বায়তুল মুকাররম

বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদ। ঢাকার কেন্দ্রস্থলে এই মসজিদটি অবস্থিত। ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে ঢাকার জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধির পেতে থাকে। সে সময় বহু মুসল্লি একত্রে নামাজ আদায় করতে পারেন, এমন কোনো বড় মসজিদ ঢাকাতে ছিল না। বহু মানুষ একত্রে নামাজ আদায় করতে পারে, এই উদ্দেশ্যে শিল্পপতি আব্দুল লতিফ ইব্রাহিম বাওয়ানি ও তার ভ্রাতুষ্পুত্র ইয়াহিয়া বাওয়ানি ঢাকাতে একটি বড় ধরনের মসজিদ তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এই উদ্দেশ্যে ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি 'বায়তুল মুকাররম সোসাইটি' নামে একটি সংগঠন তৈরি করেন। এই কমিটি তৎকালীন পুরাতন ও নতুন ঢাকার সংযোগস্থলে একটি মসজিদ-এর জন্য জায়গা অধিগ্রহণ করে। এই মসজিদ-এর নকশা তৈরি করার জন্য টি, আব্দুল হুসেন থারিয়ানি নামক জনৈক পাকিস্তানি স্থপতির উপর দায়িত্ব দেওয়া হয়। মসজিদটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দের ২৭শে জানুয়ারি থেকে। এর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছিলেন তৎকালীন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ফিল্ড মার্শাল আয়ুব খান। মসজিদটি নির্মাণের তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন স্থপতি থারিয়ানির পুত্র টি. থারিয়ানি আর প্রধান প্রকৌশলী হিসাবে ছিলেন মনিরুল ইসলাম।

মসজিদ কমপ্লেক্সের জন্য অধিগ্রহণ করা হয়েছিল মোট ৮,৩০ একর জমি।  পুরো মসজিদ কাঠামো ৮ তলা। ভূমি থেকে এর উচ্চতা ৩০.১৮ মিটার। নামাজের জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে উপরের ৬ তলা।  নিচের দুটি তলা রাখা হয়েছে, দোকাপাট, অফিস, লাইব্রেরি ইত্যাদির জন্য। মসজিদ-এর মূল স্থাপনায় কোনো গম্বুজ নেই। তবে এর উত্তর ও দক্ষিণ দিকের প্রবেশ বারান্দার উপর দুটি ছোট গম্বুজ আছে। এর প্রবেশ বারান্দাগুলোতে তিনটি অশ্বখুরাকৃতির খিলান পথ আছে।

এর প্রধান নামাজঘরটি তিনতলায়।  মসজিদের মিহরাবটি আয়তাকার। নামজ আদায়ের স্থানের মোট আয়তন ১১,০২৩ ফুট। এর বাইরে রয়েছে প্রশস্থ বারান্দা। মসজিদ-এর পূবদিকে রয়েছে ২৯ হাজার বর্গফুটের একটি খোলা চত্বর। এর উত্তর ও দক্ষিণ প্রান্তে রয়েছে ওজু করার জায়গা।


সূত্র : শিশু-বিশ্বকোষ  (চতুর্থ খণ্ড)। বাংলাদেশ শিশু একাডেমী। আশ্বিন ১৪০৪, সেপ্টেম্বর ১৯১৭।
        বাংলাপেডিয়া