে নিয়ে শান্তিনিকেতন আসেন। ২৩ অগ্রহায়ণ থেকে তিনি প্রাতঃকালীন
ভাষণ দেওয়া শুরু করেন। এই পর্যায়ে- ৫ পৌষ তারিখে তিনি যে ভাষণ দেন- তার নাম ছিল
'শোনা'। এই ভাষণটি 'শান্তিনিকেতন' নামক গ্রন্থের দ্বিতীয় খণ্ডে গৃহীত হয়েছে।
দ্রষ্টব্যঃ
শোনা : শান্তিনিকেতন,
রবীন্দ্র্ররচনাবলী
ত্রয়োদশ খণ্ড। পৃষ্ঠা ৪৮৫।
উক্ত প্রবন্ধে রবীন্দ্র্র লিখেছেন,-কাল সন্ধ্যা
থেকে
এই গানটি
কেবলই
আমার
মনের মধ্যে ঝংকৃত হচ্ছে- 'বাজে বাজে রম্যবীণা বাজে'। ........ কাল রাত্রে ছাদে দাঁড়িয়ে
নক্ষত্রলোকের দিকে
চেয়ে
আমার
মন সম্পূর্ণ
স্বীকার করেছে, বাজে বাজে রম্যবীণা বাজে। এ কবিকথা নয়, এ বাক্যালংকার নয়-
আকাশ
এবং কালকে পরিপূর্ণ করে অহোরাত্র সংগীত
বেজে
উঠেছে।'
-
স্বরলিপিকার: কাঙ্গালীচরণ
সেন-কৃত
স্বরলিপিটি ব্রহ্মসঙ্গীত
স্বরলিপি ৬ষ্ঠ ভাগ
থেকে
স্বরবিতান-২৭'-এর সুরভেদ /ছন্দোভেদ পত্রে পৃষ্ঠা ৮০ গৃহীত হয়েছে। স্বরবিতান-২৭-এ
গৃহীত স্বরলিপিটি কার তা জানা যায় না।
- সুর ও তাল:
-
রাগ-ইমন কল্যাণ।
তাল-তেওরা। [স্বরবিতান-২৭]
- রাগ-ইমন কল্যাণ। তাল-তেওরা।
[রবীন্দ্রসংগীত : রাগ-সুর নির্দেশিকা।
সুধীর চন্দ। (প্যাপিরাস, ডিসেম্বর, ২০০৬)। পৃষ্ঠা: ৬৮]
-
রাগ:
পাঞ্জাবী। তাল:
তেওরা। [রাগরাগিণীর
এলাকায় রবীন্দ্রসংগীত, প্রফুল্লকুমার চক্রবর্তী, জুলাই ২০০১,
পৃষ্ঠা: ১১৯ ।
-
বিষয়াঙ্গ: ব্রহ্মসঙ্গীত।
-
সুরাঙ্গ: ভজনাঙ্গ (পাঞ্জাবী ভজন ভাঙা গান)।
-
গ্রহস্বর: সা।
-
লয়: মধ্য।
[জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর, স্বরলিপি-গীতিমালা]