সমার্থক নামসমূহ:
ভারতবর্ষে
বিভিন্ন প্রদেশে এই গাছকে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়। তবে এর সর্বাধিক প্রচলিত নাম-অশোক।
এরা অন্যান্য নাম- অপশোক, অশোক, কঙ্গেলি, কর্ণপূরক, কেলিক, চিত্র,
দোষহারী, নট, পল্লবদ্রুপ, পিণ্ডিপুষ্প, প্রপল্লব, বঞ্জুলদ্রুম, বিচিত্র, বিশোক,
মধুপষ্প, রক্তপল্লবক, রাগীতরু, রামাবামাঙ্ঘিধাতক, শোকনাশ, সুভগ, স্মরাধিবাস,
হেমপুষ্প।
ইংরেজি:Ashoka
চীন
ভারতবর্ষ
শ্রীলঙ্কা অঞ্চলের
স্থানীয় বৃক্ষ বিশেষ। ভারতে
Saraca
indica
নামক প্রজাতিটি বেশি দেখা যায়। হিন্দু পৌরাণিক কাহিনী মতে– গৌরী দেবী এই বৃক্ষের নিচে তপস্যা করে সিদ্ধি লাভ করেছিলেন এবং শোক থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। সেই কারণে এই বৃক্ষের নাম অশোক হয়েছে।
এই গাছ ভারতবর্ষ ও শ্রীলঙ্কাতে
প্রচুর পাওয়া যায়। কথিত আছে গৌতম বুদ্ধ লুম্বিনি-তে এই গাছের নিচে জন্মগ্রহণ
করেছিলেন। এবং মহাবীর এই গাছের নিচে ধ্যান করে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন। রামায়ণে
উল্লেখ আছে
রাম সীতাকে অপহরণ করে অশোকবনে রেখেছিলেন।
ভারত উপমহাদেশের
Saraca celebic
নামক
প্রজাতিটি মধ্যমাকারের চিরসবুজ ঘন-পত্র বিশিষ্ট গাছ হিসাবে পরিচিত। ছায়াতরু হিসাবে আদৃত। এর কাণ্ড বেশ মসৃণ, বর্ণ ধূসর। বাগানে বা রাস্তার পাশে এই গাছ রোপণ করা হয়ে থাকে। পূর্ণবয়স্ক গাছ ২৫-৩০ ফুট লম্বা হয়। এর পাতাগুলো বেশ বড় বড়। পাতাগুলো লম্বায় ১৫-৩০ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে । বড় পাতার রঙ সবুজ, কচি পাতার রঙ তামাটে। এক একটি ডাঁটায় ৫-৬ জোড়া পাতা থাকে।
ফুল ফোটার সময় বসন্তকাল। এর মঞ্জরী গোলাকৃতির, চওড়া প্রায় ৭.৫১৫ সেন্টিমিটার। কাণ্ড বা শাখায় ছোটো ছোটো ফুল গুচ্ছাকারে ধরে। ফুলগুলির গড় লম্বা ২.৫ সেন্টিমিটার। এগুলির কমলা-লাল বর্ণের হয়ে থাকে। ফুলগুলিতে বেশ সুগন্ধ থাকে। ফল বড় শিমের মতো চ্যাপ্টা। বীজ থেকে সহজেই চারা জন্মে। এর বাকলে ট্যানিন, ক্যাটেকোহল, স্টেরল এবং বিবিধ ধরনের ক্যালসিয়াম যৌগ পাওয়া যায়।
Saraca celebic
অশোক গাছের এই প্রজাতিটি পাওয়া যায়
শুধু
ইন্দোনেশিয়াতে। বর্তমানে এই প্রজাতিটি বিলুপ্ত হওয়ার পথে। জাতিসংঘ
এই প্রজাতিটিকে রক্ষার জন্য
ইন্দোনেশিয়া সরকারকে অবগত করেছে।
Saraca declinata
প্রজাতিটি মূলত থাইল্যান্ডের ইয়লা
প্রদেশের আঞ্চলিক গাছ। মায়ানমারে এর প্রসার ঘটে অনেক পরে। বর্তমানে এই
প্রজাতিটি শ্রীলঙ্কাতে উৎপন্ন করা হচ্ছে। সূত্র:
ঔষধি উদ্ভিদ উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও ব্যবহার/এম.এ হাকিম। বাংলাদেশ নিম ফাউন্ডেশন।
ডিসেম্বর ২০০৫]