বিষয়: নজরুল সঙ্গীত
শিরোনাম: কোথায় তখ্ত তাউস
কোথায় তখ্ত তাউস, কোথায় সে বাদশাহী।
কাঁদিয়া জানায় মুসলিম ফরিয়াদ ইয়া ইলাহী॥
কোথায় সে বীর খালিদ, কোথায় তারেক মুসা
নাহি সে হজরত আলী, সে জুলফিকার নাহি॥
নাহি সে উমর খত্তাব, নাহি সে ইসলামী জোশ্
করিল জয় যে দুনিয়া, আজি নাহি সে সিপাহি॥
হাসান হোসেন সে কোথায়, কোথায় বীর শহীদান-
কোরবানি দিতে আপনায় আল্লার মুখ চাহি'॥
কোথায় সে তেজ ঈমান, কোথায় সে শান-শওকত,
তক্দীরে নাই সে মাহ্তাব, আছে প'ড়ে শুধু সিয়াহি॥
- ভাবসন্ধান: এই গানে কবি উপস্থাপন করেছে- মুসলমানদের হারানো গৌরব ফিরে
পাওয়ার কামনাকে। এই সূত্রে এই গানে এসেছে অতীতের মুসলিম রাজত্বের ঐতিহ্য,
বীরযোদ্ধা ও শাসকদের গৌরবগাথা। এই গানের স্থায়ীতে-
মুসলিমদের সেই বিশ্বজোড়া ক্ষমতা, রাজত্ব ও রাজশক্তির প্রতীকী ময়ূর সিংহাসন আজ নেই।
তাই মুসলমানরা আল্লাহর কাছে তাদের এই দুর্দশার জন্য ফরিয়াদ (কান্নাজড়িত আবেদন) জানাচ্ছে।
গানটির অন্তরাতে মুসলমানদের বিজয়দানকারী কয়েকজন বীরদের অভাব কথা উপস্থাপন করা
হয়েছে। মূলত যাঁদের বীরত্বের
কারণে ইসলাম ধর্ম ও রাজত্বের প্রসারিত হয়েছিল। এঁদের একজন হলেন- বিখ্যাত সেনাপতি বীর খালিদ (খালিদ বিন ওয়ালিদ)।
তিনি যিনি "সাইফুল্লাহ" বা "আল্লাহর তরবারি" নামে পরিচিত
লাভ করেছিলেন। তিনি অসংখ্য যুদ্ধে মুসলিম বাহিনীর বিজয় এনে দিয়েছিলেন। অপর
দুইজন তারেক
ও মুসা (তারেক বিন জিয়াদ ও মুসা বিন নুসাইর) ছিলেন স্পেনে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠাকারী
দুই বীর সেনাপতি। কবি স্মরণ করেছন হজরত আলীকে। তিনি ইসলামের চতুর্থ খলিফা এবং একজন বিখ্যাত যোদ্ধা।
তাঁর তরবারির নাম ছিল জুলফিকার। এই তরবারিটি ছিল ন্যায় ও শক্তির প্রতীক। হজরত উমর
ছিলেন ইসলামের তৃতীয় শাসক। এঁদের অভাবে ইসলামী উদ্দীপনা হারিয়ে গেছে। যে সিপাহি বা যোদ্ধারা একদিন বিশ্বজয় করেছিল, আজ তাঁদের দেখা মেলে না।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে
সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দের
১৫ অক্টোবর (শনিবার ২৯ আশ্বিন ১৩৩৯), 'জুলফিকার'
নামক গীতি-গ্রন্থে
গানটি প্রথম অন্তর্ভুক্ত হয়ে প্রকাশিত হয়েছিল। এই
সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৩ বৎসর ৪ মাস।
- গ্রন্থ:
- জুলফিকার
- প্রথম সংস্করণ। ১৫ অক্টোবর ১৯৩২
(শনিবার ২৯ আশ্বিন ১৩৩৯)। জুলফিকার-২। খাম্বাজ-কার্ফা
- নজরুল রচনাবলী, জন্মশতবর্ষ সংস্করণ। চতুর্থ খণ্ড। বাংলা একাডেমী, ঢাকা। জ্যৈষ্ঠ ১৪১৪, মে ২০০৭, জুলফিকার।
২ সংখ্যক গান। খাম্বাজ-কার্ফা। পৃষ্ঠা: ২৯০।
-
নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ (নজরুল ইন্সটিটিউট। ফেব্রুয়ারি ২০১২)। ৩৩৯ সংখ্যক
গান।
- রেকর্ড:
এইচএমভি।
ডিসেম্বর ১৯৩২ (অগ্রহায়ণ-পৌষ ১৩৩৯)।
এন ৭০৬৮। শিল্পী: আব্বাসউদ্দীন আহমদ।
- স্বরলিপিকার ও স্বরলিপি:
সুধীন দাশ।
[নজরুল-সঙ্গীত
স্বরলিপি, দ্বাদশ খণ্ড।
প্রথম সংস্করণ। নজরুল ইন্সটিটিউট আশ্বিন ১৪০৪/অক্টোবর ১৯৯৩। ১৩ সংখ্যক গান]
[নমুনা]
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। ইসলামি গান। স্মরণ-সঙ্গীত
- সুরাঙ্গ:
স্বকীয়