শহিদ সাগর
বাংলাদেশের নাটোর জেলার গোপালপুরে অবস্থিত নর্থ বেঙ্গল সুগার মিল লিমিটেডের পুকুর একটি পুকুর। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ৫ই মে, পাকিস্তানি সেনারা এই পুকুরে পাড়ে প্রায় একশ নিরীহ কর্মকর্তা, কর্মচারী, শ্রমিককে মেশিনগানের ব্রাশ ফায়ারে নির্মমভাবে হত্যা করে। পরে স্থানীয় অধিবাসীরা এই পুকুরটিকে নামকরণ করা হয় 'শহীদসাগর'।

উল্লেখ্য, ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ৩০শে মার্চ লালপুর উপজেলাধীন গোপালপুরের ৪ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত ময়নাপুর গ্রামে পাকিস্তানি সেনাদের সাথে স্থানীয় সংগ্রামী জনতার সাথে সংঘাত হয়। এই সংঘর্ষের পরদিন ৩১ মার্চ, মেজর রেজা খান পালানোর চেষ্টা করলে স্থানীয় জনতা তাকে গুলি করে হত্যা করে। এই সময় স্থানীয় জনগণ, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী যাতে নিকটবর্তী ঈশ্বরদী বিমানবন্দরে অবতরণ করতে না পারে, সেজন্যে তারা বিমানবন্দরের রানওয়ের ক্ষতিসাধনের করে।

মে মাসে পাকিস্তানি সৈন্যরা উত্তরাঞ্চল পুনরায় দখল করার পর, ৫ই মে পাকসেনারা গোপালপুরস্থ নর্থ বেঙ্গল সুগার মিল লিমিটেডে প্রবেশ করে। এই সময়  স্থানীয় আখ চাষিদের স্বার্থে কারাখানাটি চালু রাখা হয়েছিল। এই অবস্থায় স্থানীয় দালালদের সাথে নিয়ে একদল পাকিস্তানি সেনা মিলে প্রবেশ করে। সেনারা মিলের প্রশাসক লেঃ আজিম এবং অন্যান্য কর্মচারীদের ব্রাশ ফায়ারে নির্দয়ভাবে হত্যা করে এবং তাদের লাশ পুকুরে ফেলে দেয়।

বাংলাদেশে স্বাধীনতার পর,  ১৯৭৩ সালে লেঃ আনোয়ারুল আজিমের স্মরণে গোপালপুর রেলওয়ে স্টেশনের নাম দেওয়া হয় আজিমপুর স্টেশন হিসেবে।