পূর্ণচন্দ্র দাস
(১৮৯৯-১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দ)
ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের একজন বিপ্লবী।

১৮৯৯ খ্রিষ্টাব্দের ১ জুন মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার সমাজ ইশবপুরে জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম কাশীনাথ দাস।

১৯১০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মাদারীপুর উচ্চবিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। পরে কলকাতার বঙ্গবাসী কলেজে ভর্তি হন। এই বছরেই তিনি বঙ্গবাসী কলেজর লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে ভারতের স্বাধীনতা লাভের উদ্দেশ্যে মাদারীপুর সমিতি গঠন করেন। এই সময়ে তাঁর সাথে সহযোদ্ধা হিসেবে যোগ দেন- চিত্তপ্রিয় রায় চৌধুরী, নীরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত, মনোরঞ্জন সেনগুপ্ত, বিনোদ দাস প্রমুখ। তৎকালীন মাদারীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৌরেন চৌধুরী (ডাবল এম.এ.) বিপ্লবী ছাত্রদের প্রশ্রয় দেয়ায় চাকরিচ্যুত হন।

১৯১৩ খ্রিষ্টাব্দে ফরিদপুর ষড়যন্ত্র মামলায় পূর্ণচন্দ্র-সহ মাদারীপুর সমিতির প্রায় সকল সদস্যর গ্রেপ্তার হন এবং পাঁচ মাস জেল খাটেন। জেল থেকে মুক্তি পেয়ে পূর্ণচন্দ্র দাস এবং ১৯১৪ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতায় যান এবং যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় (বাঘ যতীন)-এর সাথে পরিচিত হন। পরে ধীরে ধীরে বাঘ যতীনে ঘনিষ্ঠ সহচরে পরিণত হন। ১৯১৪ খ্রিষ্টাব্দে ভারত-রক্ষা আইনে ধৃত হন এবং ১৯২ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবর মাসে মুক্তি পান। তাঁর কারামুক্তি উপলক্ষে কাজী নজরুল ইসলাম রচনা করেছিলেন পূর্ণ-অভিনন্দন নামক গান।

এরপর তিনি নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর নবগঠিত ফরওয়ার্ড ব্লকের সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি পুনরায় গ্রেপ্তার হন এবং ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দে মুক্তি পান। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে পাকভারত বিভাজনের পর তিনি দলীয় রাজনীতি ত্যাগ করেন এবং কলকাতায় উদ্বাস্তু পুনর্বাসন বোর্ডের সদস্য হয়ে বাস্তুহারাদের কল্যাণে তৎপর হন।

১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দের ৪ মে বালিগঞ্জে সুবোধ নামে এক প্রাক্তন বিপ্লবীর ছুরিকাঘাতে তার মৃত্যু ঘটে।