বাংলা শব্দ

বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত শব্দের আদি ভাণ্ডার ছিল প্রাকৃত ভাষার শব্দ। প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে
বঙ্গদেশে কালানুক্রমে নেগ্রিটো, প্রোটো-অস্ট্রালয়েড, মোঙ্গলীয়, দ্রাবিড়, আর্য জাতিগোষ্ঠী প্রবেশ করেছিল। এদের ভিতর অনার্য হিসেবে বিবেচিত  নেগ্রিটো, প্রোটো-অস্ট্রালয়েড, মোঙ্গলীয় এবং দ্রাবিড়দের সংমিশ্রণে গড়ে উঠেছিল একটি মিশ্র ভাষারীতি। নেগ্রিটোের ভাষা সুচারুরূপে গড়ে উঠছিল কিনা বা গড়ে উঠলেও তা কেমন ছিল, সে সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো ধারণা পাওয়া যায় না। তাই সাধারণভাবে প্রাকৃত ভাষা হিসেবে বিচার করা হয় প্রোটো-অস্ট্রালয়েড, মোঙ্গলীয় এবং দ্রাবিড়দের  শব্দের মিশ্রণে গড়ে উঠা ভাষা। আর্যদের সংস্কৃত ভাষার সংস্পর্শে এসে এর সাথে যুক্ত হয়ে সংস্কৃত শব্দ, অর্ধ-বিকৃত সংস্কৃত শব্দ এবং পূর্ণ বিকৃত সংস্কৃত শব্দ।

ভারতবর্ষের মুসলমানদের আগমন এবং দীর্ঘ মুসলিম শাসনামলে এই ভাষার সাথে মিশ্রণ ঘটেছে আরবি, ফারসি, তুর্কি শব্দ। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে অল্পবিস্তর প্রবেশ করছে চীনা, জাপানি, বার্মিজ ভাষা। ইউরোপীয় ভাষাগুলোর ভিতর অল্প ফরাসি, ডাচ ভাষা মিশেছে। তবে দীর্ঘকাল ইংরেজ শাসনের সূত্রে প্রচুর ইংরেজি শব্দ বাংলা ভাষায় প্রবেশ করেছে। জ্ঞানবিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার চর্চা, বাণিজ্য, খেলাধুলা, যোগাযোগ ইত্যাদির সূত্রে বাংলাতে এখনো ইংরেজি শব্দ বাংলাতে প্রবেশ করছে।

শব্দের উৎসরে বিচারে বাংলা শব্দকে প্রধান দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। ভাগ দুটি হলো আর্য, অনার্য ও মিশ্র শব্দ।