বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম: সুদূর সিন্ধুর ছন্দ উতল
সুদূর সিন্ধুর ছন্দ উতল
আমরা কলগীতি চঞ্চল॥
তুফান ঝঞ্ঝা কল্লোল ছলছল
ঊর্ধ্বে আমি ঝড় বহি শন্শন্
মম বক্ষে তব মঞ্জির তোলে গো রণন্
আনন্দ চিত্তে মেতে উঠি নৃত্যে
গুরু গুরু গুরু বাজে বাদল মাদল॥
তুমি গগন তলে উঠি মেঘের ছলে
জল-বিম্বমালা বালা পরাও গলে।
তুমি বাদল হাওয়ায় কর আদর যখন
মোরে কান্না পাওয়ায়।
ধূলি গৈরিক ঝড়ে সাগর নীলাম্বরী
জড়াইয়া অপরূপ করে ঝলমল॥
- ভাবার্থ:
সাগরের সাথে স্থলভূমির যে গভীর সম্পর্ক, তাই এ গানে উপস্থাপিত হয়েছে। এ গানের 'আমরা',
'আমি' হলো প্রকৃতির নানা ছন্দে গাঁথা কলগীতি।
সুদূর সাগরের উত্তাল ছন্দ, প্রকৃতির কলগীতিতে চাঞ্চল্য আনে। ঝড়-ঝঞ্ছায় সে গানে সাগরে
ছলছল কল্লোল-সুর ধ্বনিত হয়। সে গান ঊর্ধ্বাকাশে শনশন শব্দে ঝড় হয়ে বহে, ছন্দে ছন্দে
বাজে ঝড়-নূপুর। সানন্দিত তাণ্ডব নৃত্যে মেতে ওঠা প্রকৃতির গান হয়ে ওঠে নৃত্যরতা
নটিনী। সাথে বাজে বাদল মেঘের গুরু গুরু মাদল ধ্বনি।
সাগরের জল মেঘ সৃষ্টির ছলনায় আকাশের গলায় পরায় জলবিন্দুর মালা। আর বাদলের হাওয়া যখন
সেই মেঘমালায় আদরের পরশ বুলায়, তখন প্রকৃতির কলগীতি কান্না হয়ে ঝরে পড়ে। ধূলিগৈরিক
ঝড়ে আকাশের রঙ পাল্টায়, কিন্তু সাগর তখনও তার ঝলমল রূপ অঙ্গে ধরে নীলাম্বরীই রয়ে
যায়।
রচনাকাল ও স্থান:
গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। নজরুলের
সুস্থাবস্থায় গানটি কোনো মাধ্যমেই প্রকাশিত হয় নি।
- গ্রন্থ:
- নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ [নজরুল ইনস্টিটিউট ফেব্রুয়ারি ২০১২। গান সংখ্যা ৯৯৮। পৃষ্ঠা:
৩০৫]
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার:
আহসান মুর্শেদ
[নজরুল
সঙ্গীত স্বরলিপি, চল্লিশতম খণ্ড, নজরুল ইন্সটিটিউট, ঢাকা।
জ্যৈষ্ঠ
১৪২৩ বঙ্গাব্দ/ জুন, ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দ] গান সংখ্যা ৪। পৃষ্ঠা: ৩২-৩৫। [নমুনা]
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: প্রকৃতি, জাগতিক, সাগর
- সুরাঙ্গ: স্বকীয় বৈশিষ্ট্যের গান।