পবিত্র গঙ্গোপাধ্যায়
১৮৯৩-১৯৭৪
সাহিত্যিক, সাংবাদিক, অনুবাদক।

১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দে ২৬ সেপ্টেম্বর (শনিবার ১১ ভাদ্র ১৩০০ বঙ্গাব্দ) ঢাকার বিক্রমপুরের জন্মগ্রহণ করেন। পারিবারিক অস্বচ্ছলতার জন্য অল্প বয়সে তাঁকে জীবিকার সন্ধানে ঘর ছাড়তে হয়েছিল। প্রথম জীবনে আসামের জোড়হাটে কিছুদিন মুহুরির কাজ করেন। সেখানে তিনি একটি সাহিত্য সংসদ গড়ে তোলেন। এখান থেকেই তিনি কলকাতার বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লেখালেখি শুরু করেন। এই সূত্রে তাঁর সাথে প্রমথ চৌধুরী এবং যোগেন্দ্রনাথ গুপ্তের সাথে পরিচয় ঘটে।

১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি প্রমথ চৌধুরীর তাঁর সম্পদিত সবুজপত্র পত্রিকায় যোগদানের জন্য অনুরোধ করেন। এই সূত্রে তিনি কলকাতায় আসেন এবং সবুজপত্র পত্রিকায় সহযোগী সম্পাদক হিসেবে কাজ শুরু করেন
এই সময় তিনি সবুজপত্র পত্রিকার অফিস 'কমলালয়ে' বসবাস শুরু করেন। এখানে কাজ করার সময় তাঁর বাংলা সাহিত্যের বিশিষ্ট লেখকদের সাথে পরিচয় ঘটে। বিশেষ করে লেখালেখির সূত্রে কাজী নজরুল ইসলামের সাথে তাঁর বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল। উল্লেখ্য, নজরুল করাচি সেনানিবাস থেকে ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাসের দিকে হাফিজের একটি গজলের অনুবাদ ' আশায় শিরোনামে সবুজপত্র পত্রিকায় প্রকাশের জন্য পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু পত্রিকার সম্পাদক প্রমথ চৌধুরী কবিতাটি প্রকাশ করার অনুমোদন দেন নি। এই সময় পবিত্র গঙ্গোপাধ্যায়, প্রবাসী পত্রিকায় প্রকাশের অনুরোধ জানিয়ে চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে কবিতাটি পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। চারুচন্দ্র কবিতাটি প্রবাসীতে প্রকাশ করেন। কবিতাটি প্রকাশিত হয়েছিল প্রবাসী পত্রিকার পৌষ ১৩২৬ সংখ্যার (ডিসেম্বর ১৯১৯-জানুয়ারি ১৯২০) ২৩৯ পৃষ্ঠায়। বাঙালি ভেঙে গেলে নজরুল কলকাতায় এসে বসবাস শুরু করেন। এই সময়, তাঁর সাথে নজরুলের সখ্য গড়ে উঠে। এছাড়া কল্লোল সাহিত্য গোষ্ঠীর লেখকদের সাথে বিশেষ ঘনিষ্টতা জন্মে।

এছাড়া ম্যাক্সিম গোর্কীর গল্পের অনুবাদের সংকলনে সহযাত্রী (জানুয়ারি ১৯৫৩) প্রকাশের পর, অনুবাদক হিসেবে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন। এছাড়া তাঁর অন্যান্য অনূদিত গ্রন্থের ভিতরে ছিল- বুভুক্ষা, চাহার দরবেশ। তাঁর উল্লেখ্যযোগ্য রচিত মৌলিক গ্রন্থ হলো- 'চলমান জীবন' (১৩৫৯ বঙ্গাব্দে, আগষ্ট-সেপ্টেম্বর ১৯৫২)।

১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
 

সূত্র :