।
মূলত ইংরেজি ভাষায় যথাযথ বাংলা বাংলা সংস্কৃতের মতো সমাস পাওয়া যায় না।
সমাসের পদ এর সম্মিলন ইত্যাদির বিচারে কিছু পারিভাষিক শব্দ ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যেমনে– উত্তরপদ, পরপদ, পূর্বপদ, বিগ্রহবাক্য, ব্যাসবাক্য, সমস্যমানপদ, সমস্তপদ।
-
পূর্বপদ, পরপদ (উত্তরপদ) : যে সকল পদ নিয়ে সমাস তৈরি
হয়, তার প্রথম পদকে বলা হয় পূর্বপদ। পূর্বপদের পরবর্তী পদগুলিকে পরপদ বা
উত্তরপদ বলা হয়। যেমন–
- তুষারের ন্যায় ধবল/তুষারধবল
এখানে তুষার পূর্বপদ এবং ধবল পরপদ বা
উত্তরপদ
- সমস্যমান পদ: যে সকল পদ নিয়ে সমাস তৈরি হয়, তাদের প্রত্যকটিকে সমস্যমান পদ বলা হয়। যেমন–
- রাজার পুত্র=রাজপুত্র।
এখানে রাজার এবং পুত্র শব্দ দুটি হবে সমস্যমান পদ।
- সমস্তপদ: যে সকল পদের সমন্বয়ে সমাসবদ্ধ পদের সৃষ্টি হয়, তাকে সমস্তপদ বলে। যেমন–
- পঙ্কে জন্মে যে=পঙ্কজ।
এখানে পঙ্কজ সমস্তপদ বা সমাসসাধিত পদ।
- ব্যাসবাক্য: সমাসের অর্থ বোঝার জন্য যে বাক্য ব্যবহার করা হয়, তাকে ব্যাসবাক্য বলা হয়। এর অপর নাম বিগ্রহবাক্য। যেমন–
- পঙ্কে জন্মে যে=পঙ্কজ।
এখানে 'পঙ্কে জন্মে যে' বাক্যটিকে বলা হয় ব্যাসবাক্য
সমাসের শ্রেণিকরণ:
সংস্কৃত ব্যাকরণে, সমাসকে চারটি প্রধান ভাগে ভাগ করা হয়েছিল। এগুলো ছিল-
অব্যয়ীভাব,
তৎপুরুষ ,
বহুব্রীহি ও
দ্বন্দ্ব ।
এর বাইরে রাখা হয়েছিল 'সহসুপা' একটি সমাসকে। এর বাইরে
কর্মাধরয়, দ্বিগু ইত্যাদি সমাসগুলোকে রাখা হয়েছিল- উক্ত সমাসগুলোর উপবিভাগ হিসেবে।
এ সবের বিচারে সমাসের যে শ্রেণিকরণ পাওয়া যায় তা হলো-
- অব্যয়ীভাব সমাস: পূর্বপদে অব্যয়যোগে নিষ্পন্ন সমাসে যদি অব্যয়েরই অর্থের প্রাধান্য থাকে, তবে তাকে অব্যয়ীভাব সমাস বলে।
- প্র, পরা, প্রভৃতি উপসর্গ যোগে যে সমাস হয়।
- তৎপুরুষ সমাস:
পরপদের অর্থ প্রধান হয়।
- কর্মধারয় সমাস:
তৎপুরুষ
সমাসেরই সামানাধিকরণ হলে কর্মধারয় সমাস হয়।
- দ্বিগু সমাস: কর্মাধারয় সমাসে পূর্বে সংখ্যা বসে এবং সমাহার অর্থ প্রকাশ করে।
- অলুক সমাস: যে সকল তৎপুরুষ সমাসে বিভক্তি লোপ পায় না।
- নঞ্ তৎপুরুষ সমাস: নঞ্ অব্যয় যুক্ত হয়ে যে তৎপুরুষ সমাস হয়।
- উপপদ তৎপুরুষ সমাস: কৃদন্ত পদের পূর্বে যে পদ থাকে।
- বহুব্রীহি সমাস:
যে সমাস
সমস্যমান পদগুলোর কোনটির অর্থ প্রধানভাবে না বুঝিয়ে অন্য কোন অর্থ বুঝিয়ে থাকে,
তাকে বহুব্রীহি সমাস বলে।
- দ্বন্দ্ব সমাস: যে
সমাসে দুই বা ততোধিক পদ মিলিত হয়ে একপদ হয় এবং পূর্বপদ ও পরপদ উভয়েরই প্রাধান্য
থাকে, তাকে দ্বন্দ্ব সমাস বলে।
অতিরিক্ত সমাস:
- নিত্য সমাস: যে সকল সমাসের ব্যাসবাক্য হয় না
- সুপসুপা সমাস: যে খানে সুবন্তের সাথে সুবন্ত হয়।
সূত্র:
- চলন্তিকা। রাজশেখর বসু। এমসি সরকার অ্যান্ড সন্স প্রাইভেট লিঃ।
১৪০৮।
- পাণিনীয় শব্দশাস্ত্র । ড. সত্যনারায়ণ চক্রবর্তী। সংস্কৃত পুস্তক
ভাণ্ডার। ভগবান যিশুর আবির্ভাব তিথি, ২০০৩।
- বঙ্গীয় শব্দকোষ (দ্বিতীয় খণ্ড)। হরিচরণ
বন্দ্যোপাধ্যায়। সাহিত্য অকাদেমী। ২০০১।
- বাংলা একাডেমী ব্যবহারিক বাংলা অভিধান। মার্চ ২০০৫।
- বাংলা বানান চিন্তা (প্রথম ও দ্বিতীয় খণ্ড)। অধ্যাপক পি.
আচার্য। জুলাই ১৯৯৭।
- বাঙ্গালা ভাষার অভিধান (প্রথম ও দ্বিতীয় খণ্ড)। জ্ঞানেন্দ্রমোহন
দাস। সাহিত্য সংসদ। নভেম্বর ২০০০।
- ভাষাপ্রকাশ বাঙ্গালা ব্যাকরণ। সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়। রূপম। মে
১৯৮৯।
- শব্দবোধ অভিধান। আশুতোষ দেব। দেব সাহিত্য কুটির। মার্চ ২০০০।
- শব্দসঞ্চয়িতা। ডঃ অসিতকুমার বন্দোপাধ্যায়। নিউ সেন্ট্রাল বুক
এজেন্সি প্রাঃ লিমিটেড। ২৩শে জানুয়ারি, ১৯৯৫।
- শব্দার্থ প্রকাশিকা। কেশবচন্দ্র রায় কর্মকার। দেব সাহিত্য কুটির।
মার্চ ২০০০।
- সংসদ বাংলা অভিধান। সাহিত্য সংসদ। শৈলেন্দ্র বিশ্বাস। মার্চ ২০০২।
- সমগ্র ব্যাকরণ কৌমুদী। সাহিত্য সংসদ। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর।
ডিসেম্বর ২০০৩।
- সরল বাঙ্গালা অভিধান । সুবলচন্দ্র মিত্র।
- wordnet
2.1