বিষয়:
নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম: এ কোন্ মায়ায় ফেলিলে আমায়
এ কোন্ মায়ায় ফেলিলে আমায়
চির জনমের স্বামী-
তোমার কারণে এ তিন ভুবনে
শান্তি না পাই আমি॥
অন্তরে যদি লুকাইতে চাই
অন্তর জ্ব'লে পুড়ে হয় ছাই;
এ আগুন আমি কেমনে লুকাই, ওগো অন্তর্যামী
॥
মুখ থাকিতেও বলিতে পারে না বোবা স্বপনের কথা;
বলিতেও নারি লুকাতেও নারি; তেমনি আমার ব্যথা।
যে দেখেছে প্রিয় বারেক তোমায়
বর্ণিতে রূপ-ভাষা নাহি পায়
পাগলিনী-প্রায় কাঁদিয়া বেড়ায় অসহায়, দিবাযামী॥
- ভাবসন্ধান:
স্রষ্টার অপার লীলায় মানুষ অনেক সময় দ্বিধান্বিত হয়ে
পড়ে। তখন মনে হয় সবই স্রষ্টার মায়ার খেলা। এমন দশায় ভক্ত
ত্রিভুবনের কোথাও শান্তি খুঁজে পায় না। মানবের সাথে স্রষ্টার এ যেন চিরন্তন লীলা।
ভক্ত যখন এ মায়ার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নিজের ভিতরে নিজকে লুকাতে চায়, হতে
চায় অন্তর্মুখী, তখন অন্তর অশান্তির আগুনে দগ্ধ হয়। ভক্ত তখন তার ভিতরের এই
দহনকে লুকাতে পার না। তখনই সে শান্তির সন্ধান প্রার্থনা করে তার অন্তরের
পরমাত্মারূপী অন্তর্যামীর কাছে।
ভক্ত সবই বুঝেন, কিন্তু মুখ ফুটে তা প্রকাশ করতে পারে না, তার অব্যক্ত কথা। এই
দহনের কথা ভক্ত লুকাতেও পারে না, বলতেও পারে না। এই পরম বেদনা নিয়ে তার দিন
অতবাহিত হয়। যে একবার আপন অন্তর্লোকে দেখেছে পরমাত্মার পরম রূপ, সে তা কখনো
ভুলতে পারে না। সে রূপ অবর্ণনীয় হয়ে বেদনায় কাতর হয়ে পড়ে। তাই সে অসহায়
পাগলিনীর মতো পর্মাত্মাকে না পাওয়ার পরমবেদনায় অহর্নিশি কেঁদে বেড়ায় আপনলোকে।
-
রচনাকাল:
গানটির রচনাকাল সম্পর্কে জানা যায় না। ১১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর (অগ্রহায়ণ-পৌষ ১৩৪৫)
মাসে, টুইন রেকর্ড কোম্পানি থেকে গানটির
প্রথম রেকর্ড প্রকাশিত হয়েছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৯ বৎসর ৬ মাস।
- গ্রন্থ: নজরুল-সংগীত সংগ্রহ [রশিদুন্ নবী সম্পাদিত। কবি নজরুল
ইন্সটিটিউট। তৃতীয় সংস্করণ দ্বিতীয় মুদ্রণ, আষাঢ় ১৪২৫। জুন ২০১৮। গান সংখ্যা ১২৭।
-
রেকর্ড:
এইচএমভি। ডিসেম্বর ১৯৩৮ (অগ্রহায়ণ-পৌষ ১৩৪৫)।
এন ১৭২২৬। কুমারী রেণুকা রায়
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার:
সুধীন দাশ।
[নজরুল-সঙ্গীত
স্বরলিপি, সপ্তম খণ্ড নজরুল ইন্সটিটিউট ১১ জ্যৈষ্ঠ,
১৩৯৯ বঙ্গাব্দ/ ২৫শে মে, ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দ। পঞ্চম গান। পৃষ্ঠা: ৪৮-৫১]
[নমুনা]
- সুরকার: কাজী নজরুল ইসলাম
- পর্যায়:
ধর্মসঙ্গীত। সাধারণ। পরমাত্মা। পরমবেদনা
- সুরাঙ্গ:
ঠুমরি
দাদরা- গ্রহস্বর: পধা