সলিল চৌধুরীর গান

                           ৩

ও ভাই চাষী ক্ষেতের মজুর
যতেক কিষাণ কিষাণী (সজনী)
এই বেলা নাও তেলেঙ্গানার পথের নিশানী।

আর এই মোরা রক্ত ঢেলে জমিন চষে পরগাছা পুষিলাম,
সেই পরগাছা হইল যে রাজা, আর আমরা তারি গোলাম,
                        (মরি হায় হায় হায় হায় রে)!
এই দেশ জমিনের থেকে
এবার আগাছা দাও নিড়ানি (সজনী)

মোদের মেরে কেউ বানালো দালান অট্টালিকা
আর খদ্দরে ভদ্দর হল কত যে চামচিকা
                      (মরি হায় হায় হায় হায় রে)
তারা দুলিয়ে ভুঁড়ি ঠ্যাংটি নাচায়
মোদের ভাঁড়ে ভবানী (সজনী)।

মোদের দুধের বাছা দুধের বদল খায় যে ফ্যানের পানি
আর বউবেটিদের নেইকো শাড়ি অঙ্গে ছেঁড়া কানি,
                    (মরি হায় হায় হায় হায় রে)
আর জমিদারের বউয়ের দেখো
ওই রেশমী শাড়ির ঝলকানি (সজনী)।

ও ভাই, গামছা বেঁধে পেটেরে ভাই আমরা খামার ভরি,
ওদের তাই না এত চ্যাটাং চ্যাটাং বুলির বাহাদুরি,
                     (মরি হায় হায় হায় হায় রে)
আমরা চাইলে খেতে ওদের চোখে
সরষে ফুলের চমকানি (সজনী)।

এই বন্ধ যদি রাখি রে ভাই, ক্ষেতখামারে খাটা
আর বড়বাবুরা খাবেন খাবি চক্ষু হবে ভাঁটা,
                   (মরি হায় হায় হায় হায় রে)
আর পন্ডিতের পন্ডিতি ঘুচে
বন্ধ হবে কপচানি (সজনী)

এমনি করে পশুর মতো আর তো যে সহে না,
শত শহীদ ডাক রে ভাই শুধতে হবে দেনা
                  (মরি হায় হায় হায় হায় রে)
আমাদেরই হাতে ওদের আছে মরণ বাণ জান নি (সজনী)

এক সাথে সব দাঁড়াও এবার ফুলিয়ে বুকের ছাতি
আর অন্যায় কে রুখবো মোরা জঙ্গি মজুর সাথী,
                  (মরি হায় হায় হায় হায় রে)
লাল ঝান্ডা হাতে নাও, আছে ভাই জঙ্গি মজুর সাথী
                 (মরি হায় হায় হায় হায় রে)!
এই বিধানেই ধ্বংস হবে শত বিধান-নালিনী
মোরা এমনি করে গড়বো মোদের
সুখী জীবন জাননি (সজনী)।’

প্রাসঙ্গিক তথ্য: গানটি দিলীপ মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত ‘গণনাট্য সংঘের গান’ গ্রন্থে স্থান পেয়েছে। গণনাট্য সংঘের গায়ক মন্টু ঘোষের কণ্ঠে গানটি ধৃত হয়েছে। এটি একটি ব্যাঙ্গাত্মক গান।

প্রেক্ষাপট: তেভাগা আন্দোলন উপলক্ষে গানটি রচিত

সুরকার: সলীল চৌধুরী