বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম: ক্ষমা সুন্দর আল্লা
ক্ষমা সুন্দর আল্লা, মোদের ভয় দেখিও না আর।
দোজখের ভয়ে হতে পারিনা হে প্রিয়তম, বেড়াপার॥
কেন দুনিয়ায় পাঠাইলে
কেন গুণাহের বোঝা দিলে,
তুমি তো জানিতে দুনিয়ায় পুড়ে মরিব যে তিলে তিলে।
হেথা পদে পদে করি অপরাধ
তোমারে পাওয়ার তবু জাগে সাধ,
অপরাধ শুধু দেখ কি গো তুমি, রোদন দেখনা তার॥
হে পরম প্রিয়, তোমারে খুঁজিতে গিয়া মোরা কত ভুল পথে চলি
তুমি ভেবে খেলি সুন্দর মায়া নিয়া পরে বিষের দাহনে জ্বলি॥
তুমি জান স্বামী তব পথে কত কণ্টক, কত বাধা,
যে পথে যাই সেই পথে লাগে দুনিয়ার ধুলো-কাদা।
জন্ম-অন্ধ জানিনা কাহারে
তুমি ভেবে হাত জড়াইয়া ধরে,
দু’চোখে নূরের তুষ্ণা ল’য়ে কি পাব দোজখের নীর॥
-
ভাবসন্ধান: এই গানে পরমকরুণাময় আল্লাহর কাছে কবির আত্ম-সমালোচনা এবং
তাঁর আত্ম-সমর্পণের অভিব্যক্তি উপস্থাপিত হয়েছে। কবি আল্লাহকে "ক্ষমা সুন্দর" বলে সম্বোধনে
আর্তি জানিয়েছেন- যেন তিনি তাঁকে দোজখের শাস্তির ভয় আর না দেখান। কবি মনে করেন, এই ভয়ের
বাধা পেরিয়ে তিনি তাঁর প্রিয় প্রভু আল্লাহর সান্নিধ্যে যেতে পারবেন না। তিনি
আল্লাহর কাছে অনুযোগের সাথে বলেছেন- সারা দুনিয়া জুড়ে পাপের প্রলোভন ছড়িয়ে আছে, সেখানে
তিনি তাঁকে মানুষ রূপে পাঠালেন। কেন আল্লাহ তাঁকে এমন দুনিয়ায় পাঠালেন, যেখানে গোনাহর সম্ভাবনা এত প্রবল,
সে পাপের বোঝা নিয়ে তাঁকে পদে পদে যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়।
কবি মনে করেন,
পাপাসক্ত মানুষ হিসেবে কবি এই দুনিয়ায় পদে পদে অপরাধ করেন। তারপরেও আল্লাহর
সান্নিধ্য পাওয়ার সাধ জাগে তাঁর মনে। কবির আক্ষেপ আল্লাহ শুধু পাপকেই দেখেন না.
পাপের জন্য অনুশোচনাও দেখেন।
আল্লাহ জানেন, তাঁরই উদ্দেশ্যে চলার পথে রয়েছে, নানা যন্ত্রণাময় বাধা। যে পথ
অবলম্বন করে কবি চলতে চান, সেই পথেই লাগে দুনিয়ার ধুলো কাদার মতো পাপ-পঙ্কিলতা।
কবি মনে করেন, তিনি জ্ঞানের আলো বঞ্চিত জন্মান্ধ হতভাগ্য মানুষ। অন্ধের মতো
আল্লাহ ভেবে যাকেই জড়িয়ে ধরতে চান, শেষ পর্যন্ত দেখেন তা পরমসত্তা ব্যতীত
অন্যকিছি। কবির দুই চোখে আল্লার
সত্যসুন্দরের জ্যোতির্ময় রূপদর্শনের তৃষ্ণা। কবির সংশয়- সেই আকাঙ্ক্ষা থাকার
পরও কবি কেন পাবেন দোজখের শাস্তি। তিনি মনে করেন, তিনি পরম করুণাময়, ক্ষমাশীল।
তাই পরম শাস্তি পাওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই।
-
রচনাকাল
ও স্থান:
গানটির
রচনাকাল সম্পর্কে জানা যায় না।
১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিল
(চৈত্র ১৩৪৭-বৈশাখ ১৩৪৮) মাসে.
টুইন রেকর্ড
কোম্পানি এই গানটির রেকর্ড করেছিল। এই সময় নজরুল
ইসলামের বয়স ছিল ৪১ বৎসর
১০ মাস।
- গ্রন্থ:
- রেকর্ড:
- টুইন [এপ্রিল ১৯৪১
খ্রিষ্টাব্দ (চৈত্র ১৩৪৭-বৈশাখ ১৩৪৮)] এফটি
১৩৫৬২। শিল্পী: দেলওয়ার হোসেন ও আশরাফ আলী
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। ইসলাম। হামদ