টেরাকোটা
ইংরেজি : Terracotta, Terra cotta, Terra-cotta
 ল্যাটিন terra cotta>ইতালি terra cotta> ইংরেজি  Terracotta, Terra cotta, Terra-cotta

পোড়া মাটির তৈরি
ভাস্কর্য। ইতালি ভাষায় terra cotta শব্দটির অর্থ হলো- পোড়া মাটি। কাদা দিয়ে কোনো অবয়ব তৈরি করে, রৌদ্রে শুকানো হয় এবং পরে তা আগুনে পুড়িয়ে মজবুত করা হয়। প্রাচীন কালে এই পদ্ধতিতে নানাধরনের পাত্র, তাবিজ, ইট তৈরি করা হতো। ভাস্কর্যশিল্পে এর সবগুলোকে টেরাকোটা বলা হয় না। এই পদ্ধতিতে মাটির ফলকে কোনো শিল্পকর্ম উপস্থান করলে, তখন তাকে টেরাকোটা বলা হয়। মূলত টেরাকোটা সাংসরিক কাজে ব্যবহারের জন্য তৈরি কথা হয়। গৃহাদি অলঙ্করণ বা কোনো শৈল্পিক প্রদর্শনের জন্য টেরাকোটা তৈরি করা হয়। কিছু কুশলী শিল্পীরা টেরাকোটা তৈরি করে থাকেন। বাংলাদেশের মন্দিরের গাত্র অলঙ্করণের জন্য একসময় টেরাকোটা অপরিহার্য উপকরণ ছিল। এই সূত্রে মসজিদেও টেরাকোটা ব্যবহৃত হয়েছে।

 হরপ্পায় পাওয়া স্বস্তিকা

ভারতবর্ষের সিন্ধু নদীর তীরে খ্রিষ্টপূর্ব ৫০০০ বৎসর বা তার আগে বিকশিত সিন্ধু সভ্যতা প্রচুর টেরাকোটার নিদর্শন পাওয়া গেছে এই সব নিদর্শেনের মধ্যে রয়েছে নানা ধরনের পাত্র, দেবদেবীর মূর্তি, স্বস্তিকা চিহ্ন ইত্যাদি। খ্রিষ্টপূর্ব ৪৫০ অব্দের দিকে বাংলাদেশের উয়ারী-বটেশ্বর অঞ্চলে বিকশিত সভ্যতায় এই জাতীয় নমুনা পাওয়া গেছে। এই বিচারে বলা হয়, বহু আগে থেকেই বাংলাদেশের শিল্পীরা টেরাকোটা তৈরির কৌশল শিখেছিল।

উয়ারি-বটেশ্বর-এ প্রাপ্ত পোড়া মাটির তাবিজ

মূলত কাদা-মাটির দেশে হিসাবে, এদেশের শিল্পীদের কাছে ভাস্কর্য তৈরির সুলভ উপাদান ছিল মাটি। মাটি পুড়িয়ে ইটা তৈরি করে গৃহাদি তৈরির প্রক্রিয়ার সাথে সাথে টেরাকোটা-শিল্পের বিকাশ ঘটেছিল। স্থানীয় রাজারা এসব টেরাকোটা ব্যবহার করতেন নিজেদের বাসগৃহের জন্য বা প্রার্থনালয়ের জন্য। বাংলাদেশে টেরাকোটাসমৃদ্ধ মন্দির হিসাবে দিনাজপুরের কান্তজীর মন্দির বিখ্যাত। পুরো মন্দিরে প্রায় ১৫,০০০-এর মতো টেরাকোটা রয়েছে। এসব টেরাকোটায় রামায়ণ, মহাভারত এবং বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনি চিত্রিত আছে। মন্দিরের চারদিকের সবগুলো খিলান দিয়েই ভেতরের দেবমূর্তি দেখা যায়। মন্দিরের পশ্চিম দিকের দ্বিতীয় বারান্দা থেকে সিঁড়ি উপরের দিকে উঠে গেছে।


সূত্র :
http://www.britannica.com/EBchecked/topic/530179/sculpture