।
এই অঞ্চলকে তিনি ইন্দোচীন ও
অস্ট্রেলিয়ার
মধ্যবর্তী অঞ্চল হিসেবে বিবেচনা করেছিলেন।
পরে এই অঞ্চলে আগত ওলন্দাজ বণিকরা এঁর নাম দিয়েছিল ইন্দোনেশিয়া। পরে এই নামটি
প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে।
এটি পৃথিবীর সর্ববৃহৎ দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে গঠিত রাষ্ট্র। এই
দ্বীপরাষ্ট্রে রয়েছে প্রায় ১৭ হাজার দ্বীপ। এর ভিতর
৮,৮৪৪ নামকরণ করা হয়েছে এবং ৯২২টিতে স্থায়ী জনবসতি রয়েছে।
দেশটির উল্লেখযোগ্য বৃহৎ দ্বীপগুলো হলো-সুমাত্রা,
জাভা, সুলাওয়েসি এবং নিউ গিনি ও বোর্নিও-এর অংশবিশেষ। এর মোট আয়তন ১৯.০৪.৫৬৯
বর্গমাইল। জনসংখ্য প্রায় ২৭ কোটি। । দেশটির সমুদ্র উপকূলের দৈর্ঘ্য প্রায় ৮০ হাজার
কিলোমিটার।
ভৌগোলিক অবস্থান: স্থানাঙ্ক ২° দক্ষিণ অক্ষাংশ ১১৮° পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। স্থল সীমান্ত রয়েছে মালয়েশিয়া, বোর্নিও, পাপুয়া
নিউগিনি ও ইন্দোনেশিয়া থেকে স্বাধীনতা পাওয়া দেশ পূর্ব তিমুরের সাথে।
সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও ফিলিপাইন থেকে সরু প্রণালী দ্বারা আলাদা হয়েছে ।
জনসংখ্যা: ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দের জনগণনা অনুযাসারে দেশটির জনসংখ্যা প্রায় ২২ কোটি ২০ লাখ।
এর ভিতরে জাভাতে বাস করে ১৩ কোটি লোক বাস করে। জনগোষ্ঠীর বেশির ভাগেরই মূল অস্ট্রেনেশিয়ান। জনসংখ্যার
অপর বড় অংশটি হলো মেলানেশিয়ান। দেশটির মধ্যে প্রায় ৩০০ জাতি-গোত্র রয়েছে। মোট জনসংখ্যার
বিচারে এরা ৪২ শতাংশ। চীনা ইন্দোনেশীয়রা জনসংখ্যায় মাত্র ১ শতাংশ।
ভাষা: ইন্দোনেশিয়াতে প্রায় ৭৪২টি ভাষা আছে। এর ভিতরে মধ্যে ৭৩৭টি জীবিত, ৫টি
মৃতভাষা। ইন্দোনেশিয়ার সরকারি ভাষার নাম বাহাসা ইন্দোনেশিয়া। এটি মূলত মালয় ভাষার একটি পরিবর্তিত রূপ।
এই ভাষাটি ব্যবসা, প্রশাসন, শিক্ষা ও গণমাধ্যমে ব্যবহৃত হয়।
ধর্ম: ইন্দোনেশিয়ার সরকার ঘোষিত ৬টি ধর্ম হলো ইসলাম, খ্রিষ্টানদের দুটি গ্রুপ, হিন্দু, বৌদ্ধ ও কনফুসীয়। জনসংখ্যার ৮৬ দশমিক ১ শতাংশ মুসলিম।
খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী ৮ দশমিক ৭ শতাংশ এবং হিন্দু ধর্মাবলম্বীর সংখ্যা ৩ শতাংশ। বর্তমানে ইন্দোনেশিয়া মিশ্র সংস্কৃতির দেশ।
সংস্কৃতি: ধর্মীয়ভিত্তিক সমাজ অনুসারে দেশটিতে ব্যাপক সাংস্কৃতিক ভিন্নতা রয়েছে।
আবার এদের সংমিশ্রণে একটি সহ-অবস্থানিক সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। জীবনাচরণে এখানে রয়েছে আরবীয়, ভারতীয়, চীনা, মালয় ও ইউরোপীয় সংস্কৃতির মিশেল।
বিচ্ছিন্ন দ্বীপসমূহের আদিবাসী সংস্কৃতির মধ্যে ভিন্নতা আছে। এদের সাথে বাণিজ্যিক
কারণে এশীয় ও ইউরোপীয় লোকেদের সংস্কৃতির মিলন ঘটেছে।
জীববৈচিত্র্য: এখানে রয়েছে হাতি, বাঘ, চিতা, গণ্ডার ও বৃহদাকার বানর। অস্ট্রেলিয়ার কাছাঁকাছি অবস্থিত পাপুয়ায় ৬০০ প্রজাতির পাখির বাস। পাখিদের ২৬ শতাংশ পৃথিবীর অন্য কোথাও পাওয়া যায় না।