বিষয়: নজরুলসঙ্গীত
শিরোনাম:
কে তোরে কি বলেছে মা ঘুরে বেড়াস কালি মেখে
কে তোরে কি বলেছে মা ঘুরে বেড়াস কালি
মেখে
ওমা বরাভয়া ভয়ঙ্করী সাজ পেলি তুই কোথা থেকে॥
তোর এলোকেশে প্রলয় দোলে
আমি চিন্তে নারি গৌরী বলে।
ওমা চাঁদ লুকাল মেঘের কোলে তোর মুখে না হাসি দেখে॥
ওমা শঙ্কর কি গঙ্গা নিয়ে, কাঁদায় তোরে
দুঃখ দিয়ে
ওমা শিবানী তোর চরণ তলে এনেছি তাই শিবকে ডেকে॥
-
ভাবসন্ধান: এই গানে মাতৃরূপিণী কালীর মহিমা উপস্থাপন করা হয়েছে বিস্ময়-ভয় মিশ্রানুভূতির মুগ্ধতা সংমিশ্রণে ।
মূলত কবি এই গানের মাধ্যমে মাতৃরূপিণী
কালী র ভয়ঙ্কর রূপের আড়ালে মাতৃস্নেহ ও আশীর্বাদ
বরাভয়ের প্রত্যাশা উপস্থাপন করেছেন ।
গানের স্থায়ীতে কবি বিস্মিত এই ভেবে- এমন বরাভয়া ভয়ঙ্করী
((অভয় বারদানকারী কিন্তু ভয়ঙ্কর) সাজ
তিনি কোথা থেক ে পেয়েছেন এবং তাঁকে কে বলেছে- সর্বাঙ্গে কালি মেখে
কালী হয়ে ঘুরে বেড়াতে। কবি এই দেবীর চিরন্তন সৌন্দরযময় গৌরী (গৌর বর্ণ যার এবং
যিনি শান্ত-স্নিগ্ধ রূপের দেবী ) রূপে মুগ্ধ ছিলেন। তাই
তিনি তাঁর কালো রূপকে মেনে নিতে পারছেন না। মেনে নিতে পারছেন না, তাঁর প্রলয়রূপী
এলেকেশের আন্দোলনকে। কবির কাছে মনে হয়েছে- মেঘের আড়ালে চাঁদের যেমন সহাস্য মুখ
হারিয়ে যায়। তেমনি দেবীর কালীর ভয়ঙ্কর রূপের আড়ালে- ঢাকা পড়ে গেছে- তাঁর আনন্দময়ী
গৌরীর সহাস্য মুখ।
কবির সংশয়- এই দুঃখের কারণ গঙ্গা দেবী কি না। পৌরাণিক কথায় জানা যায়- গঙ্গা
শিবকে স্বামী হিসেবে পেতে চেয়েছিলেন। তাই কবির কল্প-ভাবনা- শিব গৌরীকে ছেড়ে গঙ্গার সঙ্গ দেন কি না এবং
আর সেই দূঃখে কাতরা দুর্গা কালীর রূপ নিয়েছেনে। আর সেই সেই ভাবনা থেকে বলেছেন- শিবকে তাঁর চরণতলে এনেছেন তাঁর
দুঃখ ঘোঁচাতে। উল্লেখ্য, সনাতন হিন্দু ধর্মের কাহিনিতে পাওয়া যায়- রক্তবীজ অসুরকে
হত্যা করার পর, কালীর ভয়ঙ্কর ক্রোধে জনজীবন বিপন্ন হওয়ার দশায় পৌঁছেছিল। তাঁর
এই ক্রোধ সংবরণের জন্য, দেবীর পায়ের তলে শিব শায়িত হয়েছিলেন। এই গানে এই
কাহিনিকেই কবি ভিন্ন আঙ্গিকে উপস্থাপন করেছেন রূপকার্থে।
-
রচনাকাল ও
স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না।
সঙ্গীত বিজ্ঞান প্রবেশিকা
পত্রিকার বৈশাখ ১৩৪১ (এপ্রিল-মে ১৯৩৪) সংখ্যায়
গানটি প্রথম প্রকাশিত হয়। এই সময় নজরুল ইসলামের বয়স ছিল ৩৪ বৎসর
১১ মাস ।
-
পত্রিকা:
সঙ্গীত বিজ্ঞান প্রবেশিকা। বৈশাখ ১৩৪৮
(এপ্রিল-মে
১৯৩৪)। শ্যামা-সঙ্গীত। মিশ্র-দাদরা। সুরকার: নিতাই ঘটক।
স্বরলিপি: কুমারী বিজলী ধর। [নমুনা]
- রেকর্ড:
- এইচএমভি
[জানুয়ারি ১৯৪১ (পৌষ-মাঘ ১৩৪৭)]। এন ২৭০৭৪। শিল্পী:
পদ্মরাণী চট্টোপাধ্যায়। সুরকার: কাজী নজরুল ইসলাম
- এইচএমভি
[এপ্রিল ১৯৪২
(চৈত্র ১৩৪৮-বৈশাখ ১৩৪৯)]। এন ২৭২৬৫। শিল্পী: কে.
মল্লিক। সুরকার: চিত্ত রায়
- এইচএমভি
[মার্চ
১৯৫০ (ফাল্গুন-চৈত্র ১৩৫৬)]। এন
৩১১৭৬। শিল্পী: সত্য চৌধুরী। সুরকার: নিতাই ঘটক
- গ্রন্থ:
- নজরুল গীতি, অখণ্ড
- প্রথম সংস্করণ [আব্দুল আজীজ আল-আমান সম্পাদিত। হরফ প্রকাশনী। ৬ আশ্বিন ১৩৮৫। ২৩ সেপ্টেম্বর ১৯৭৮]
- দ্বিতীয় সংস্করণ [আব্দুল আজীজ আল-আমান সম্পাদিত। হরফ প্রকাশনী। ১ শ্রাবণ ১৩৮৮। ১৭ জুলাই ১৯৮১]
- তৃতীয় সংস্করণ [ব্রহ্মমোহন ঠাকুর সম্পাদিত। হরফ প্রকাশনী। ৮ মাঘ ১৪১০। ২৩ জানুয়ারি ২০০৪। ভক্তি-গীতি। ১৩৫৮ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা ৩৫৩]
- পরিবর্ধিত সংস্করণ [আব্দুল আজীজ আল-আমান সম্পাদিত। হরফ প্রকাশনী। বৈশাখ শ্রাবণ ১৪১৩। এপ্রিল-মে ২০০৬] ১২৬১ সংখ্যাক গান। পৃষ্ঠা: ২৪৩।
- নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ [নজরুল ইনস্টিটিউট, মাঘ ১৪১৮।
ফেব্রুয়ারি ২০১২ খ্রিষ্টাব্দ]। ১৯ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা ৭]
- নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি
-
প্রথম খণ্ড।
স্বরলিপিকার:
সুধীন দাশ।
[কবি নজরুল ইন্সটিটিউট। অগ্রহায়ণ ১৪০২। নভেম্বর ১৯৯৫। ১৯ সংখ্যক
গান। পৃষ্ঠা: ৯৬-৯৮ [নমুনা]
-
ঊনপঞ্চাশতম খণ্ড। স্বরলিপিকার: ইদ্রিস আলী। কবি নজরুল ইন্সটিটিউট, কার্তিক ১৪২৬।
নভেম্বর ২০১৯। পৃষ্ঠা: ২১ - ২৪
[নমুনা]
- সুরকার:
- স্বরলিপিকার ও স্বরলিপি:
-
সুধীন দাশ। ১৯ ৪২ খ্রিষ্টাব্দের
এপ্রিল মাসে এইচএমভি রেকর্ড কোম্পানি
থেকে প্রকাশিত গানের [শিল্পী: কে. মল্লিক] সুরানুসারে স্বরলিপিটি নজরুল-সঙ্গীত স্বরলিপি
প্রথম খণ্ডে
অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। [নমুনা]
- কুমারী বিজলী ধর।
সঙ্গীত বিজ্ঞান প্রবেশিকা। বৈশাখ ১৩৪১
(এপ্রিল-মে
১৯৩৪)। [নমুনা]
- ইদ্রিস আলী। ১৯ ৪১ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি মাসে এইচএমভি রেকর্ড কোম্পানি
থেকে প্রকাশিত গানের [শিল্পী: পদ্মরাণী চট্টোপাধ্যায়] সুরানুসারে স্বরলিপিটি নজরুল-সঙ্গীত স্বরলিপি
ঊনপঞ্চাশতম খণ্ডে
অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। [নমুনা]
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। সনাতন হিন্দুধর্ম। শাক্ত। কালী-বন্দনা
- সুরাঙ্গ: রামপ্রসাদী
- গ্রহস্বর:
- গা [সুধীন দাশ-এর
স্বরলিপি]
- জ্ঞা [কুমারী বিজলী ধরের স্বরলিপি]
- রজ্ঞ [ইদ্রিস আলী-কৃত
স্বরলিপি]