রাশিয়ার পতাকা

রাশিয়া
(রুশ: Россия, ইংরেজি Russiaসরকারি নাম রুশ ফেডারেশন।

উত্তর ইউরেশিয়া অবস্থিত বৃহত্তম দেশ। এর উত্তর-পশ্চিম থেকে দক্ষিণ-পূর্ব পর্যন্ত নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, এস্তোনিয়া, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া ও পোল্যান্ড (উভয় দেশই কালিনিনগ্রাদ অব্লাস্ত সীমান্ত দিয়ে যুক্ত), বেলারুশ, ইউক্রেন, জর্জিয়া, আজারবাইজান, কাজাখস্তান, চীন, মঙ্গোলিয়া ও উত্তর কোরিয়ার সাথে সীমান্ত আছে। দেশটির অখতস্ক সাগরের মাধ্যমে জাপানের সাথে ও বেরিং প্রণালীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কার সাথে সামুদ্রিক সীমানা রয়েছে। দেশটির মোট আয়তন ১৭,০৭৫,৪০০ বর্গকিলোমিটার (৬,৫৯২,৮০০ বর্গমাইল)।

রাশিয়াতে ৩৫ স্বীকৃত ভাষা ৩৫টি। তবে রাষ্ট্রীয় ভাষা রুশ। এটিতে রাশিয়ার প্রায় ৮০ ভাগ লোক রুশ ভাষায় কথা বলে। যে সকল আঞ্চলিক ভাষা সহ-সরকারি হিসেবে স্বীকৃতি উল্লেখযোগ্য ভাষাগুলো হলো- চেচেন, চুভাশ, কালমিক, কাবার্দিয়ান, কোমি, মারি, মর্দভিন, ওসেটীয়, তাতার, তুভিন, উদমুর্ত, ইয়াকুত, অ্যাভার, বুরিয়াত, বাশকির ইত্যাদি। এছাড়া বেশ কিছু মধ্য ইউরোপীয় ভাষা যেমন জার্মান, পোলীয়, জিপসি বা রোমানি ভাষার প্রচলন আছে।

জনসংখ্যা: ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের হিসেবে অনুযায়ী মোট  জনসংখ্যা  ১৪,৩৯,৭৫,৯২৩।
ভাষা: রুশ।
রাজধানী: মস্কো।

যতদূর জানা যায়, সুইডিশ ভাইকিং প্রথম রুশ (Русь) নামক একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছিলে। কালক্রমে এই রাষ্ট্রটি সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী হয়ে ওঠার পর, স্থানীয়ভাবে এর নাম দাঁড়িয়েছিল "Русская Земля" (রুশকায়া যেমল্যা)। এর অর্থ হলো- রুশ ভূমি বা রুশ এর ভূমি। রাশিয়া ও এই রাষ্ট্র হতে উদ্ভূত রাষ্ট্রের নামের পার্থক্য করারা জন্য আধুনিক ইতিহাসে একে কিয়েভান রুশ বলে ডাকা হয়। ভাষাবিজ্ঞানীরা মনে করেন- রুশ শব্দটির পুরনো ল্যাটিন ভাষার একটি সংস্করণ ছিল রুথেনিয়া। এর প্রচলন ছিল দক্ষিণ ও পশ্চিম রুশ অঞ্চলে। বর্তমানে একে বলা হয় কিয়েভান রাশিয়া।

খ্রিষ্টীয় তৃতীয় থেকে অষ্টম শতাব্দীর ভিতরে পূর্ব স্লাভদের মাধ্যমে এই অঞ্চলের মানুষ বিশেষ পরিচিতি লাভ করে। এরপর ভারাঞ্জিয়ান যোদ্ধা ও তাদের বংশধরদের হাতে চলে যায় এর শাসন ক্ষমতা। ৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দে বাইজান্টাইন সাম্রাজ্যের সূত্রে রাশিয়ায় অর্থডক্স খ্রিষ্টধর্মের সূচনা হয়। এই সময় বাইজান্টাইন ও স্লাভ সংস্কৃতির সংমিশ্রণ নতুন সংস্কৃতির উদ্ভব হয়। ১০০০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে রাশিয়া অনেকগুলো ছোট ছোট অঞ্চলে ভাগ হয়ে যায়। প্রায়ই মধ্য এশিয়ার যাযাবরদের দ্বারা রাশিয়া বিভিন্ন অংশ লুণ্ঠনের স্বর্গক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল। তবে রাশিয়ার বিশাল অংশ অধিকার করেছিল মোঙ্গলরা। ১২২৫ খ্রিষ্টাব্দের ভিতরে চেঙ্গিশ খান তিনি পীত সাগর থেকে শুরু করে ইরান, ইরাকের সাথে এবং দক্ষিণ রাশিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে সাম্রাজ্য স্থাপন করেন।

এরই ভিতরে কিয়েভান রাশিয়ার শাসককুল ধীরে ধীরে শক্তি অর্জন করে, যাযাবরদের হাত থেকে ভূমি উদ্ধার করে। ধারাবাহিক যুদ্ধবিগ্রহ এবং বিজয়ের মধ্য দিয়ে রাশিয়া একটি বিশাল সাম্রাজ্যে পরিণত হয়।

১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দে রাশিয়ার জার শাসনের বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত হয় রুশ বিপ্লব। এই বিপ্লবের মাধ্যমে রাশিয়ায় জার রাজতন্ত্রের শাসনের অবসান হয় এবং সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত ইউনিয়নের উত্থান হয়। ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর সোভিয়েতের রুশীয় প্রজাতন্ত্র রুশ ফেডারেশন হিসেবে গঠিত হয় এবং একক রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃত হয়।

বিশেষ প্রতিবেদন: