১৯৩৩ -২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ
লেখক, গবেষক, সংগঠক, সাংবাদিক, সঙ্গীতশিল্পী, সঙ্গীতজ্ঞ, শিক্ষক, শিক্ষাবিদ। ডাক
নাম মিনু। এই নামের প্রেক্ষাপট জানা যায়, তাঁর রচিত ' অতীত দিনের স্মৃতি '
গ্রন্থ থেকে। জন্মের পর, তাঁর মাছের মতো বড় বড় চোখ দেখে- তাঁর নাম দেয়া
হয়েছিল মীনাক্ষি। তারপরে সেখান থেকে মীনা। আদুরে নাম হিসেবে শেষ পর্যন্ত সে নাম হয়ে উঠেছিল
মিনু।
১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দের ৪ এপ্রিল , ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন - জাতীয়
অধ্যাপক কাজী মোতাহার
হোসেন। মায়ের নাম- সাজেদা খাতুন। স্বামী:
ওয়াহিদুল হক
।
সন্তানাদি:
অপালা ফরহদ নবেদ, পার্থ তানভীর নভেদ্, ও
রুচিরা তাবাস্সুম নভেদ্।
'নারীশিক্ষা মন্দির' নামক স্কুলে লেখাপড়ার মধ্য দিয়ে তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা
শুরু। এরপর তিনি ভর্তি হন আরমানি টোলার 'আনন্দময়ী স্কুলে। এই স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে
উত্তীর্ণ হওয়ার পর ভর্তি হন ইডেন স্কুলে। পরে কামরুন্নেসা
গার্লস হাইস্কুলে ভর্তি হন।
এই সময়ের ভিতরে তাঁর গান শেখা শুরু হয়েছিল বড়বোনদের সাহচর্যের। আনুষ্ঠানিকভাবে গান শেখা শুরু
করেছিলেন নিত্যগোপাল সাহার কাছে। পরে উচ্চারণ নিয়ে সমস্যার কারণে তাঁর কাছে আর গান
শেখা সম্ভব হয় নি। এ প্রসঙ্গে সন্জীদা খাতুন তাঁর অতীত দিনের স্মৃতি গ্রন্থে
লিখেছেন-
'...তার পর একটি
আধুনিক গানে 'কেহ নাহি আর সান্ত্বনা দিতে' শিখতে গিয়ে হল বিপত্তি। উনি আমাকে
বললেন, কেহ কী? ক্যাহো!' আমার মুখ দিয়ে তো আর ক্যাহো বেরোয় না! পরে তাঁকে
ডেকে দরজার আড়াল থেকে আম্মু বললেন, 'আমার মেয়েকে উচ্চারণ শেখাতে হবে না, গান
শেখালেই হবে'। ব্যস, হয়ে গেল। আর এলেন না উনি গান শেখাতে।'
এরপর তিনি গান শেখেন
পল্লীগীতির শিল্পী হাসান আলী খাঁ-এর কাছে। এরপর গান শিখেছেন আনন্দময়ী স্কুলের
গানের শিক্ষিকা রেণুদির কাছে।
১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দের ৭ই আগষ্ট, মুসলিম সম্প্রদায়ের ছেলে-মেয়েদেরকে স্বকীয়
কৃষ্টি ও সংস্কৃতির ভিত্তিতে গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে দৈনিক আজাদের পাতায়
'মুকুলের মাহফিল' নামে বিশেষ
বিভাগ খোলা হয়েছিল। উল্লেখ্য, এই নামটি দিয়েছিলেন কবি কাজী নজরুল ইসলাম। এ সময়
মুকুলের মাহফিলের পরিচালক ছিলেন মোহাম্মদ মোদাব্বের। মুকুলের মাহফিলের পটভূমিতে
বাংলা, বিহার, উড়িষ্যা ও আসামে গড়ে ওঠে শিশুকিশোর সংগঠন 'মুকুল
মেলা'। প্রাথমিক পর্যায়ে মুকুলের মেলাকে পাকিস্তান
আন্দোলনের সাথে একাকার করে দেয়া হয়েছিল। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে মুকুল মেলার নাম
পরিবর্তন করে রাখা হয় ''মুকুল ফৌজ'। এবারের মুকুল ফৌজের নতুন পরিচালক হয়েছিলেন শিল্পী কামরুল হাসান।
সন্জীদা
খাতুন মুকুল ফৌজের সাথে যুক্ত হয়েছিলেন তাঁর ছোটো ভাই কাজী আনোয়ার হোসেন (নবাব)-এর
সূত্রে। সেখানে পরিচয় ঘটে ওয়াহিদুল হকের সাথে।
১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে কামরুন্নেসা গারল্স হাইস্কুল থেকে
মেট্রিক পাশ করেন।
১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ইডেন
কলেজ ভর্তি হন। সে সময়ে তিনি পিতামাতার সাথে ৪২ নম্বর তোপখানার একটি বাড়িতে থাকতেন।
এখানে ওই বাড়ির অপর বাসিন্দা রাঙাদির সাথে তাঁর পরিচয় ঘটে। তাঁরই প্ররোচনায় তিনি
পাকিস্তান উইমেন্স ন্যাসনাল গার্ডে- যোগদান করে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন কিছুদিন।
এই সময় তিনি
সোহরাব হোসেনের
কাছে গান শেখা শুরু করেন। পরবর্তী টানা তিন বছর তিনি তাঁর কাছে গান শিখেছিলেন। তিনি
পর পর সাতবার রেডিওতে কণ্ঠপরীক্ষা দিয়ে অকৃতকার্য হন। তবে সে সময়ের বেতার নাটকে
অভিনয় করে খ্যাতি তিনি বেশ সুনাম অর্জন করেছিলেন। সে সময় তিনি মাসে দুইবার নাটকে অভিনয়ের
জন্য বেতার থেকে ডাক পেতেন।
১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন ইডনে কলেজ থেকে।
১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের
শিক্ষা জীবনের শুরুতেই
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হিসেবে
ভাষা আন্দোলনের সাথে যুক্ত হয়ে পড়েন।
২২ ফেব্রুয়ারি
তিনি তাঁর বিকেলে মাকে নিয়ে অভয় দাস লেনের এক বাসাতে
যান। উদ্দেশ্য ছিল- মহিলাদের প্রতিবাদ সভায় যোগ দেওয়া।
সভায় গিয়ে দেখেন কবি সুফিয়া কামাল, বেগম দৌলতুন্নেসা, নূরজাহান মুরশিদ প্রমুখ উপস্থিত। কিন্তু সেদিন সে পরিস্থিতিতে কেউ সভার সভাপতি হতে চাননি। শেষ পর্যন্ত সন্জীদা
খাতুনের মা সাজেদা খাতুনকে সভাপতির আসনে বসিয়েছিলেন।
এই সভায় তিনি সম-সমাসায়িক পরিস্থিতির উপর বক্তৃতা করেন।
এই সময় তিনি রবীন্দ্রনাথের শাপমোপচন গীতি আলেখ্য মঞ্চস্থ করার
জন্য হুসনা বানু'র কাছে গান শেখেন। এই গীতি আলেখ্যের কিছু গান তিনি আগে থেকেই
জানতেন। কয়েকটি গান হুসনা বানু শিখিয়েছিলেন, বাকি গানগুলো হুসনা বানুর সহায়তায় তুলেছিলেন স্বরলিপি থেকে।
এটা ছিল তাঁর প্রথম প্রথম স্বরলিপি থেকে গান শেখার উদ্যোগ। এই সময় তপতী নাটকে তিনি পুরুষের
বেশে রাজার সখা দেবদত্তের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। এছাড়া শরৎচন্দ্রে উপন্যাস
দেনাপাওনা নাট্যরূপে চাকরের ভূমিকায় অভিনয় করেন তিনি।
১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দ তিনি
বাংলাদেশ বেতারে রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত
হন।
১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে সম্মানসহ স্নাতক-সহ ডিগ্রি লাভ করেন।
তিনি 'নজরুল স্বরণপদক' লাভ করেছিলেন। এরপর তিনি ভারতের
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে ভর্তি হন।
সেখানে তাঁর স্থানীয় অভিভাবক ছিলেন অন্নদা শঙ্কর রায়।
১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে ভারতের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।
শান্তিনিকেতন ফিরে আসার পর, তিনি জানতে পারলেন তাঁর পিতা মাতা তাঁর
বিবাহের সম্বন্ধ করে রেখেছেন। কিন্তু এই বিবাহের আগেই রাজনৈতিক কারণে মনোনীত
পাত্রের জেল হয়। এই কারণে তাঁর মা এই বিবাহ বাতিল করে দেন। এই সময় ওয়াহিদুল হকের
মায়ের অনুরোধে তাঁদের বাসায় যাওয়া আসা শুরু হয়। সেই থেকে ধীরে ধীরে উভয়ের মধ্য
প্রণয়ের সৃষ্টি হয়। এই সম্পর্কের বিষয়ে সন্জীদা খাতুনের পরিবারের কিছুটা
অনীহা ছিল।
১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দের এক দিনে তিনি পিতা মাতার
অনুরোধ উপেক্ষা করে ওয়াহিদুল হকের বাসায় চলে আসেন। এবং সেদিনই তাঁদের বিবাহ হয়।
ঘটনাটা ঘটেছিল ওয়াহিদুল হকের বিএ পরীক্ষার আগের দিন।
এই সময় ওয়াহিদুল হক মর্নিং নিউজ পত্রিকায় ৮০ টাকা বেতনে চাকরি করতেন। সন্জীদা
খাতুনের তখন
রোজগার বলতে ছিল রেডিওতে গান গাওয়ার সামান্য সম্মানী।
১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে
ইডেন কলেজে 'বাংলা ভাষা ও সাহিত্য' বিষয়ে অধ্যপনা শুরু
করেন। এই বছরেই তাঁদের প্রথম কন্যা সন্তান
অপালা ফরহদ নবেদের জন্ম
হয়। ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দে জন্ম হয়, দ্বিতীয় সন্তান- পার্থ তানভির নবেদ-এর।
১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দের দিকে এঁরা বকসি বাজারের একটি বাসায় উঠে আসেন। সেখান থেকে এঁরা
৩-এর ই আজিমপুর সরকারি বাসায় চলে আসেন। ১৯৬০
খ্রিষ্টাব্দে এই বাসায় জন্মগ্রহণ করেন রুচিরা তাবাস্সুম নভেদ্।
১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে পালিত রবীন্দ্র-জন্মশতবার্ষিকীর
আয়োজকদের মধ্যে তিনি ছিলেন। রবীন্দ্র-জন্মশতবর্ষ অনুষ্ঠান পালনের পরপরই সংগঠক ও শিল্পীরা সবাই মিলে জয়দেবপুরে গিয়েছিলেন আনন্দ-উৎসব করতে। সেখানেই বিকেলের আসরে মোখলেসুর রহমান (সিধু মিয়া) প্রস্তাব করলেন, সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। সবাই একমত হলে নতুন সংগঠনের প্রস্তাব গৃহীত হলো। সুফিয়া কামাল সভাপতি ও ফরিদা হাসান সাধারণ সম্পাদক। কমিটিতে আরও ছিলেন মোখলেসুর রহমান, সায়েদুল হাসান, শামসুন্নাহার রহমান,ওয়াহিদুল হক, আহমেদুর রহমান, দেবদাস চক্রবর্তী, সাইফুদ্দিন আহমেদ মানিক প্রমুখ। কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সন্জীদা খাতুনের নাম প্রস্তাব হলেও তিনি কমিটিতে থাকেন নি।
কারণ তিনি তখন সরকারি কলেজে চাকরি করতেন। নবগঠিত কমিটির দ্বিতীয় বৈঠকেই সংগঠনের নাম ঠিক হয়েছিল
'ছায়ানট'।
ছায়ানট সঙ্গীত বিদ্যায়তন করার প্রথম প্রস্তাব রেখেছেলেন
ওয়াহিদুল হক। সে
সময়ে এই প্রস্তাবে অনেকেই অনীহা প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু ওয়াহিদুল হক সদস্যদের
মাসিক চাঁদা দেওয়ার প্রস্তাব রেখে- বলেছিলেন 'কমিটি মেম্বাররা মাসে মাসে চাঁদা দেব।
আমি আর মিনু মিলে দেবো সত্তর টাকা। আপনার কে কত দেবেন? তখন মুখ খুলে কেউ বললেন পনেরো,
কেউ দশ, কেউ পঁচিশ- এইরকম"।
১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম
বাংলা একাডেমি'র (বর্ধমান
হাউস ) বারান্দায় সঙ্গীত শেখার ক্লাস শুরু হয়। এই সময় রবীন্দ্রসঙ্গীত শেখাতেন
সনজীদা খাতুন ও ফরিদা মালিক, নজরুল সঙ্গীত শেখাতেন
সোহরাব হোসেন, তবলা
শেখাতেন বজলুল করিম, বেহালা ও সেতার শেখাতেন মতি মিয়া। এই
সময় পদোন্নতি দিয়ে রাজশাহী কলেজে বদলি করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই সময় বাংলা
একাডেমীর বাংলা অভিধানের জন্য সহ-সম্পাদক পদের জন্য বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল। এই পদে
মনোনীত হয়ে তিনি যোগ দিয়েছিলেন সরকারী কলেজের শিক্ষকতার পদ থেকে লিয়েন (ছুটি) নিয়ে।
এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ছায়ানট সঙ্গীত বিদ্যায়তনের কার্যক্রম চালানোর জন্য।
উল্লেখ্য, এই সময় বাংলা একাডেমীর পরিচালক (প্রধান নির্বাহী) হিসেবে ছিলেন সৈয়দ আলী
আহসান। তিনি সন্জীদা খাতুনের শিক্ষক ছিলেন। তাই এখানে কাজ করতে তাঁর বিশেষ
অসুবিধা হয় নি।
সরকারি চাপে ছায়ানটের সঙ্গীত বিদ্যায়তন সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল ইংলিশ প্রিপারেটি
স্কুলে। তিন বছর পর নানা অভিযোগ তুলে স্কুল ছেড়ে দেওয়ার নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। এই সময়
ওয়াহিদুল হক প্রেসের ব্যবসা করবেন বলে- মালিবাগে একটি বাসা ভাড়া করেছিলেন। ইংলিশ
প্রিপারেটি স্কুল থেকে ছায়ানট সঙ্গীত বিদ্যায়তন চলে এসেছিল এই বাড়িতে। ওয়াহিদুল
হকের ব্যবসায়ী অংশীদার অমল প্রেস ব্যবসায় রাজী না হওয়ায়, তাঁকে লোকসান দিয়ে প্রেসের
সামগ্রী বিক্রয় করতে হয়েছিল। এই সময় দুই তিন মাসের বাসা ভাড়া ও কর্মচারিদের বেতন না
দেয়ার কারণে স্কুল বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। এরপর ছায়ানট সঙ্গীত বিদ্যায়তন
স্থানান্তরিত হয় আজিমপুর অগ্রণী বিদ্যালয়ে। এখানে এই স্কুল নিয়ে নানা গুঞ্জন শুরু
হলে- সঙ্গীত বিদ্যায়তন স্থানান্তরিত হয় কলাবাগানের লেকসার্কাস স্কুলে।
br>
১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি
বাংলাদেশ টেলিভিশনে রবীন্দ্রসঙ্গীত
শিল্পী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। ১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দে সৈয়দ
আলী আহসান বাংলা একাডেমীর দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্বাদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন।
এরপর বাংলা একাডেমির ডিরেক্টর পদে আসেন ডঃ দীন মোহম্মদ। তাঁর দুর্ব্যহারের কারণে-
সন্জিদা ইডেন কলেজে পুনারয় ফিরে আসেন। ইডেনে যোগদান করার পর, ছায়ানটে গান শেখানো,
বাঙালি সংস্কৃতির কথা বলা, রবীন্দ্র-প্রিতি ইত্যাদির জন্য তাঁকে নানাভাবে নাজেহাল
করা শুরু হয়। অবশষে তাঁকে রংপুর কারমাইকেল কলেজে বদলি করা হয়। সনজীদা ওই কলেজে
যাগদান না করার কৌশল হিসেবে ডাক্তারি সার্টিফিকেট দেখিয়ে ছয় মাসের ছুটি নেন। ছয় মাস
চেষ্টার পরও কারমাইকেল কলেজে বদলি বাতিল করা সম্ভব না হওয়ায়, তিনি আরও ছয়
মাসের অসুস্থাতা দেখিয়ে ছুটি নেন। এরপর চিফ সেক্রেটারির কড়া আদেশে তাঁকে রংপুর
যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতেই হয়।
১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দে ছায়ানট থেকে প্রকাশিত হয় 'স্মরণ' নামক
পুস্তিকা। এই গ্রন্থের সম্পাদনা ও গ্রন্থনায় ছিলেন সনজীদা খাতুন ও
আবদুল গাফফার
চৌধুরী।
১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে নজরুলগীতির একটি এক্সটেন্ডেড রেকর্ড প্রকাশ করেছিল- ঢাকা রেকর্ডস
কোম্পানি।
ইতিমধ্যে ওয়াহিদুল হক ফ্লোরার আহমেদের প্রেমে পড়েন। ফলো সন্জীদা খাতুনের মধ্যে তিক্তার সৃষ্টি হয়।
তাই তাঁর ঢাকায় থাকার উৎসাহ কমে গিয়েছিল।
১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কারমাইকেল কলেজে যোগদান
করেন। রংপুরে থেকেই তিনি ছায়ানটের কার্যাক্রমের খসড়া করে ওয়াহিদুল হককে
পাঠাতেন। প্রথম দিকে তিনি রংপুর বেতারে গান গাইতেন। পরে কারমাকেল কলেজ থেকে রংপুর
রেডিও স্টেশনের দূরত্ব ছিল প্রায় ছয় মাইল। এই কারণে তিনি বেতারে গান গাওয়া ছেড়ে দেন
ছেড়ে দেন। নানা প্রতিকূলতার মধ্যে তাঁকে কারমাইকেল কলেজে শিক্ষকতা করতে হয়েছিল।
১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে ইএমআই গ্রুপ- গ্রামোফোন কোম্পানি রবীন্দ্রসঙ্গীতের দুটি গানের
রেকর্ড প্রকাশ করে। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে ভারত থেকে এর পুনর্মুদ্রণ করে
এইচএমভি ।
আসা যাওয়ার পথের
কাছে থেকে দূর রচিল
১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১১ মার্চ তিনি রংপুর থেকে ঢাকায় আসেন। ২৫শে মার্চ ছায়ানট ঢাকা
শহিদ মিনারে অনুষ্ঠান করে। ২৭শে মার্চ তিনি ওয়াহিদুল হক ও সন্তানদের নিয়ে ঢাকা ত্যাগ
করেন।২৮ বা ২৯ তারিখে তিনি আগরতলা পৌঁছান। পরে সেখান থেকে রেলপথে কলকাতা
পৌঁছান। সেখানে প্রথম উঠেছিলেন কর্নফিল্ড রোডের প্রবোধ সেনের কন্যার বাসায়। তারপর
সেখান থেকে আশ্রয় নেন বিনয়েন্দ্রমোহন চৌধুরীর বাড়ি। পরে বিশ্বভারতীর কোষাধ্যক্ষ
জাস্টিস মাসুদের অনুরোধে বাড়িতে ওঠেন। এখানে তাঁর সাথে যোগাযোগ হয় কলকাতার বাংলাদেশ
সহায়ক সমিতির সদস্যদের সাথে। মুক্তি যুদ্ধের জন্য সহায়তা করার উদ্দেশ্যে গানের
অনুষ্ঠান করার সিদ্ধান হয়। এই উদ্দেশ্যে তিনি অন্যান্যদের সাথে করে ১৪৪ লেনিন সরণিতে
গানের মহড়া শুরু হয়েছিল। এখানে আবন্দোলনের কালানুক্রমে তৈরি হয়েছিল গৌতি-আলেখ্য 'রূপান্তরের
গান'। প্রথম দিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী গান গেয়েছিলেন- 'আনন্দধ্বনি জাগাও'।
১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের জুন মাসে রবীন্দ্রসদনে দুই দিন ব্যাপী অনুষ্ঠান হয়েছিল। ইতিমধ্যে
ওয়াহিদুল হক, জহির রায়হান, হাসনা ইমাম প্রমুখ 'লিবারেশন ফ্রন্ট' নামক একটি সংগঠন
তৈরি করেছিলেন। এঁদের প্রচেষ্টায় গড়ে উঠেছিল মুক্তি সংগ্রামী শিল্পী সংস্থা'। এই
সংগঠনের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিল সন্জীদা খাতুন, আর সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন
মাহমুদউর রহমান বেণু।
এই সময় জাষ্টিস মাসুদের সহায়তায় তিনি শান্তিনিকেতনের রিসার্স ফেলোশিপ হন। ১৮ জুন
তিনি শান্তিনিকেতনে কাজে যোগদান করেন।
১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে স্বাধীনতার পরে তিনি ছায়ানট সঙ্গীত বিদ্যায়তনের
সাম্মানিক অধ্যক্ষের পদ গ্রহণ করেন।
এই বছরেই ওয়াহিদুল হকের সাথে
তাঁর বিবাহ-বিচ্ছেদ হয়।
১৯৭৫
খ্রিষ্টাব্দের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধ হত্যার পর, তিন শান্তিনিকেতনে যান। ১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দে ভারতের বিশ্বভারতী
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
১৯৮১ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত 'জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মেলন
পরিষদ গঠনে অন্যতম সংগঠক ছিলেন। বিভিন্ন সময়ে এই পরিষদের তিনি সাধারণ সম্পাদক,
নির্বাহী সভাপতি ও সভাপতির পদ অলঙ্কৃত করেছেন। এই বছরে রবীন্দ্রসঙ্গীতের দীর্ঘবাদন
রেকর্ড 'অতল জলের আহ্বান' প্রকাশিত হয়েছিল।
উল্লেখ্য, ১৯৮৩ থেকে ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত গবেষণা কর্মের জন্য
তিনি ভারতের শান্তিনিকেতন ছিলেন। তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল- 'ধ্বনি থেকে কবিতা'।
এই সময় ছায়ানটের তৎকালীন
অধ্যক্ষ সনজীদা খাতুনের অনুপস্থিতে, বিদ্যায়তনের
নজরুলসঙ্গীত বিভাগের শিক্ষক
অঞ্জলি রায় ভারপ্রাপ্ত
অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দে
ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রফেসর হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।
১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি অধ্যাপক হিসেবে পুনর্নিয়োগ লাভ করেন।
১৯৯০-২০০০ খ্রিষ্টাব্দের ভিতরে বেঙ্গল ফাউন্ডেশান প্রকাশ করেছিল-
গানের ক্যাসেড 'আবার আসিব ফিরে' এবং সিডি'করুণাধারায় এসো'।
২০০১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ছায়ানট-এর সভাপতি নির্বাচিত হন। এই পদে তিনি আমৃত্যু ছিলেন।
২০০৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনটি শ্রেণি নিয়ে 'নালন্দা বিদ্যালয়্' শুরু হয়। এই বিদ্যালায়ের
তিনি প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন।
২০০৩ খ্রিষ্টাব্দের শেষ দিকে 'কেন্দ্রীয় ব্রতচারী নৃত্যোৎসব পরিষদ' গঠন করে বড় মাপের প্রশিক্ষণ শিবির করবার চেষ্টা শুরু
হয়। এই সময় ভারতের 'বাংলার ব্রতচারী সমিতি' থেকে ব্রতচারী সখা ছাড়া আরো কিছু বই
আসে। সে সময়ে ঐ সমিতির সভাপতি
কমলেশ চ্যাটার্জি 'বেঙ্গল অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন'-এর কাজে ঢাকায় এসেছিলেন।
তাঁর সাথে ঢাকার ব্রতচারীর অধিকর্তাদের সঙ্গে আলাপ হয়। এই সময়
তিনি 'নালন্দা'র সভাপতি পদ অলঙ্কৃত করেন।
'কেন্দ্রীয় ব্রতচারী নৃত্যোৎসব পরিষদ' গঠিত হলে তিনি এই নৃত্যোৎসব পরিষদের সভাপতি
নির্বাচিত হন। তাঁর মাধ্যমে কলকাতা থেকে প্রশিক্ষক
পাঠানোর বিষয়ে কমলেশ চ্যাটার্জির সঙ্গে কথা হয়। পরে তিনি
২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে সাহিত্যের বাচিক চর্চা, প্রচার ও প্রসার প্রতিষ্ঠান কণ্ঠশীলন-এর
সভাপতি নির্বাচিত হন। এবং আমৃত্যু এই পদে তিনি ছিলেন।
২০১৭ থেকে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের 'ড.
আহমদ শরীফ চেয়ার, পদে ছিলেন।
২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ মার্চ, ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ৩টা ১০ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
সম্মাননা
- ১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দে
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের 'রবীন্দ্রস্মৃতি পুরস্কার' লাভ করেন। এই বছরের
কলকাতার টেগোর রিসার্চ ইনস্টিটিউট তাঁকে
'রবীন্দ্র তত্ত্বাচার্য'
উপাধি প্রদান করে।
- ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দে
পান বাংলাদেশ সরকারের 'একুশে পদক'। এই বছরে তিনি বেগম জেবুন্নেছা ও কাজী
মাহবুবউল্লাহ জনকল্যাণ ট্রাস্টের স্বরণপদক ও সম্মাননা লাভ করেন।
- ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর গাওয়া রবীন্দ্রনাথের গানের
সিডি 'ছুটির্ বাঁশি বাজল্' প্রকাশ করেছিল বেঙ্গল ফাউন্ডেশন।
- ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দে
বাংলা একাডেমি থেকে 'সা'দত আলী আখন্দ পুরস্কার' লাভ করেন।
- ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে
'বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার' লাভ
করেন।
- ১৯৯৯-২০০০ খ্রিষ্টাব্দের ভিতরে
- ২০০০ খ্রিষ্টাব্দে
'অনন্যা'
পুরস্কার লাভ করেন। এই বছরে কলকাতার কলাকুঞ্জে গাওয়া রবীন্দ্রসঙ্গীতের সংকলন 'বাদলের গান'
প্রকাশ করেছিল ভারতের এবি মিউসিক।
- ক্যাসেট
প্রকাশ করেছিল ভারতের রেকর্ড কোম্পানি সারেগামা।
- ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে
বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সম্মানজনক ফেলোশিপ হন।
- ২০০৮ বিশ্বভারতী
বিশ্বিদ্যালয় তাঁকে
দেশিকোত্তম (সম্মান সূচক ডিলিট উপাধি)
প্রাদনের সিদ্ধান্ত নিলেও পুরস্কারটি পেয়েছিলেন
২০১২ খ্রিষ্টাব্দে। এ প্রসঙ্গে সন্জিদা খাতুন তাঁর 'শান্তিনিকেতনের দিনগুলি' গ্রন্থের
তেত্রিশ অধ্যায়ে লিখেছেন-
'বাংলাদেশের প্রথম
রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী বিশ্বভারতীর দেশিকোত্তম উপাধিতে ভূষিত
হয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এই সম্মান লাভ করেছিলেন। ২০১২ সালে
বিশ্বভারতীর তৎকালীন উপচার্য টেলিফোনে আমাকে জানালেন যে, কেন্দ্রীয় সরকার ২০০৮
সালের দেশিকোত্তম উপাধি আমাকে দিতে চেয়েছিলেন। ২০০৭ সাল থেকে পাঁচ বছর
বিশ্বভারতীর কোনো সমাবর্তন হয়নি বলে ২০০৮ সালে আমিও ওই সম্মাননা পাইনি।'
- ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে
'বিজয় দিবস পদক' লাভ করেন।
- ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে বাংলা
একাডেমীর রবীন্দ্র-পুরস্কার লাভ করেন।
- ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর গাওয়া তিনটি সিডি প্রকাশ করে ছায়ানট। উল্লেখ্য, কলকাতার শামিল বিদ্যালয়ের আর্থিক সহায়তার জন্য আয়োজিত রবীন্দ্রসঙ্গীতের প্রশিক্ষণ এবং গান নিয়ে আলাপ ধারণ করা
হয়েছিল। এই বছরে প্রকাশিত হয়েছিল- ২০০২ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতার একটি ঘরোয়া অনুষ্ঠান থেকে ধারণ করা
তাঁর গাওয়া রবীন্দ্রসঙ্গীত। এ্ছাড়া ২০০২ খ্রিষ্টাব্দে ভারতের স্টুডিওতে ধারণ করা রবীন্দ্রসঙ্গীতের সংকলন রবীন্দ্রসঙ্গীত।
এটি প্রকাশ করেছিল ভারতের বিহান মিউজিক।
এছাড়া প্রকাশিত হয়েছিল- বেঙ্গল ফাউন্ডেশন, থেকে তিনটি রবীন্দ্রসঙ্গীতের ক্যাসেট
ও সিডি।
- ক্যাসেট আবার আসি ফিরে,
- সিডি করুণাধারায় এসো,
- ছুটির বাঁশি বাজল
- ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে
'নজরুল মানস' প্রবন্ধ গ্রন্থের জন্য ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করে।
- ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে ভারত সরকার তাকে পদ্মশ্রী পুরস্কারে ভূষিত করে।
সন্জিদা খাতুনের
রচিত গ্রন্থাবলি
- কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত (১৯৫৪), ভারত, পরিবেশক-ভারতী লাইব্রেরী; গ্রন্থের দ্বিতীয় সংস্করণ সত্যেন্দ্র কাব্য-পরিচয় (১৯৬৯), বাংলাদেশ, মুক্তধারা; গ্রন্থের তৃতীয় সংস্করণ (১৯৯৭), বাংলাদেশ, সেবা প্রকাশনী
- রবীন্দ্রসঙ্গীতের ভাবসম্পদ (১৯৮১), বাংলাদেশ, মুক্তধারা; গ্রন্থের দ্বিতীয় প্রকাশন, অধরা মাধুরীর ছন্দোবন্ধন (১৯৮৯), ভারত, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার; গ্রন্থের তৃতীয় প্রকাশন, রবীন্দ্রসঙ্গীতের ভাবসম্পদ (১৯৯৯), বাংলাদেশ, অবসর
- ধ্বনি থেকে কবিতা (১৯৮৮), ভারত, গবেষণা প্রকাশন বিভাগ, বিশ্বভারতী; গ্রন্থের দ্বিতীয় সংস্করণ (২০০১); গ্রন্থের তৃতীয় প্রকাশন (২০০৯), বাংলাদেশ, নবযুগ প্রকাশনী
- অতীত দিনের স্মৃতি (১৯৯৩), বাংলাদেশ, সেবা প্রকাশনী; গ্রন্থের দ্বিতীয় প্রকাশন (২০০৮) বাংলাদেশ, নবযুগ প্রকাশনী
- তোমারি ঝরণাতলার নির্জনে (১৯৯৪), বাংলাদেশ, আগামী প্রকাশনী
- রবীন্দ্রনাথ: বিবিধ সন্ধান (১৯৯৪), বাংলাদেশ, বাংলা একাডেমী
- কাজী মোতাহার হোসেন (১৯৯৭), বাংলাদেশ, বাংলাদেশ শিশু একাডেমী
- রবীন্দ্রনাথের হাতে হাত রেখে (২০০০), বাংলাদেশ, সাহিত্যপ্রকাশ
- বাংলাদেশের সংস্কৃতির চড়াই উত্রাই (২০০০), বাংলাদেশ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
- ধ্বনির কথা আবৃত্তির কথা (২০০০), বাংলাদেশ, সাহিত্যপ্রকাশ
- সংস্কৃতির বৃক্ষছায়ায় (২০০৩), বাংলাদেশ, প্যাপিরাস; পরিবর্ধিত সংস্করণ (২০১৭), বাংলাদেশ, নবযুগ প্রকাশনী
- স্বাধীনতার অভিযাত্রা (২০০৪), বাংলাদেশ, নবযুগ প্রকাশনী
- সাহিত্যকথা সংস্কৃতিকথা (২০০৪) বাংলাদেশ, জাতীয় গ্রন্থ প্রকাশন
- আমার সোনার বাংলা (২০০৫), ভারতীয় সংস্করণ, দোয়েল প্রকাশনী; জননী জন্মভূমি নামে প্রকাশন (২০০৫), বাংলাদেশ, নবযুগ প্রকাশনী
- আমার সোনার বাংলার্ জননী্ জন্মভূমি শিরোনামে বাংলাদেশ্ সংস্করণ (২০০৫) নবযুগ প্রকাশনী
- রবীন্দ্রনাথ এবং রবীন্দ্রনাথ (২০০৫), বাংলাদেশ, অন্যপ্রকাশ
- রবীন্দ্রনাথ : তাঁর আকাশ-ভরা কোলে (২০০৭) বাংলাদেশ, নবযুগ প্রকাশনী
- প্রবন্ধ সংগ্রহ (২০১০), বাংলাদেশ, নবযুগ প্রকাশনী
- রবীন্দ্রসঙ্গীত : মননে লালনে, (২০১১) বাংলাদেশ, নবযুগ প্রকাশনী
- সহজ কঠিন দ্বন্দ্বে ছন্দে (২০১৩), বাংলাদেশ, নবযুগ প্রকাশনী
- রবীন্দ্রনাথ ও অন্যান্য (২০১৩), ভারত, প্রতিভাস
- তাঁর গান আমার কাছে (২০১৩), ভারত, মনফকিরা
- প্রভাতবেলার মেঘ ও রৌদ্র (২০১৫), বাংলাদেশ, নবযুগ প্রকাশনী (অতীত দিনের স্মৃতির পরিবর্ধিত সংস্করণ)
- রবীন্দ্র বিশ্বাসে মানব-অভ্যুদয় (২০১৬), বাংলাদেশ, নবযুগ প্রকাশনী
- স্বদেশ সমাজ সংস্কৃতি (২০১৭), বাংলাদেশ, নবযুগ প্রকাশনী
- স্মৃতিপটে গুণীজন (২০১৭), বাংলাদেশ, নবযুগ প্রকাশনী
- বাংলাদেশের সংস্কৃতির চড়াই উতরাই (২০১৮), ভারত, মনফকিরা
- অগ্রজজনের সৃষ্টিবীক্ষা (২০১৮), বাংলাদেশ, নবযুগ প্রকাশনী
- নজরুল-মানস (২০১৮), বাংলাদেশ, নবযুগ প্রকাশনী
- রবীন্দ্র কবিতার গহনে (২০১৯), বাংলাদেশ, শোভা প্রকাশ
- শান্তিনিকেতনের দিনগুলি (২০১৯), বাংলাদেশ, প্রথমা প্রকাশন
- শ্রেষ্ঠ প্রবন্ধ (২০২০), বাংলাদেশ, কথাপ্রকাশ
- সাংস্কৃতিক মুক্তিসংগ্রাম (২০২১), বাংলাদেশ, প্রথমা প্রকাশন
- জীবনবৃত্ত (২০২১), বাংলাদেশ, কথাপ্রকাশ
- বালক রবির কীর্তিকাণ্ড (২০২১), বাংলাদেশ, চারুলিপি প্রকাশন
- কিশোর সমগ্র (২০২১), বাংলাদেশ, চারুলিপি প্রকাশন
- টুকেরো কথার ঝাঁপি (২০২১), বাংলাদেশ, নবযুগ প্রকাশনী
শান্তিনিকেতনের দিনগুলো (প্রথমা, প্রকাশন,অক্টোবর ১৯১৯)
- আমার রবীন্দ্রনাথ ১ম ও ২য় খণ্ড (২০২৩), বাংলাদেশ ঐতিহ্য
- রবীন্দ্রনাথ: সীমা ছাড়িয়ে অসীমে (২০২৩), ভারতম রাবণ
সম্পাদনা
- স্মরণ, আব্দুল গাফফার চৌধুরীর সঙ্গে (১৯৬৬), ছায়ানট
- মুক্ত করো হে বন্ধ (১৯৭৫), ছায়ানট ; দ্বিতীয় সংস্করণ (২০০৮)
- গল্প সংগ্রহ। যৌথ সম্পাদনা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
- রচনাসমগ্র, যোবায়দা মির্জা (২০০৪), নবযুগ
- জগতে আনন্দযজ্ঞে ওয়াহিদুল হক (২০০৭), ছায়ানট
- উদ্গম (নালন্দা বিদ্যালয়ের শিশুদের লেখার সংকলনের সাময়িকী), ২০০৭, ছায়ানট
- সার্ধশততম জন্মবর্ষে রবীন্দ্রনাথ (২০১১), ছায়ানট
- বিস্ময় আমি বিশ্ব-বিধাত্রীর, কাজী নজরুল ইসলামের সৃষ্টি বীক্ষা নিয়ে প্রবন্ধ সংকলন, ২০১৩, ছায়ানট
- অচিনপাখির কলগীতি, সনাতন বাংলার গীতি-কবিদের জীবন ও কর্ম নিয়ে প্রবন্ধ সংকলন, ২০১৫, ছায়ানট
- প্রবন্ধ সংগ্রহ, ওয়াহিদুল হকের প্রবন্ধ সংকলন, ২০০৮, ছায়ানট
- গীতবিতান : তথ্য ও ভাবসন্ধান (২০১১), ছায়ানট
- বাংলাদেশের হৃদয় হতে, সাহিত্য-সংস্কৃতি ত্রৈমাসিক পত্রিকা, ২০০৮ থেকে ২০১৫, ছায়ানট
- গীতবিতান: তথ্য ও ভাবসন্ধান, নতুন কলেবরে ১০১টি গান নিয়ে পরিবর্ধিত সংস্করণ (২০১৯), ছায়ানট
সার্বিক তত্ত্বাবধায়ক:
- নজরুলসঙ্গীত তথ্য, ভাব ও সুরসন্ধান। ছায়ানট। মে ২০২৪
সূত্র:
- অতীত দিনের স্মৃতি। সন্জীদা খাতুন। নবযুগ প্রকাশনী।
ডিসেম্বর ২০০৮
- সহজ কঠিন দ্বন্দ্বে ছন্দে , বাংলাদেশ, নবযুগ প্রকাশনী।
মে ২০১৩।
- স্থির প্রত্যয় যাত্রা। ছায়ানট। দ্বিতীয় প্রকাশ, ২০১১
-