ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহিদ স্মৃতিসৌধ
বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের দক্ষিণ মৌড়াইলে "ফারুকি পার্ক" এ স্থাপিত স্মৃতিসৌধ। উল্লেখ্য পার্কটি 'অবকাশ' নামে অধিক পরিচিত। তাই অনেক সময় "ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহীদ স্মৃতিসৌধ"-এর পরিবর্তে "ফারুকি পার্কের স্মৃতিস্তম্ভ" উল্লেখ করা হয়।

১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত পর্যায়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাকিস্তানি বাহিনীর একটি ট্যাঙ্ক বিধ্বস্ত হয়।
মুক্তিবাহিনীর প্রচণ্ড আক্রমণের মুখে পাকিস্তানি বাহিনী ট্যাঙ্কটি ফেলে রেখেই পশ্চাদপসরণ করতে বাধ্য হয়।
পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মুক্তিযোদ্ধারা ট্যাঙ্কটি শহরের ফারুকি পার্কে (অবকাশ) মুক্তিযুদ্ধের প্রতীক হিসেবে স্থাপন করেন।

১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দে "সামরিক শাসন" হয়। এর পরের বছর ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দে সেনাবাহিনী ট্যাঙ্কটি কুমিল্লা সেনানিবাসের "সামরিক জাদুঘর"-এ সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করে। এ সময় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা নেতৃবৃন্দ প্রতিরোধ সৃষ্টি করেন। পরবর্তী সময় তৎকালীন জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে, মুক্তিযোদ্ধা নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে সেনা কর্মকর্তাদের সাথে একটি সমঝোতা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভায় মুক্তিযুদ্ধের স্মারক হিসেবে সামরিক স্থাপনায় ট্যাঙ্কটি সংরক্ষণের স্বার্থে কুমিল্লা সেনানিবাস কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর এবং ট্যাঙ্কটির স্থলে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি স্বরূপ একটি মনোরম স্মৃতিসৌধ নির্মাণের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এই প্রেক্ষিতে ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ এপ্রিল, কুমিল্লা অঞ্চলের তৎকালীন সামরিক আইন প্রশাসক "কুমিল্লা সেনানিবাস"-এ নিয়ে যান।
এরপর ১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দের ১৯শে মে,  ফারুকি পার্কে "ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহিদ স্মৃতিসৌধ" এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয় এবং ১৯৮৫ সালে এর নির্মাণ কাজ শেষ হয়। এর নির্মাণ ব্যয় ছিল ৪ লক্ষ টাকা। স্মৃতিসৌধটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন ব্রিগেডিয়ার আ ম সা আমিন এবং উদ্বোধন করেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আলহাজ্ব হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। এর স্থপতি মহিউদ্দিন আহাম্মেদ খান।