উৎক্ষেপণকালে ভয়েজার-২
ছবি : http://www.nasa.gov/mission_pages/voyager/index.html

ভয়েজার (নভোখেয়া)
ইংরেজি : Voyager
 

মহাকাশ পর্যবেক্ষণ এবং এর রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাসা নামক সংস্থা কর্তৃক প্রেরিত নভোখেয়া বিশেষ। একই নামের দুটি নভোখেয়াকে বলা হয় যথাক্রমে ভয়েজার ১ ও ভয়েজার ২। এই দুটি নভোখেয়ার মহাকাশে উৎক্ষপণের কালানুক্রমিক বিচারে ভয়েজার ২ উৎক্ষিপ্ত হয়েছিল ১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দের ২০ অগাষ্ট, পক্ষান্তরে ভয়েজার ১ উৎক্ষিপ্ত হয়েছিল একই বৎসরের ৫ সেপ্টেম্বরে। সৌরজগতের গ্রহগুলোকে অতিক্রম করে দূর আকাশে চলে যাওয়া নভোখেয়াসমূহের ভিতরে এই নভোখেয়া দুটিকে  তৃতীয় ও চতুর্থ স্থান দেওয়া হয়। উল্লেখ্য এর আগের দুটি নভোখেয়া ছিল পায়োনিয়ার সিরিজের ১০ এবং ১১ ।

 

ভয়েজার উৎক্ষেপণের ইতিহাস

১৯৬২-৭৩ খ্রিষ্টাব্দের ভিতরে বুধ, শুক্র এবং মঙ্গল গ্রহ পর্যবেক্ষণের জন্য মেরিনা প্রকল্প (Mariner program) গ্রহণ করেছিল। এটি সাধারণভাবে মঙ্গল অভিযান হিসেবেই বিবেচনা  করা হয়। মেরিনা ১০ পর্যন্ত এই মেরিনা প্রকল্পের অধীনে নভোযানগুলো প্রেরণ করা হয়। কিন্তু মেরিনা ১১ এবং মেরিনা ১২ কে উন্নত করে ভয়েজার ১ এবং ভয়েজার ২ নামে মহাকাশে পাঠানো হয়। প্রাথমিকভাবে এই দুটি নভোখেয়াকে বৃহস্পতি ও শনি গ্রহ পর্যবেক্ষণের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়। পরে বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে অনুধাবন করতে পারেন যে, বৃহস্পতি ও শনি গ্রহের মাধ্যাকর্ষণ শক্তি ব্যবহার করে দূরবর্তী ইউরেনাস ও নেপচুন গ্রহে এই নভোখেয়াকে পাঠানো সম্ভব। পরবর্তী সময়ে এর সাথে প্লুটো-কে যুক্ত করা হয়। এই দুটি নভোখেয়ার মহাযাত্রার জন্য দুটি পথ বিবেচনায় রাখা হয়েছিল। এর একটি ছিল বৃহস্পতি-শনি-প্লুটো, অপরটি ছিল বৃহস্পতি-ইউরেনাস-নেপচুন। পরে মার্কিন কংগ্রেস অর্থাভাবে এই প্রকল্প সাময়িকভাবে স্থগিত করে দেয়। কিছুদিন পর আর্থিক অসুবিধা দূর হলে এই প্রকলপটিকে পুনরায় কার্যকর করা হয় এবং পুরো প্রকল্পের আধুনিকায়ন করা হয়।

 

এই প্রকল্পের অধীনে প্রথম ভয়েজার ২ উৎক্ষিপ্ত হয়েছিল ১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দের ২০ অগাষ্ট। এক্ষেত্রে এই নভোখেয়া প্রথম প্রেরণ করে, বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হতে চেয়েছিল যে, নভোখেয়াটি যথাযথভাবে কাজ করে কিনা। এই নভোখেয়াটির পথও নতুনভাবে সাজানো হয়েছিল। এই পথ ছিল- বৃহস্পতি-শনি-ইউরেনাস-নেপচুন। এই নভোখেয়াটি আশানুরূপ ফলাফল দেখালে, ১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দের ৫ সেপ্টেম্বরে ভয়েজার ১ উৎক্ষেপণ করা হয়। এই নভোখেয়াটিকে কিছুটা ছোটো এবং দ্রুত গতিতে চলতে পারে এমনভাবে তৈরি করা হয়েছিল। ফলে দ্রুত বৃহস্পতি এবং শনি গ্রহকে অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছিল। সৌরমণ্ডলের বাইরের জগতে অনুসন্ধান করার জন্য এর আগে প্রেরিত হয়েছিল পায়োনিয়ার ১০। দ্রুত গতির কারণে এই নভোখেয়াটিকে ভয়েজার-১ অতিক্রম করে যায় ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ ফেব্রুয়ারিতে। ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দের ১২ সেপ্টেম্বর নাসার বিজ্ঞানীরা ঘোষণা দেন যে, এই নভোখেয়াটি সৌর এলাকা ত্যাগ করতে সক্ষম হয়েছে।

    দেখুন : ভয়েজার-১

                  ভয়েজার-২


সূত্র :
http://www.nasa.gov/