সওগাত
বাংলা ভাষায় প্রকাশিত পত্রিকা।

১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দের ২রা ডিসেম্বর (সোমবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৩২৫) কলকাতা থেকে, এটি প্রথমে মাসিক পত্রিকা হিসেবে প্রকাশিত হয়েছিল। এর সম্পাদক ছিলে মোহাম্মদ নাসিরুদ্দিন। সে সময় এই পত্রিকাকে কেন্দ্র করে কলকাতায় একটি সাহিত্য চক্র গড়ে উঠে। অর্থনৈতিক সংকটের কারণে কিছুদিন পত্রিকা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দে পুনরায় প্রকাশিত হয়।

১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দে নাসিরুদ্দিন ‘সওগাত সাহিত্য মজলিস’ নামে একটি সাহিত্য সংগঠন গড়ে তোলেন। সে সময়ের সওগাত পত্রিকায় কাজী নজরুল ইসলাম , বেগম রোকেয়া, শামসুন্নাহার মাহমুদ, বেগম সুফিয়া কামাল প্রমুখের লেখা নিয়মিত প্রকাশিত হত। ১৯২৭ খ্রিষ্টাব্দে মাসিক 'সওগাতে' 'জানানা মহল' নামে প্রথম মহিলাদের জন্য একটি বিভাগ চালু করেন।

উল্লেখ্য মোহাম্মদ নাসিরুদ্দিন-এর উদ্যোগে এবং সম্পাদনায় সওগাত নামে আরও কিছু পত্রিকা প্রকাশিত হয়। যেমন ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দে বার্ষিক সওগাত প্রকাশিত হয়।  ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দে সাপ্তাহিক সওগাত প্রকাশিত হয়। ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দে সচিত্র মহিলা সওগাত প্রকাশিত হয়। এছাড়াও কিছুদিন শিশু সওগাত প্রকাশিত হয়েছিল। ১৯৪৫ খ্রিষ্টাব্দে বাবাকে সহযোগিতা করার জন্য তাঁর কন্যা নুরজাহান বেগম সওগাত পত্রিকা অফিসে বসতে শুরু করেন। 

১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে পাকভারত বিভাজনের পর, ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে মোহাম্মদ নাসিরুদ্দিন ঢাকায় চলে আসেন। কিছুদিন এই পত্রিকার প্রকাশ বন্ধ থাকার পর, ১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে ঢাকা থেকে পুনরায় সওগাত প্রকাশিত হতে থাকে। সে সময়ে সওগাতকে কেন্দ্র করে ঢাকাতে গড়ে ওঠে সাহিত্যিকদের আড্ডা। এই আড্ডায় থাকতেন, সে সময়ের প্রবীণ লেখকরা। এঁদের ভিতর উল্লেখযোগ্য ছিল কাজী মোতাহার হোসেন, কবি বেগম সুফিয়া কামাল ও মাহমুদা খাতুন সিদ্দিকা। আর উঠতি লেখকদের ভিতরে ছিলেন আবদুল গনি হাজারী, সরদার জয়েনউদ্দীন, কামরুল হাসান, মুস্তাফা নূর-উল ইসলাম, ফজলে লোহানী, শামসুর রাহমান, শহীদুল্লাহ কায়সার, আব্দুল্লাহ আল মুতী, ফয়েজ আহমদ, লায়লা সামাদ, ওমর আলী, আল মাহমুদ, হাসান হাফিজুর রহমান প্রমুখ।