শ্রীকৃষ্ণকীর্তন
জন্মখণ্ড তাম্বুলখণ্ড দানখণ্ড নৌকাখণ্ড ভারখণ্ড ছত্রখণ্ড বৃন্দাবনখণ্ড কালিয়দমনখণ্ড যমুনাখণ্ড বাণখণ্ড বংশীখণ্ড রাধাবিরহ খণ্ড  


                 

বংশী খণ্ড
 

                    (১)

পাহাড়ীআরাগঃ একতালী দণ্ডকঃ
 

অনঙ্গসঙ্গরে রাধা ভঙ্গং প্রাপ্য কুরঙ্গদৃক্

অলসাঙ্গলতা রঙ্গাৎ জরতীসহিতা যযৌ

 

বড়ায়ি লইআঁ রাহী গেলী সেই থানে

সখীসবে বুইল রাধা লড়িঊ সিনানে

ষোল শত গোপী গেলা যমুনার ঘাটে

তা দেখিআঁ কাহ্নাঞিঁ পাতিল নাটে

খনে করতাল খনে বাজাএ মৃদঙ্গ

তা দেখি রাধিকার সখিগণে রঙ্গ

আর যত বাদ্যগণ আছের কাহ্নাঞিঁ

পতিদিনে নানা ছাণ্দে বাএ সেহি ঠাই

তা দেখিআঁ না ভুলিলী আইহনের দাসী

সৃজিল কাহ্নাঞিঁ তবেঁ মোহন বাঁশী

সাত গুটি বিদ্ধ তাত করি আনুপাম

সুবণ্ণের সাম্বী হিরার বান্ধিল কাম

হরিষে পুরিআঁ কাহ্নাঞিঁ তাহাত ওঁকার

বাঁশীর শবদেঁ পারে জগ মোহিবার

যমুনার ঘাটে রাধা বাঁশীনাদ সুণী

জল লআঁ ঘর আয়িলী আইহনের রাণী

বৃন্দাবনে বাঁশী বাএ নান্দের নন্দন

গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীগণ

 

              (২)

কেদাররাগঃ রূপকং

 

নিপীয় বংশনিনদং রাধা কংসভয়াতুরা

বেদিতুং বাদকন্তস্য জগাদ জরতীমিদং

 

কে না বাঁশী বাএ বড়ায়ি কালিনী নইকুলে

কে না বাঁশী বাএ বড়ায়ি এ গোঠ গোকুলে

আকুল শরীর মোর বেআকুল মন

বাঁশীর শবদেঁ মো আঊলাইলোঁ রান্ধন

কে না বাঁশী বাএ বড়ায়ি সে না কোন জনা

দাসী হআঁ তার পাএ নিশিবোঁ আপনা ধ্রু

কে না বাঁশী বাএ বড়ায়ি চিত্তের হরিষে

তার পাএ বড়য়ি মোঁ কৈলোঁ কোণ দোষে

আঝর ঝরএ মোর নয়নের পাণী

বাঁশীর শবদেঁ বড়ায়ি হারায়িলোঁ পরাণী

আকুল করিতেঁ কিবা আহ্মার মন

বাজাএ সুসর বাঁশী নান্দের নন্দন

পাখি নহোঁ তার ঠাই ঊড়ী পড়ি জাওঁ

মেদনী বিদার দেউ পসিআঁ লুকাওঁ

বন পোড়ে আগ বড়ায়ি জগজনে জাণী

মোর মন পোড়ে যেহ্ন কুম্ভারের পণী

আন্তর সুখাএ মোর কাহ্ন আভিলাসে

বাসলী শিরে বন্দী গাইল চণ্ডীদাসে

 

           (৩)

শ্রীরাগঃক্রীড়া

 

নিশম্য কৃষ্ণবচনং স্মরজ্বরভরাতুরা

যমুনাতীরমাগত্য রাধ হ জরতীমিদম্

 

সুসর বাঁশীর           নাদ সুণী আইলোঁ

             মো যমুনাতীরে

শোভন কলসী         করে ধরিআঁ

             পারিলোঁ যমুনানীরে

বড়ায়ি ল

বাঁশীর নাদ            না শুণী এবেঁ

             কাহ্ন গেলা কিবা দূরে

প্রাণ বেআকুল         ভৈল এবেঁ

             কিমনে জায়িবোঁ ঘরে

বড়ায়ি ল

             তোহ্মে কি দেখিলেঁ জায়িতেঁ পথে

কাল কাহ্নাঞিঁ        চাঁচর কেশে

             কুসুম শোভিত মাথে ধ্রু

আহোনিশি মো        আন না জাণো

             এত দুখ কহিবোঁ কাএ

কাহ্নের ভাবেঁ         চিত্ত বেআকুল

             লাজে মোঁ না কান্দো রাএ

যমুনাতীরে            কদমের তলে

             কাহ্ন মোরে দিলে কোলে

তাহা সুঁ অরিআঁ       বিকলী ভৈলোঁ

             কাহ্ন বিরসিল ভোলে

চারি দিগেঁ তরু       পুষ্প মুকুলিল

             বহে বসন্তের বাএ

আম্বডালে বসী        কুয়িলী কুহলে

             লাগে বিষবাণঘাএ

চান্দ সুরুজের         ভেদ না জাণো

             চন্দন শরীর তাএ

কাহ্ন বিণি মোর       এবেঁ এক খন

             এক কুল যুগ ভাএ

বাঁশীর শবদেঁ          প্রাণ হরিআঁ

             কাহ্ন গেলা কোণ দিশে

তা বিণি সকল        আন্তর দহে

             যেন বেআপিল বীষে

এবেঁ আণিআঁ দেহ    নান্দের নন্দন

             পুর ত আহ্মার আশে

বাসলীচরণ            শিরে বন্দিআঁ

             গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে

 

        (৪)

শ্রীরাগঃ যতিঃ

 

এবেঁ বড় নয়নে মো না দেখোঁ সুন্দরী

কথাঁ গেলেঁ পাইব আহ্মে শ্রীকৃষ্ণ হরী

হেনক ঊপায় মোক বোল চন্দ্রাবলী

তবেঁ মো তোহ্মাক আণি দিবোঁ বনমালী

যত কিছু বুয়িলেঁ মোর পরাণনাতিনী

বড় দুখ ঊপজিল মণে তাক সুণী ধ্রু

যমুনা নদীতে মো কেমনে হৈবোঁ পার

ঘড়িআল কুম্ভীর তাহাত অপার

 

শকতিঞঁ পার হয়িলা চন্দ্রাবলী রাণী

তথাঁ বা কেমনে পায়িব দেব চক্রপাণী

সেহি বৃন্দাবন মাহা ঘোর ভয়ঙ্কর

বাঘ ভালুক তাএ বসে বিথর

তাহাত আগত রাধা এড়ায়ি কেমনে

হেনক উপায় তোহ্মে কহ মোর থানে

ভরিল যযুনাত তোহ্মা কৈল পার

তোহ্মা হেতু কান্ধে বহিল দধিভার

তভোঁ তোর ভালমতেঁ না পুরিল আশ

বাসলীচরণ শিরে বন্দী গাইল বড়ু চণ্ডীদাস

 

          (৫)

কোড়ারাগঃ রূপকং

 

আইস ল বড়ায়ি মোর রাখহ পরাণ

সহিতেঁ না পারোঁ মদন পাঁচ বাণ

সরস বসন্ত ঋতু কোকিল রাএ

আধিক বিরহশিখি হৃদএ জলএ

কি বুধি করিবোঁ বড়ায়ি বোলহ এখন

কি বুধি করিলেঁ রহে আহ্মার জীবন ধ্রু

কে বোলে চন্দন চাঁদ আতি সুশীতল

আহ্মার মনত ভাএ যেহেন গরল

নব কিশলয় ভৈল দহন সমান

ঘাঅত উপরে ঘাঅ বাঁশীর সান

নানা তরু লতা বন ঘোর আন্ধকার

বৃন্দাবন চল বড়ায়ি ত্রিভুবনে সার

ধরণ না জাএ বড়ায়ি আহ্মার যৌবন

প্রাণ রাখ আণি দেহ নান্দের নন্দন

আহ্মার বচন শুণ তোহ্মে বড়ি মা

না জাণো কেমন করে আহ্মার গা

বিণি কাহ্নে চঞ্চল আহ্মার জীবন

গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীগণ

 

              (৬)

রামগিরীরাগঃযতিঃ

 

আষাঢ় শ্রাবণ মাসে               মেঘ বরিষে যেহ্ন

             ঝরএ নয়নের পাণী

আল বড়ায়ি

সংপুটে প্রণাম করি               বুইলোঁ সব সখিজনে

             কেহো নান্দে কাহ্নাঞিঁকে আণী

             আল বড়ায়ি চাহা চাহা

             কোণ দিগেঁ মৌহারী বাজে ধ্রু

 

রূপস দেখিএ যথাঁ                নানা ফুল ফল গড়া

             সেই সে কাহ্নাঞিঁর দেশ

নান্দের নন্দন কাহ্ন --- --- ---

             সোঁঅরিতেঁ পাঞ্জর শেষ

কাহ্নাঞিঁ বিহাণে মোর           সকল সংসার ভৈল

             দশ দিগ লাগে মোর শূন

আঞ্চলের সোনা মোর            কে না হরি লআঁ গেল

             কিবা তার কৈলোঁ অগুণ

তোহ্মার আগত                    সত্যেঁ বুয়িলোঁ বড়ায়ি

             তোর বোল না করিবোঁ আনে

আণিআঁ কাহ্নাঞিঁ দেহ           বড়ু চণ্ডীদাস গাএ

             বন্দিআঁ বাসলীচরণে

 

          (৭)

গুজ্জরীরাগঃযতিঃ

 

উত্তম গোআলকুলে তোহ্মার জরম

তোহ্মাকে জুগত নহে এ সব করম

দুচারিণী যার মা তার হেন গতী

সেসি পর পুরুষের বাঞ্ছএ সুরতী

সুণহ নাতিনী তোক কিছু নাহিঁ বুধী

কথাঁ গিআঁ পাইব আহ্মে কাহ্নাঞিঁর সুধী ধ্রু

এ সব কামত যে বা ঊপসন্ন হএ

পাপ বেআপিত সে ধরম করে খএ

আপণা চিহ্নিআঁ থাক আইহনের রাণী

লোকেঁ জণি সুণে তোর এসব কাহিণী

শিশু হয়িতেঁ জাণো তোর মাএর চরীত

তার ঝিঊ হআঁ তোর কেহ্নে হেন চীত

পুরুবে যে কাজ হৈল সে ভৈল গুপতে

এবেঁ তোর মন তাক বেকত করিতেঁ

সুণহ সুন্দরি তোহ্মে আইহনের দাসী

এ সব করমে কেহ্নে ভয় না বাসসী

হেন কাম করিলেঁ নাসিবোঁ তোর পাশে

বাসলী শিরে বন্দী গাইল চণ্ডীদাসে

 

              (৮)

রামগিরীরাগঃরূপকং

 

মো জে সখি সব সঙ্গে করিবোঁ

মাহ্লী মালতী ফুল গাথিবোঁ

দূতা তোক লয়িআঁ কাহ্নের মুখ দেখিবোঁ

খাট পালঙ্কি গঢ়ায়িবোঁ

আল সুবণ্ণে মঢ়ায়িবোঁ

কাহ্নাঞিঁ লইআঁ রাতিঞঁ পোহাইবোঁ

এবেঁ না শুণিআঁ বাঁশীর ধুনী

আল মরিবোঁ জালী আগুনী

কাহ্নের সকল দোষ খণ্ডিবোঁ আপুণী

তোরে মো না এড়িবোঁ দূতী ল

বোলহ কাহ্নেরে রাধাক দেঊ সমতী ল ধ্রু

মো জে সখি সব সঙ্গে করিবোঁ

মাহ্লী মালতী ফুল গাথিবোঁ

দূতা তোক লয়িআঁ কাহ্নের মুখ দেখিবোঁ

মো জে কস্তুরী কপুর খাইবোঁ

কিশলয় শয়ন বিছাইবোঁ

কাহ্ন আলিঙ্গিআঁ সকল দেহ জুড়ায়িবোঁ

তাঁর বাঁশীর শবদ শুণী

পরাণ জাএ মোর গুণী

সুণ তোঁ দূতা আণি দেহ চক্রপাণী

দেবের বর যদি পাওঁ

এখনে তবেঁ পাখি হওঁ

আপণে ঊড়িআঁ কাহ্নের ঠায়ি জাওঁ

সে গোবিন্দ গোপননন্দনে

মোর কুচযুগের চন্দনে

সব সখি লআঁ তার করিবোঁ বন্দনে

আন বড়ায়ি কাহ্ন মোর থানে

সঙ্গে জাইঊ বৃন্দাবনে

গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীগণে

 

          (৯)

ধানুষীরাগঃএকতালী

 

আল রাধা

কিসক মরিতেঁ চাহ তোহ্মে

চাহিআঁ কাহ্নাঞিঁ আণি দিব আহ্মে

বুঝাইআঁ বুলিবোঁ তারে বাণী

যেহ্ন সে আইসে চক্রপাণী

আল রাধা

বৃন্দাবনে কাহ্নাঞিঁ আণিবোঁ

তোর সঙ্গে সুরতী করায়িবোঁ ধ্রু

যত দুখ দেখিলোঁ তোহ্মারে

একেঁ একেঁ কহিবোঁ কাহ্নেরে

আবসি সোঁঅরি তোর নেহে

কাহ্নাঞিঁ আসিব কুঞ্জগেহে

যত কিছু বসে তোর মণে

নিবেদিহ কাহ্নের থানে

তবেঁ তোক না ছাড়িব কাহ্নে

সরূপেঁ বুইলো তোর থানে

হেন বেলে মাঝ বৃন্দাবনে

কাহ্নাঞিঁ বাঁশীত দিল সানে

সুণী রাধা পাইল হরিষে

গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে

 

          (১০)

দেশাগরাগঃ ক্রীড়া লগনীদণ্ডকঃ

 

বংশীনিনাদতরলা তরলাঞ্চললোচনা

জগাদ রুচিরং রাধা ভারতীং জরতীং প্রতি

 

বড়ায়ি

হাথে ভাণ্ড                         মাথে করী চান্দ

         চন্দন চর্চ্চিত গাএ

যমুনার তীরে          কদমের তলে

             কে না বাঁশী বোলাএ

রাধা

পাএ মগর খাড়ু       হাথে বলয়া

             মাথে ঘোড়াচুলা

ধূলাএ ধুসর           নীল কলেবর

             সেই সে নান্দর বালা

তোর সঙ্গে বড়ায়ি    মথুরাক জাইএ

            তোর সঙ্গে নিতি আসী

গোকুলত থাকে       বাছাক রাখে

             কথাঁ পাইলে হেন বাঁশী

রাধা তোঞঁ মুগধী    আবালী গোআলী

             না জাণ কাহ্নের শুধী

তোহোর আন্তরে      চতুর কাহ্নাঞিঁ

             পাতএ আশেষ বুধী

আতি মনোহর         বাজাএ সুসর

             সুণিআঁ পরাণ জাএ

কিরূপ বাঁশী           বোল বড়ায়ি

             কেমণে তাক বাজাএ

বাঁশীর বিন্দত         মুখ সংযোজিআঁ

             সপত সর বাজাএ

নাগর শেখর           নান্দের সুন্দর

             বড়ু চণ্ডীদাস গাএ

 

             (১১)

কোড়ারাগঃ লঘুশেখরঃ

 

এতাং শ্রুত্বা রূপসরোহংসী বংশীকথামথ

জগাদ রাধা মধুরাং ভারতীং জরতীং প্রতি

 

ঘরেত বাহির হইআঁ              নাগর কাহ্নাঞিঁ

             কোণ দিগেঁ সার ণীসারে

বাঁশীর শবদেঁ চিত্ত                বেআকুল বড়ায়ি

             জাইবোঁ তার আনুসারে

             দুখ বাঁশীর শবদেঁ গো বড়ায়ি

             ঘোলে ঘরত মাথানি না বুলে ধ্রু

বৃন্দাবন পসিআঁ                  সুন্দর কাহ্নাঞিঁ

             বাঁশী বাএ সুললিত ছান্দে

হার কঙ্কন বড়ায়ি                 সব তেআগিবোঁ

             সুণী তাক বুক কে বা বান্ধে

চলি জাইতেঁ চাহোঁ বড়ায়ি       পাঅ নাহিঁ চলে

             হারায়িলোঁ সখিজন সঙ্গে

এবেঁ বাঁশীনাদ সুণী               দেহ কাহ্ন আণী

             গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীচরণে

 

                         (১২)

গুজ্জরীরাগঃ রূপকং

 

রাধয়া প্রেরিতা বৃদ্ধা হরেরন্বেষণং প্রতি

ইদং জগাদ বচনং রাধিকামাধিকাতরাম্

 

খনে বসী থাকে কাহ্নাঞিঁ যমুনীর তীরে

গেণ্ডু আ খেলাএ খনে গোকুল ভিতরে

কথাঁ গিআঁ চন্দ্রাবলী চাহিব কাহ্নাঞিঁ

সরূপ করিআঁ বোল আহ্মার ঠাই ধ্রু

খণে বৃন্দাবনে খনে বাঁশী বোলায়িতেঁ

নিশ্চল বোলহ লাগ পাইব কেনমতেঁ

তাহার উদ্দেশে কত বেড়ায়িব আহ্মে

বুঢ়া মানুষক দয়া না করহ তোহ্মে

কাকুতী করিআঁ বোলোঁ খেমা কর মনে

গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীগণে

 

          (১৩)

রামগিরীরাগঃ আঠতালা

 

কাল কোকিল রএ কাল বৃণ্দাবনে

এবেঁ কাল হৈল মোকে নাণ্দের নণ্দনে

প্রাণ আকুল ভৈল বাঁশীর নাদে

এবেঁ আসিআঁ কাহ্নাঞিঁ দরশন নাঁদে

আহ্মা উপেখিআঁ গেলা নান্দের নন্দন

তাহাত মজিল চিত না জাএ ধরণ ধ্রু

আগর চন্দনে বড়ায়ি শরীর লেপিআঁ

কেলি কৈল যেই বৃন্দাবনত পসিআঁ

নাগর কাহ্নাঞিঁ সমে বিবিধ বিধানে

এবেঁ লআঁ চল বড়ায়ি সেই বৃন্দাবনে

বড়ার বৌহারী আহ্মে বড়ার ঝী

কাহ্ন বিণি মোর রূপ যৌবনে কী

এ রূপ যৌবন লআঁ কথাঁ মোএঁ জাওঁ

মেদনী বিদার দেঊ পসিআঁ লুকাওঁ

মন্দ পবন বহে কালিনী নইতীরে

কাহ্নাঞিঁ সোঁঅরী মোর চিত নহে থীরে

এবেঁ আকুল কৈলে মোরে নন্দের নন্দনে

গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীগণে

 

            (১৪)

মালবরাগঃরূপকং

 

যবেঁ আহ্মা দিআঁ কাহ্নাঞিঁ পাঠায়িলে তাম্বুল

তখন কি বুঝিআঁ না কৈলে আণুকূল

পুনরপি কান্ধে বহিলেঁ দধিভার

তবেঁ কেহ্নে না পালিলে বচন তাহার

যখন শরতরৌদে ধরিলেক ছাতী

তখন বোলায়িলেঁ রাধা আপণাক সতী

তোহ্মা সমে করিব যমুনাজলে কেলী

হেন বুঝী কালীয় দলিল বনমালী

নানা ফুল আরোপিল নির্ম্মিল বৃন্দাবন

তোহ্মার বিলাস হেতু নান্দের নন্দন

তোহ্মাত লাগিআঁ এত কৈল দামোদরে

তভোঁ তাক দোষ দেসি তোঞঁ বারে বারে

এখন বোলহ রাধা আহ্মার মরন

এবেঁ কথাঁ পাইব আহ্মে নান্দের নন্দন

মোর বোল শুন রাহী ছাড় তার আশ

বাসলী শিরে বন্দী গাইল চণ্ডীদাস

 

             (১৫)

কোড়ারাগঃ একতালী

 

সুসর বাঁশীর নাদ শুণিআঁ বড়ায়ি

             রান্ধিলোঁ যে সুনহ কাহিনী

আম্বল ব্যঞ্জনে মো বেশোআর দিলোঁ

             সাকে দিলোঁ কানাসোআঁ পাণী

রান্ধনের জুতী হারায়িলোঁ বড়ায়ি

             সুণিআঁ বাঁশীর নাদে ধ্রু

নান্দের নান্দন কাহ্ন আড়বাঁশী বাএ

             যেন রএ পাঞ্জরের শুআ

তা সুণীআঁ ঘৃতে মো পরলা বুলিআঁ

             ভাজিলোঁ এ কাঁচা গুআ

সেই ত বাঁশীর নাদ সুণিআঁ বড়ায়ি

             চিত্ত মোর ভৈল আকূল

ছোলঙ্গ চিপিআঁ নিমঝোলে খেপিলোঁ

             বিণি জলেঁ চড়াইলোঁ চাঊল

যমুনার তীরে কদম তরুতলে

             তহি বসি কাহ্ন বাএ বাঁশে

তাক আণিআঁ বড়ায়ি রাখহ পরাণ

             গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে

 

          (১৬)

গুজ্জরীরাগঃরূপকং

 

আজি ভাল না শুণো মো তোহ্মার বচন

আপণার গুণ কহ আঊলাআঁ রান্ধন

আপণার সুখে কাহ্নাঞিঁ ভ্রমে বৃন্দাবনে

লাজ না বাস বুলিতেঁ হেন বচনে ধ্রু

তাহাক আণিতেঁ তোহ্মে নাম্বায়িলেঁ আম্বলে

ছোলঙ্গ চিপিআঁ রস দিলেঁ নিমঝোলে

চল চাহা গিআঁ রাধা বৃন্দাবন পাশে

তথঁ কাহ্নাঞিঁ গাইল চণ্ডীদাসে

 

           (১৭)

কোড়ারাগঃ রূপকং

 

নিধায় কলসং কুক্ষৌ বৃদ্ধয়া সহ রাধিকা

জগাম যমুনাতীরং কৃষ্ণান্বেষণতৎপরা

 

কাখেত কলসী বড়ায়ি জাওঁ ধীরে ধীরে

চতুর্দ্দিশ চাহোঁ বড়ায়ি যমুনার তীরে

বাঁশীনাদ সুণী কাহ্ন দেখিতে না পাওঁ

মেদনী বিদার দেঊ পসিঞাঁ লুকাওঁ

চাহা চাহা আল বড়ায়ি যমুনাক তীরে

বাঁশীর শবদেঁ প্রাণ কেহ্ন জণি করে ল ধ্রু

শীতল মনোহর বাঁশী কে না বাএ

ডালত বসিঞাঁ যেহ্ন কুয়িলী কাঢ়ে রাএ

উল্লসিত হইলো বড়ায়ি তার নাদ সুণী

না পায়িঞাঁ কাহ্নাঞিঁ বড়ায়ি তেজিবোঁ পরাণী

যমুনার তীরে বড়াই কদমের তলে

পূর্ণ ঘট পাতী বড়ায়ি চাহি ত মঙ্গলে

মঙ্গল পায়িলে হয়ে চিত্তের সোআথে

তবেসি মেলিব এথাঁ প্রিয় জগন্নাথে

এবে মঙ্গল চাহীঞাঁ দেখিলোঁ বড়ায়ি

কাহ্নাঞিঁ পায়িবাক তাত এক চিহ্ন নাহী

এখন বড়ায়ি মোরে বোলহ উপাএ

বাসলী শিরে বন্দী চণ্ডীদাস গাএ

 

               (১৮)

গুজ্জরীরাগঃ যতিঃ

 

অনেক প্রকারে চাহিল বৃন্দাবনে

কথাহো না পায়িল কাহ্নের দরশনে

আজি সুন্দরী রাধা চলি জায়ি ঘর

এবে মন নিবারি মোহোর বোল ধর

এখণ আর কিছ ঊপায় নাহী

কালী পরভাতে আসি চাহিব কাহ্নাঞিঁ ধ্রু

বিহাণ আইলাহোঁ হৈল সঁঝ উপসন

গোঠে হৈতেঁ ঘর আজি আসিআঁ আইহন

তোহ্মাক না দেখিআঁ রোষিব আহ্মারে

না জাণো আয়র কিবা করএ আহ্মারে

কোপছলেঁ পরিখে তোহ্মার মতি কাহ্নে

এখন পায়িবাক তাক না কর যতনে

বিরহেঁ বিকল হআঁ তোহ্মার থানে

আপণে মেলিব আসি নাগর কাহ্নে

আহ্মাত আধিক তোর কে করিবে হিত

সব খন তোর কাজে জাগে মোর চিত

হেন বুলী বড়ায়ি লয়িআঁ গেলী ঘর

গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীবর

 

             (১৯)

ভৈরবীরাগঃ যতিঃ

 

প্রথম পহরে গোআল গেলা নিণ্দ

আচম্বিত বাঁশীধুনী করিল গোবিন্দ

উত্তরলী হয়িলী রাহী বাঁশীর নাদে

বিরহেঁ বিকলী হআঁ গোআলিনী কাণ্দে ১‌

শ্রীনন্দনন্দন গোবিন্দ হে

অনাথী নারীকে সঙ্গে নে ধ্রু

দুঅজ পহরে নিন্দে আকুল আইহন

নাছে গিআঁ চাহে রাহী নান্দের নন্দন

চারি পাশ চাহে রাহী চমকিত মনে

কথাঁহো না পায়িল কাহ্নের দরশনে

তিঅজ পহর রাতী কোকিল রএ

বেআকুলী গোআলিনী মনত গুণএ

এভোঁ নাইল সে ত নান্দের পূত

কোকিলের নাদ মোকে যেহ্ন যমদূত

চৌঠ পহরে গুণিআঁ পাঁচ সাতে

বিরহেঁ মুরুছা গেলী রাধিকা প্রভাতে

মুখে জল দিআঁ বড়ায়ি করায়িল চেতন

গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীগণ

 

             (২০)

রামগিরীরাগঃ একতালী দণ্ডকঃ লগনী

 

অথ রাধাং পূরো বীক্ষা স্মরজ্বরভরাতুরাং

চতুরা জরতী গ্রাহ যমুনাগমনং প্রতি

 

সুণহ সুন্দরী রাধা বচন আহ্মার

যমুনাক যাই ছলে পাণী আণিবার

তোহ্মার বচনে যমুনাক আহ্মে জাইব

তথাঁ গেলেঁ কেমনে কাহ্নাঞিঁর লাগ পাইব

তথাঁ বাঁশী চোরায়িতেঁ করিঊ যতনে

যমুনার তীরে সব খন থাকে কাহ্নে

তার বাঁশী নিলেঁ হিত কি হয়িব মোর

সরূপ করিআঁ কহ পাএ ধোরোঁ তোর

বাঁশীত লাগিআঁ তোকে নাণ্দের নন্দন

আপুণী বুলিব আসী কাকুতীবচন

কদমের তলে যবেঁ কাহ্ন থাকে বসী

তবেঁ তার কেনমতেঁ চোরায়িব বাঁশী

নিন্দাউলী মন্ত্রে তাক নিন্দআইব আহ্মি

তবেঁ তার বাঁশী লআঁ ঘর জাইহ তুহ্মি

কেহো যবেঁ বাঁশী হাথে দেখিব আহ্মারে

তবেঁ তাক সম্বোধিব কমণ ঊত্তরে

বাঁশীগুটি থুইহ তোহ্মে কলসি ভীতর

গাইল মড়ু চণ্ডীদাস বাসলীবর

 

           (২১)

পাহাড়ীআড়াগঃ ক্রীড়া

 

গত্বা রাধাযুতা বৃদ্ধা মাধবং যামুনে তটে

নিদ্রালুং বিদধে মন্ত্রৈর্বংশাপহরণাশয়া

 

যমুনার তীরে          কদম তরুতলে

             বাঅ বহে সুশীতলে

তথাঁ বশিআঁ           সে দেবরাজ

             পুরিল বাঁশীত শরে

নিদ্রাহো আসিআঁ      চাপিল কাহ্নে

             তেসিঁ না গেলা ঘরে

নব কিশলয়           শয়নে সুতিল

             বাঁশীত দিআঁ সিঅরে

আল

             কাহ্ন নিন্দ গেলা হেলে

দৈব নিবন্ধন           খণ্ডন না জাএ

             বাঁশী হারায়িল ভোলে ধ্রু

সকল সখিগনে        যমুনাক গেলা

             আণিবারেঁ পাণী

কদম তলাত          নিন্দ গেল কৃষ্ণ

             দেখিল আইহনরাণী

ধীরে ধীরে তার       নিকট গিআঁ

             বাঁশী চোরায়িআঁ সত্বরে

কাখের কুম্ভত         ভিতর থুয়িআঁ

             রাধা লড়িলা ঘরে

ঘরত গিআঁ            সে চন্দ্রাবলী

             ভূমিত থুয়িআঁ কলসী

উল্লসিত মনে          বাহির করিআঁ

             পুণি পুণি চাহে বাঁশী

পাছে লুকায়িল        রাধিকা বাঁশী

             যথাঁ নাহিঁ জাএ আনে

মনত গুণিআঁ          সার কৈল

             আর নাহিঁ দিব কাহ্নে

নিদ্রা ভঙ্গিআঁ           সত্বর হয়িআঁ

             কাহ্নাঞিঁ তুলীল গাএ

বেআকুল হয়ি         বড়ায়ি দেখিআঁ

             বিলপিলা শ্রীনিবাসে

বাসলীচরণ            শিরে বণ্দিআঁ

             গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে

 

          (২২)

কোড়ারাগঃ যতিঃ

 

আনেক যতন করি আলোচিআঁ কাজে

বাঁশী নির্ম্মিল আহ্মে গোকুলসমাজে

শোভে রতনজড়িতে বাঁশী আহ্মারে

নাদে মোহো জাএ সকল সংসারে

বাঁশী হারায়িলোঁ বড়ায়ি ল

আল গোকুলে আসিআঁ

হাকাণ্দ করুণা করোঁ ভূমিত লোটায়িআঁ ধ্রু

এবেঁ কে না নীল মোহন বাঁশে

মুকুতার ঝারা পাটথোপ দুই পাশে

মাণিকে খঞ্চিল তথি সোনার পাতা

সুরপতী জাণে মোর বাঁশীর বারতা

বাঁশী হারায়িআঁ কাহ্ন মনে খেদ করে

তাহাক চাহিআঁ কাহ্ন বুলে ঘরে ঘরে

মাথাত হাথ দিআঁ কাণ্দন্তি গদাধরে

তাহাক শুণিআঁ রাধা পায়িল বড় ডরে

মণত গুণিআঁ পাছে দেব চক্রপাণী

দুঈ হাতে মুছিলান্ত নয়নের পাণী

তবেঁ সবে কহিলান্ত বড়ায়ির থানে

গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীগণে

 

           (২৩)

মল্লাররাগঃরূপকং

 

না কাণ্দ কাহ্নাঞিঁ সুণহ বচনে

কাতর কিকে হয় কমললোচনে

আযাত্রাঞঁ গোকুল কইলেঁ গমনে

শিয়রত বাঁশী হারায়িল তেকারণে

সুণহ সুণহ কাহ্ন না কর আতোষে

আহ্মে সব কহিআঁ দিব বাঁশীর ঊদ্দেশে ধ্রু

আহ্মার বচনে তোহ্মে কর অবধান

গোপীকুলের তোহ্মে কৈলেঁ আপমান

তেকারণে এবেঁ আহ্মে করি আনুমান

তেঁ সহ্মে চোরায়িল বাঁশি তোর কাহ্ন

বাঁশীর উদ্দেশ তোক কহিল মুরারী

গোপী মাঝেঁ বাঁশী তোর কেহো কৈল চুরী

ষোল শত যুবতীক কর যোড় হাথ

তবেঁ বাঁশী পায়িবেঁ শুন জগন্নাথ

যোড়হাথে কাকুতী কৈল বনমালী

তা দেখিআঁ ঈষত হাসিলী চন্দ্রাবলী

বুঝিআঁ রাধাক বাঁশী মাঙ্গিল কাহ্নে

গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীগণে

 

         (২৪)

বেলাবলীরাগঃরূপকং

 

আহ্মার বাঁশীর শবদেঁ ল

আল হের রাধা

খণ্ডএ সকল আপদে

আল রাধে জার ধুনী সরগদুআরে

মোরে বাঁশীগুটী দিআঁ মেণ দাণে

আল হে রাধা

বারেক রাখহ সমানে ল ধ্রু

বাঁশী পাইল হর গৌরী বরে

দেখিতেঁ আতি মনোহরে

যার নাদেঁ গোকুল রহে

সুণ তোঁ আইহনের গোআলী

আকুল না কর বনমালী

বাঁশী দেহ তেজিআঁ জঞ্জালে

হের তোর ধরিলোঁ আঁচলে

সুণী কি বুলিহে বাপ নান্দে

বাঁশী হারায়িলোঁ মো নিন্দে

বাঁশী দিআঁ পুর মোর আশ

গাইল বড়ু চণ্ডীদাস

 

         (২৫)

ভাঠিআলীরাগঃ একতালী

 

কৃষ্ণস্য বচনং শ্রুত্বা রাধিকাধিমতী সতী

বেপমানতনুস্তন্বী জগাদ জরতীমিদং

 

ঘৃত দধি দুধে বড়ায়ি পসার সাজিলোঁ গো

             বিকে জাইতেঁ মধুরা নগরী

আঞ্চলে ধরিআঁ মোক কাহ্নাঞিঁ রহাএ গো

             বোলে তোঞঁ বাঁশী কৈলী চুরী

আল হের না জাণো বাঁশীর শুধী

আল ল বড়ায়ি

ছাওআল কাহ্নাঞিঁ বল করে ধ্রু

তেজিলোঁ মো তার চীর নূপুর কঙ্কন বড়ায়ি

             তেজিলোঁ মো সব আভরণে

বারে বারে কাহ্নাঞিঁ মোকে ধিকাধিক বোলে গো

             যত কিছু তোহ্মার কারণে

গলাত পাথর বান্ধি দহে পইসওঁ

             কিবা মরোঁ আনলে পুড়িআঁ

তবেঁ বা মোঞঁ কাহ্নের ঝগর এড়াওঁ

             কিবা মরোঁ খরল খায়িআঁ

আহ্মার আন্তরে বড়ায়ি বোলহ কাহ্নেরে গো

             চন্দ্রাবলী মাঙ্গে পরিহারে

না কর ঝগড় বড়ু চণ্ডীদাসে গো

             গাইল বাসলীবরে

 

        (২৬)

বেলাবলীরাগঃ একতালী

 

রাধিকাবাচমাচম্য জরত্যা প্রতিপাদিতং

উবাচ কাতরঃ কৃষ্ণো বংশোৎপাদনহেতবে

 

মাঞঁ নিষধিল পুতা কাহ্নে ল

না করিহ গোঠ সয়নে

সেহো বোল না শুণিল কানে ল

আল হের বড়ায়ি হে

তেঁ মোর বাঁশী নিল আনে হে

হরি হরি

কে না পরাণে দুখ দিল

আল হের

বিরহবিনোদ বাঁশী নিল হে ধ্রু

মোর বাঁশী ত্রিভুবনের জাণী

খিঞ্চিল মাণিকে হিরা মণী

বাঁশী নিআঁ রাধা নাহিঁ মানে

সে নিল জাণো আনুমানে

বাঁশী হারাইল বনমালী

সুণী বাপ মাঞঁ দিব গালী

তাক ধন দিব চক্রপাণী

যে মোর বাঁশী দিব আনী

নাহিঁ করোঁ কিছু আপরাধা

বাঁশী নিআঁ প্রাণে মারে রাধা

বোল তারে দেঊ মোরে বাঁশে

গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে

 

                   (২৭)

পাহাড়ীআরাগঃ ক্রীড়া লগনী দণ্ডকঃ

 

কৃষ্ণস্য বচনং শ্রুত্বা জরত্যা প্রতিপাদিতং

অথ রাধা নিরাবাধা পুনঃ প্রাহ গদাধরং

 

বাপ নন্দ গোপ                    মাঅ যশোদা

             জগতে বিদিত তোরে

তার পুত্র হআঁ                     দেব দামোদর

             মিছা চুরী দোষ মোরে

এথাঞিঁ শিয়রে                   বাঁশী আরোপিআঁ

             সুতিআঁ আছিলোঁ আহ্মি

পাণী নিবারেঁ                      আসিআঁ সে

             বাঁশী নিলেহেঁ তুহ্মি

বড়ার ঝিআরী                     বড়ার বৌহারী

             আহ্মে আইহনের রাণী

আহ্মে বাঁশী তোর                 চোরায়িল কাহ্নাঞিঁ

             মুখে আন হেন বাণী

আহ্মে সে তোহ্মার                সকল বেভার

             রাধা জাণোঁ ভালমতেঁ

তেঁসি পুছি আহ্মে                 তোহ্মার থানে

             বাঁশী নিলেঁ কোণ ভিতে

মিছা বোল তেজ                  সুন্দর কাহাঞিঁ

             সত্য কর পরমাণে

আহ্মে যত বড়                    মন্দ লোক কাহ্ন

             তাক সখীজন জাণে

না বোল না বোল                 নাগরী রাধা

             মোরে হেন দুষ্ট বাণী

এথাঞিঁ আহ্মার                   তোহ্মে নিহ্নে বাঁশী

             সকল লোকে ভালেঁ জাণী

তেজিআঁ সংশয়                   কর পরতয়

             কাহ্নাঞিঁ মোর বচনে

কোণ কাজেঁ তোর                 বাঁশী হরিআঁ

             আমান করিব আহ্মে

যত অলঙ্কার                      বহুমূল সার

             সব রাধা মোর নে

সুবণ্ণে জড়িত                     হিরাঞঁ রচিত

             বাঁশীগুটি মোরে দে

নাহিঁ বোলোঁ তোরে               কপট উত্তরে

             সত্য বুয়িলোঁ দামোদরে

মোঞঁ নাহিঁ নেওঁ                  তোহ্মার বাঁশী

             ঝগড় না কর মোরে

নটকী গোআলী                    ছিনারী পামরী

             সত্যে ভাষ নাহিঁ তোরে

তোঞঁ নিলী বাঁশী                 গাইল চণ্ডীদাস

             দেবী বাসলীর বরে ১০

 

             (২৮)

ভাঠিআলীরাগঃ যতিঃ

 

কোণ আসুভ খনে পাঅ বাঢ়ায়িলোঁ

হাঁছী জিঠী আয়র ঊঝঁট না মানিলোঁ

শুন কলসী লই সখী আগে জাএ

বাঞঁর শিআল মোর ডাহিনেঁ জাএ

বাঁশীত লাগিআঁ মোর কি ভৈল বড়ায়ি

আখায়িল ঘাঅত বিষ জালিল কাহ্নাঞিঁ ধ্রু

কথো দূর পথে মোঁ দেখিলোঁ সগুণী

হাথে খাপর ভিখ মাঙ্গে এ যোগিনী

কান্ধে কুরুআ লআঁ তেলী আগে জাএ

সুখান ডালত বসি কাক কাঢ়ে রাএ

ঘৃত দধি দুধ বড়ায়ি দহতে পেলায়িবোঁ

যোগিনীরূপেঁ মো দেশান্তর লইবোঁ

আনলকুণ্ডত কিবা তনু তেআগিবোঁ

কাহ্নত লাগিআঁ কিবা বিষ খাইআঁ মরিবোঁ

বোলওঁ সুন্দর কাহ্নাঞিঁ করিআঁ করুণে

লোটাআঁ ভূমিত ধরী তোহ্মার চরণে

কিসক কাহ্নাঞিঁ মোক দেহ হেন দোষে

বাসলী শিরে বন্দী গাইল চণ্ডীদাসে

            (২৯)

আহেররাগঃ একতালী

 

কিসক নাগরী রাধা যোড়সি কান্দনে

তিরীকলা পাতি ভাণ্ডিবারেঁ চাহ কাহ্নে

সপ্ত লাখের মোর চুরী করি বাঁশী

না জাণো বাঁশীর সুধী আপণে বোলসী

আপণা চিহ্নিআঁ বাঁশী দেহ মোরে আণী

যবেঁ তোর পরাণ না লৈব চক্রপাণী ধ্রু

সব আভরণ তোর কাঢ়িআঁ লইবোঁ

বাঁশীত লাগিআঁ তোক বান্ধিআঁ রাখিবোঁ

জীবার আশ যবেঁ আছএ তোহ্মার

ঝাঁট করী বাঁশীগুটী দিআর আহ্মার

বাঁশী পায়িলেঁ কিছু না বিলিব গদাধর

আপণার সূখে রাধা জাইহ তোহ্মে ঘর

যবেঁ বা না দিবি বাঁশী ভাণ্ডিবি আহ্মারে

এখনী পরাণ তোর লৈবোঁ অবিচারে

আপণা চিহ্নিআঁ বাঁশী দেহ মোরে

নহে পাঁচ আবথা করিব আহ্মে তোহ্মারে

এহা সুণী বড়ায়িতে ঊপজিল হাস

বাসলী শিরে বন্দী গাইল চণ্ডীদাস

 

          (৩০)

দেশবরাড়ীরাগঃ আঠতালা

 

হারায়িল তোহ্মার বাঁশী           তেঁসি বাড়ায়িতে হাসি

             মোর বোল সুণ চক্রপাণী

বুলী চৌর পৈসে ঘরে            গিহ্রীক সত্বর করে

             হেন দুঠ বড়ায়ির বাণী

কিকে কাকুতী করসি             চল চল কাহ্নাঞিঁ

             বড়ায়ী নিলে বাঁশীনাএ ধ্রু

বুঢ়ী বড় আছিদরী                 ভাণ্ডে তোহ্মা মায়া করী

             তার মন বুঝিতেঁ না পারী

দুঠ মন মিঠ দেখে                আত্ম সম পর দেখে

             চাহা বাঁশী তাহাক মুরারী

দেখি তোহ্মা আসুখ               মোর মণে বড় দুখ

             যো কেহ্নে হরিবোঁ তোর বাঁশী

তোহ্মেঞিঁ বড় সিআন            আপণে গুণিআঁ যান

             বড়ায়ি পরক বিনাসী

আহ্মার বোল পরমান             তাক না করিহ আন

             চল তোহ্মে বড়ায়ির পাশে

বাঁশির তত্ব কহিল                আহ্মে দোষ এড়ায়িল

             গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে

 

                  (৩১)

দেশবরাড়ীরাগঃ ॥  আঠতালা

 

তোঁ বড়ায়িক দেসি দোষে        বড়ায়ি তোহ্মাক দোষে

             সব মোর করমের ফল

দুহাঁর কপট হাসী                 চোরাআ আহ্মার বাঁশী

             রাধা মোক না কর বিকল

             কেহ্নে আমার করসী

    আহ্মে জাণী তোহ্মে নিলে বাশীনাএ ধ্রু

তোরে বোলোঁ চন্দ্রাবলী          আকুল মো বনমালী

             তোহ্মে কৈল চুরী মোর বাঁশী

কথাঁ নিআঁ বাঁশী এড়ি             মিছাঞিঁ দোষসি বুঢ়ী

             হৃদয়ত ভয় না মানসী

কহ তোঁ আহ্মার থানে            কিবা আছে তোর মনে

             দুখ দেহ মোরে কি কারণে

বাঁশী দেহ একবার                মাণিবোঁ উপকার

             এহাত না কর তোহ্মে আনে

দৈবেঁ মোক নিন্দ পাইল         তোহ্মে এথাঁ বাঁশী নিল

             বাঁশী দেহ না কর নিরাশ

দেবী বাসলীচরণ                  করী শিরে বন্দন

             গাইল বড়ু চণ্ডীদাস

 

               (৩২)

ভাঠিআলীরাগঃ রূপকং

 

ভাদর মাসের তিথি চতুত্থীর রাতী

জল মাঝেঁ দেখিলোঁ মো কি নিশাপতী

পূণ্ণ কলসে কিবা ভরিলোঁ হাথে

তেকারণে বাঁশী চুরী দোষসি জগন্নাথে

জাণি মেণ আল বড়ায়ি কাহ্নের কাঁহিণী

কলঙ্ক খুয়িল মোর বাঁশীচুরণী ধ্রু

গুরূর আসনে কিবা চাপিআঁ বসিলোঁ

জলের আখর কিবা ভূমিত লেখিলোঁ

খণ্ড বিচনীর কিবা বাঅ তুলী লৈলোঁ গাএ

তেকারণে কাহ্নাঞিঁ বাঁশী চুরী দোষাএ

চান্দ সুরুজ বাত বরুণ সাখী

যে তোর বাঁশী নিল সে খাঊ দুয়ি আখী

যবেঁ মো চুরী কৈলোঁ হআঁ নারী সতী

তবেঁ কালসাপ খাইএ আজিকার রাতী

এখণে আছিল বাঁশী তোহ্মার এই ঠাএ

আগু গেলী গোআলিনী সে বা লই জাএ

আহ্মে বাঁশী নাহিঁ নীএ শ্রীমধুসূদন

গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীগণ

 

                   (৩৩)

রামগিরীরাগঃ একতালী লগনী দণ্ডকঃ

 

রাধে বৃদ্ধাং ভৃশং শুদ্ধাং বিমৃষ্য কৃতকৈতবাং

বঞ্ঝনং কুরুষে জন্মে সর্ব্বং তদ্বিদিতং মম

 

গাই রাখিতেঁ নিন্দ গেলোঁ বাঁশী মাথে

সে না বাঁশী আল রাধা নিলী কোণ ভিতে

নান্দের নন্দন কাহ্নাঞিঁ বোলোঁ মো তোহ্মারে

কথাঁ বাঁশী হারায়িআঁ দোষসি আহ্মারে

এথাঞিঁ আছিল বাঁশী সহ্মার বিদিতে

সে না বাঁশী রাধা মোর নিলেঁ কোণ ভিতে

বিচারিআঁ চাহ মোর দধির পসারে

কথাঁ বাঁশী হারায়িআঁ দোষসি আহ্মারে

না বোল না বোল রাধ হেন দুঠবাণী

তোহ্মে বাঁশী চোরায়িলেঁ আহ্মে ভালেঁ জাণী

চান্দ সুরুজ মোর আছে দুয়ি সাখী

আহ্মা মিছা দোষ কাহ্ন খাইবি দুঈ আখী

সপ্ত লাখের মোর বাঁশী করী চুরী

আহ্রো গালী দেহ মোরে রাধিকা নাগরী

ঘৃত দুধ নঠ মোর ঘোলের পসার

গোহারী করিবোঁ রাজা কংসের দুআর

তোর কংশাসুরক নাহিঁক মোর ডরে

হের ধরিলোঁ বলে তোহোর আঞ্চলে

মিছা চুরীদোষ দিআঁ জাইতেঁ দেহ বাধা

আজী কৈলি আথান্তর করিবেক রাধা ১০

বিণি বাঁশি দিলেঁ তোর নাহিক গমনে

এহা বুঝী কর মোরে বাঁশীগুটি দাণে ১১

সত্যেঁ নাহিঁ নেওঁ বাঁশী তোর গদাধর

গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীবর ১২

 

             (৩৪)

দেশবরাড়ীরাগঃ রূপকং

 

নিপীয় রাধাবচনং নিষেধপরুষাহ্মরং

বংশীমুদ্দিশ্য কংসারির্ব্বিললাপ নিরন্তরং

 

সুদ্ধ সুবণ্ণে শোভিত আহ্মার বাঁশী

নাল বান্ধিল তার বাহিরে

অ প্রাণ

সুণিআঁ কি বুলিহে বলভদ্র ভাই

বাঁশী হারায়িলোঁ মো শিঅরে

অ প্রাণ ধরণ না জাএ সুন্দরি রাধে

কে না নিল মোহন বাঁশী ধ্রু

ঋগ যজু সাম আথর্ব্ব

চারী বেদ গাওঁ মো বাঁশীর সরে

সুণী সব দেবগণে কি বুলিহে আহ্মারে

কে না নীল বাঁশী সিঅরে

হার কেয়ূর রাধা সব মোর নে

বাঁশীগুটি আণী মোক দে

বনমালা আভরণ তাহা তোক দিবোঁ

যে বোলসি তাহাক করিবোঁ

তোহ্মে মোর বাঁশী নিলে সুন্দরি রাধা

মোর মনে হেন পরিহাসে

বাসলীচরণ শিরে বন্দীআঁ

আনন্ত বড়ু গাইল চণ্ডীদাসে

 

            (৩৫)

গুজ্জরীরাগঃ রূপকং

 

যমুনাক আইলোঁ নীতেঁ পাণী আল

তোর বাঁশী সুধিহো না জাণী কাহ্নাঞিঁ হে

হআঁ তোহ্মে দেব চক্রপাণী আল

কেহ্নে বোল হেন দুস্টবাণী ল কাহ্নাঞিঁ হে

শিঅরে হারায়িআঁ তোহ্মে বাঁশি

মিছা কেহ্নে আহ্মারে দোষসি ল কাহ্নাঞিঁ ধ্রু

হয়িল মোর এতেক বএসে

কেহো নাহিঁ দিল চুরীদোষে

সব লোক মোরে ভালেঁ জাণে

চুরিণী হয়িলাহোঁ তোর থানে

আতি রতিবেআকুল হআঁ

কমণ তিরীক বাঁশী দিআঁ

সাধিলেহেঁ আপণার কাজে

আহ্মা কেহ্নে দোষ দেবরাজে

সরূপেঁ বুয়িলোঁ মো কাহ্নাঞিঁ

তোর বাঁশী আহ্মে নাহিঁ পাই

যাক দিলেঁ চল তার পাশে

গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে

 

                  (৩৬)

কহূরাগঃ রূপকং লগনী দণ্ডকঃ

 

সুণহ আইহনদাসী                তোঁ মোর চোরায়িলি বাঁশী

             তেঁসি তোর পাছে বেড়ায়িএ

বাঁশীগুটী দেহ যবেঁ               বড় পুন পাহ তবেঁ

             বাঁশী পাইলেঁ সুখেঁ ঘর জাইএ আল রাধা

সুণহ নটক কাহ্ন                  কেহ্নে কর আপমান

             তোর বাঁশী আহ্মে নাহিঁ নীএ

বাঁশী যবেঁ পাইএ                 তবেঁ ঘসি ঘাটিএ

             চারি চীর করি বা পোড়াইএ

 

সগ্‌র্গ মর্ত্য পাতালে              চিন্তিআঁ চাহিলোঁ মনে

             তোঁ মোর নিআঁছিস বাঁশী

ঊচিতেঁ গরুঅ মনে              তোঞঁ মুচুকে হাসী

             তাক দেহ আইহনের দাসী

পান্তরে হারাআঁ বাঁশী             মোর থানে খোজসি

             এহা না সহে মোর পরাণে

হেন যবেঁ বোলে আন             কাটোঁ তার নাক কান

             তোহ্মা তেজোঁ ভাগিনা কারণে

বাপ বসুল মোর                   মাঅ দৈবকী ল

             সব দেবেঁ আহ্মা ভালেঁ জাণে

গোআলার ঝি তোহ্মে             রাধা চন্দ্রাবলী ল

             ধিক বোল মোক কি কারণে

আহ্মে ত আইহনদাসী            আহ্মাতে চাহসি বাঁশী

             সুণী তোক রোষিব কাঁশে

তোহ্মে কাহ্ন বারেঁ বারেঁ         ধিক বোল মোর থানে

             ফল পাইবেঁ আপনার দোষে

না বোল নিঠুর বাণী               আহ্মে দেব চক্রপাণী

             দেহ মোরে বাঁশীর আশে

বাসলীচরণ শিরে                 বন্দীআঁ ল

             গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে

             (৩৭)

গুজ্জরীরাগঃ যতিঃ চিত্রকং লগনী

 

নিরাশসবনেনাহং      রাধয়া বিকলীকৃতঃ

বংশলাভায় বৃদ্ধে      ত্বমুপায়ং বদ সংপ্রতি

 

ষোল শত রাধার সঙ্গিণী আল

তার থান চলহ আপুণী ল কাহ্নাঞিঁ

একেঁ একেঁ কর যোড়হাথে আল

তবেঁ বাঁশী পাইবে জগন্নাথে ল কাহ্নাঞিঁ

কত কান্দ নেতে মোছ লোহে আল

আন্তর পোড়এ মোর নেহে ল কাহ্নাঞিঁ ধ্রু

আহ্মে হরি ত্রিভুবনে জাণী আল

আহ্মে লআঁ পুরাণ বাখানী ল চড়ায়ি

ত্রিদশগণের আহ্মে নাথ আল

কেমণে করিব যোড়হাত ল বড়ায়ি

এত বড় মোর আপমাণে আল

সুণি কি বুলিব দেবগণে ল বড়ায়িধ্রু

সুণ তোহ্মে নান্দের কুমার

নিজ কাজে বিকল সংসার ল কাহ্নাঞিঁ

যোড়হাথে বুলিহ বচনে

সুখী হইব রাধার মণে ল কাহ্নাঞিঁ

কেহ্নে তোঞঁ কাজ না বুঝসি

তণ্ডী কয়িলেঁ না পাইবে বাঁশীল কাহ্নাঞিঁ৩৬ধ্রু

যোড় হাথ করিলে বড়ায়ি

তবেঁ কি দিবেক বাঁশী রাহী

পাছে জনি লোক ঊপহাসে

গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে

হের গিআঁ তোহ্মার বচনে

হাথ যোড় করে দেব কাহ্নেধ্রু

 

              (৩৮)

ধানুষীরাগঃ একতালী

 

প্রমুক্তকাকুবচনং কৃতসংঘতলং পুরঃ

বিলোক্য মাধবং বৃদ্ধা রাধিকামিদমাদধে

 

মেঘ যেহ্ন আষাঢ় শ্রাবণে

ঝরে তার পাণী নয়নে গো

কান্দিআঁ মলিন কৈল মুখে

কত তার দেখিবোঁ দুখে গো

বাঁশীর শোকেঁ চক্রপাণী

এবেঁ তাক বাঁশী দেহ আনীধ্রু

যোড়হাথ কৈল দেব কাহ্নে

এবেঁ তাক বাঁশী দেহ দাণে

নাহিঁ পিন্ধে উত্তম বসনে

শরীরে দুবল ভৈল কাহ্নে

মোর বোল সুণ আবগাহী

কাহ্নের পিরিতী কর রাহী

দেহ বাঁশী কাহ্নের আথে

তুষ্ট হঊ দেব জগন্নাথে

যে বা রাধা আছে তোর মণে

কাহ্নাঞিঁকে বোল সে আপণে

তাক করিব কাহ্নাঞিঁ হরিষে

গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে

 

           (৩৯)

শৌরীরাগঃ রূপকং

 

বৃদ্ধাবচনমাকর্ণ্য রাধা প্রাহ গদাধরং

সাদরং সপ্রবন্ধঞ্চ পঞ্চবাণশরাতুরা

 

বুলিতেঁ নারিএ তোর চরিতে

খণেকেঁ তোর হএ আন চিতে

এবেঁ করিলে তোহ্মে যোড় হাথ

কাজ বুঝিআঁ দেব জগন্নাথ

সরূপেঁ বোলহ বড়ায়ির থানে

মোর বোল না করিবেঁ কি আনে ধ্রু

আহ্মাক এড়িআঁ গেলা বৃন্দাবনে

বাঁশী বাজায়িলে তোহ্মে থানে থানে

তাক শুণি ভৈলো বেআকুলী

তোর বিরহে প্রিয় বনমালী

এভোঁ কাহ্নাঞিঁ থীর কর মন

কভোঁ না লঙ্খিহ মোর বচন

তবে মেলিবেক বাঁশী তোহ্মারে

সরূপেঁ তোক বুইলোঁ দামোদরে

কভোঁ কি না দিবে আহ্মাক দুখে

এহা বোল আপণ মুখে

তবেঁ কহিবোঁ মো বাঁশী উদ্দেশে

গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে

 

             (৪০)

দেশাগরাগঃরূপকং

 

রাধিকাবাচমাচম্য প্রমোদভরমন্থরঃ

বংশীলাভত্বরাবেশাজ্জগাদ জরতীমিদং

 

মন দিআঁ সুণ বড়ায়ি বচন আহ্মার

সরূপ কহিবোঁ তোর থানে বড়ায়ি গো

যে বচন বুইল রাধা তোহ্মার গোচরে

তাক মোঞঁ না করিবোঁ আনে বড়ায়ি গো

পরাণ বড়ায়ি তোহ্মে বোলহ রাধারে

বাঁশী দিআঁ জীআঊক মোরে ধ্রু

যত কিছু করিলোঁ মোঞঁ রাধার আতোষে

তার ফল পাইলোঁ নিজ দোষে

মণে গুণিআঁ এবেঁ কৈলোঁ মোঞঁ সার

না লঙ্ঘিব বচন রাধার

তোহ্মে জাণহ বড়ায়ি মোহোর বেভার

অবিচল বচন আহ্মার

এহা সরূপ জাণী বুঝাহ রাধারে

বাঁশীগুটি দেঊক আহ্মারে

আহ্মার চরিত্র বিদিত তোর থানে

আর তাক কেহ নাহিঁ জাণে

রাধার বচনে আহ্মে পালিব আবসে

বাসলী বন্দী গাইল চণ্ডীদাসে

 

               (৪১)

রামগিরীরাগঃ বিচিত্র লগনী একতালী দণ্ডকঃ

 

কৃষ্ণস্য বচনং শ্রুত্বা জরত্যা প্রতিপাদিতং

মধুরং মাধবং প্রাহ রাধিকাধিমতী সতী

 

কাহ্নাঞিঁ তোর কথা শুণী বড়ায়ির মুখে

কহিতেঁ না পারোঁ তাক যত পাইলোঁ দুখে

তোহ্মার বিরহে মোঁ হয়িলোঁ বেআকুলী

তে কারণে তোর বাঁশী নিলোঁ বনমালী

রাধা

বিরহে আকুলি ভৈলা আপণার দোষে

আহ্মার বাঁশী তোঁ চোরায়িলি রোষে

আহ্মার খাঁখার যবেঁ না করহ তোহ্মে

তবেঁ কি বিরহদুখ তোক দিএ আহ্মে

কাহ্নাঞিঁ

যে কারণে খাঁখার তোহ্মার মোঞঁ কৈলোঁ

তেকারণে বিরহ আনলে পুড়ি মৈলোঁ

আর কভোঁ চঞ্চল না করিহ মনে

মোক রোষ না করিহ কাহারো বচনে

তোক প্রতি মোর মণে নাহিঁ কিছু রোষে

এহা তত্ব করী জাণী দেহ মোরে বাঁশে

বাঁশী দিআঁ কর মোর মন সোআথ

সহজেঁ তোহ্মাক সুখী হইব জগন্নাথ

বিরহেঁ আকুলী যবেঁ  চাহোঁ মো তোহ্মারে

তখন আসিহ তোহ্মে আতি অবিচারে

হের ভালমতেঁ চাহি নেহ কাহ্নাঞিঁ বাঁশি

আজি হৈতেঁ চন্দ্রাবলী হৈল তোর দাসী ১০

সব দোষ মরসিল তোর চন্দ্রাবলী

আর তোর অহিত না করে বনমালী ১১

হেনমতে বাঁশী পাআঁ হরষিত মণে

কালী নইতীরে ঐতেঁ ঘর গেলা কাহ্নে ১২

পাছে রাধিকা লআঁ বড়ায়ি গেলী ঘর

গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীবর ১৩