মাসুদা খাতুন
১৮৮৫-১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দ
ব্রিটিশ ভারতের মুসলিম নারীবাদী ও ধর্মনিরপেক্ষ সমাজকর্মী। এঁর ছদ্মনাম মিসেস এম রহমান।

মাসুদা খাতুন ১৮৮৫ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা ছিলেন হুগলি জেলা, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারতের আইনজীবী। তৎকালীন প্রথা অনুসারে মাত্র ১১ বৎসর বয়সে বিবাহ হয়। স্বামীর নাম মাহমুদুর রহমান। পরে তিনি কলকাতার রেজিস্ট্রার পদে অধিষ্ঠিত হন।

তিনি তৎকালীন মুসলিম নারীদের অধিকারের বিষয়ে সোচ্চার ছিলেন। তিনি সমালোচনা করেছেন রক্ষণশীল মুসলমানদের। অন্যদিকে দৃঢ় ধর্মনিরপেক্ষতা বজায় রাখার জন্য মুসলিম এবং হিন্দুদের মধ্যে ঐক্যের ডাক দিয়েছিলেন। তিনি মুসলমান নারীদের বোরকা পড়ার বিরোধিতা করেছেন। সমাজকর্মী হিসেবে তিনি একটি পতিতাবৃত্তি পুনর্বাসন কেন্দ্র নির্মাণে সহায়তা করেন।

কবি কাজী নজরুল ইসলামের সাথে তাঁর সম্পর্ক ছিল মাতা-পুত্রের মতো। নজরুল তাঁকে মা সম্বোধন করতেন। তিনি নজরুলের সম্পাদনায় প্রকাশিত ধূমকেতু পত্রিকার বিশেষ সহায়ক ছিলেন। নজরুল তাঁর ১৩৩১ বঙ্গাব্দে প্রকাশিত 'বিষের বাঁশী' কাব্যগ্রন্থে উৎসর্গ কবিতাটি মাসুদা খাতুনকে করেছিলেন।

১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দের ১০ ডিসেম্বর তিনি কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।

বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য পত্রিকা, সওগাত, সহচর, সাম্যবাদী, ধূমকেতু, লাঙল, অভিযান প্রভৃতি সাময়িকীতে তাঁর বহু প্রবন্ধ ও ছোট গল্প প্রকাশিত হয়েছিল। তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য উপন্যাস ছিল 'মা ও মেয়ে'। এবং উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধগুলো ছিল- আমাদের দাবী, পর্দা বনাম প্রবঞ্চনা, নারীর বন্ধন প্রভৃতি। তাঁর মৃত্যর পর, তাঁর স্বামী সকল রচনা নিয়ে 'চানাচুর' নামক একটি সংকলন প্রকাশ করেছিলেন। গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়েছিল ১৯২৭ খ্রিষ্টাব্দে।
তথ্যসূত্র: