নজরুলসঙ্গীতের বিষয়ভিত্তিক শ্রেণিকরণে, নজরলের রচিত
শাক্ত সঙ্গীত হলো- ধর্মসঙ্গীতের অন্তর্গত সনাতন
হিন্দুধর্মের একটি উপবিভাগ। এ্ গানের আদ্যা
শক্তি হলেন দেবী দুর্গা। যিনি সকল দেবদেবীর সম্মিলিত শক্তির মিলিত রূপ। অন্যদিকে
কল্যাণময় শিবের তিনি স্ত্রী। শক্তিরূপিণী দুর্গা ও তাঁর সকল রূপ এবং শৈবশক্তিই
হলো শাক্তসঙ্গীতের ভিত্তি।
অষ্টাদশ শতাব্দীতে কবিরঞ্জন রামপ্রসাদ সেন
(১৭২০-১৭৭৫ খ্রিষ্টাব্দ)
শাক্তসঙ্গীতের
নবতর
ধারার শুভ সূচনা
করেন। মূলত তাঁর দ্বারাই বাংলাগানে
শাক্ত সঙ্গীত নামক নবতর ধারা সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তাঁরই পথ
ধরে পরবর্তী সময়ে মহারাজ নন্দকুমার (১৭০৫-৭৫),
রঘুনাথ রায় (১৭৫০-১৮৩৬), পাঁচালিকার
দাশরথি রায় (১৮০৬-১৮৫৭
খ্রিষ্টাব্দ), রসিক
চন্দ্র রায় (১৮২০-৯৩), প্রমুখ
শাক্তসাধকবৃন্দ এই ধারাকে উজ্জীবিত করে রেখেছিলেন।
ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্থে
কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯-১৯৭৬) এই ধারকে উৎকর্ষ ধারায়
পৌঁছে দিয়েছিলেন। বাণী ও সুরের বিচারে তাঁকে সর্বকালে শ্রেষ্ঠ শাক্তসঙ্গীত রচয়িতা
হিসেবে আখ্যায়িত করলে, বোধ করি তা অতিরঞ্জিত হয়ে না।
লেটো গানের লোক-আঙ্গিকের অধ্যায় বাদ দিলে, পল্টন ফেরত নজরুলের
প্রায় ২২ বছরের সাহিত্য চর্চার ভিতরে একটি উল্লেযোগ্য অংশ জুড়ে ছিল সঙ্গীতরচনার
অধ্যায়। এই স্বল্প-পরিসরে তিনি রচনা করেছিলে তিন সহস্রাধিক গান। সঙ্গীতের ক্ষেত্রে
তিনি ছিলেন বহু মাত্রিক। এই সময়ের তিনি ছিলেন গীতিকার, সুরকার, সঙ্গীত-পরিচালক,
নাট্যকার, অভিনেতা ইত্যাদি। তিনি নিজের নাটকের পাশাপাশি অন্যের নাটকে গান লিখেছেন,
অন্যের রচিত গানে সুরারোপ করেছেন। সঙ্গীতে নজরুলের এই বর্ণাঢ্য জীবনের একটি অন্যতম
অধ্যায় ধর্মসঙ্গীত। এক্ষেত্রে তিনি সাধারণ, ইসলাম ও সনাতন ধর্মের আলোকে যত গান রচনা
করেছেন, তার মধ্য একটি উল্লেখযোগ্য অধ্যায় হলো- শাক্তসঙ্গীত।
১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দে নজরুলক গ্রামোফোন কোম্পানিতে যোগাদান করেন। এই সময় রেকর্ড
কোম্পানির চাহিদা পূরণের জন্য বহু শাক্ত সঙ্গীত রচনা করেছিলেন। এই সূত্রে তিনি
হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি গভীরভাবে পাঠ করেন। এর মধ্য দিয়ে বৈষ্ণব ও শাক্ত উভয় দর্শনকে
আত্মস্থ করতে সমর্থ হন। কথিত আছে নজরুল ব্যক্তিগতভাবে কিছুদিন কালীসাধনা করেছিলেন।
বিশেষ করে ১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর প্রথম সন্তান বুলবুলের মৃত্যুর পর, মনের অশান্তি
দূর করার জন্য, ইসলাম এবং সনাতন হিন্দু ধরধ্মের আধ্যত্মিক দর্শনের অনুগামী হয়েছিলেন।
জন্মগতসূত্রে তিনি প্রথাগত ইসলামী ধারণা পেয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে সুফিদর্শন তাঁকে
গভীরভাবে আলোড়িত করেছিল। এরই ভিতরে তিনি শাক্ত-দর্শনকে অনুধাবন করতে চেয়েছিলেন
প্রত্যক্ষ কালী সাধনার মধ্য দিয়ে। এই উদ্দেশ্যে তিনি লালগোলা হাইস্কুলের প্রধান
শিক্ষক যোগীবরণ মজুমদারেরের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছিলেন। এই বিষয়ে তিনি তাঁর 'পথ হারাব
গ্রন্থ'-এর ভূমিকা লিখেছেন
...তিনি আমার হাতে
দিলেন যে অনির্বাণ দীপ-শিখা সেই দীপ-শিখা হাতে লইয়া আজ বার
বৎসর ধরিয়া পথ চলিতেছি। আর অগ্রে চলিতেছেন তিনি পার্থ-সারথি রূপে।
আজ আমার বলিতে দ্বিধা নাই, তাঁহারই পথে চলিয়া আজ আমি আমাকে চিনিয়াছি। আমার
ব্রহ্ম-ক্ষুধা আজও মিটে নাই, কিন্তু সে এই জীবনেই মিটিবে, সে বিশ্বাসে স্থিত হইতে
পারিয়াছি। আমি
আমার আনন্দ-রস-ঘন স্বরূপকে দেখিয়াছি। কি দেখিয়াছি, কি পাইয়াছি, আজও তাহা বলিবার
আদেশ পাই নাই।'
এ প্রসঙ্গে
আজাহারউদ্দীন লিখেছেন- ' বাড়ির চিলে কোঠায় কালী প্রতিমা স্থাপন করে সকাল-সন্ধ্যা
মন্ত্রজপ করতে শুরু করলেন। কোন
কোন বার নিরম্বু উপবাস করে ভেতর থেকে দরজা লাগিয়ে পূজা গৃহে দিন দুই কাটিয়ে
দিতেন।'
এক পর্যায়ে নজরুল সন্ন্যাস গ্রহণ করতে রামকৃষ্ণ বেদান্ত মঠে গিয়েছিলেন। এ
প্রসঙ্গে রাজ্যেশ্বর মিত্র (১৯১৭-৯৫) তাঁর 'আগরতলায় শচীন দেববর্মণ' স্মৃতিকথায়
লিখেছেন। স্বামী প্রজ্ঞানানন্দের কাছে শুনেছি হিমাংশু দত্ত ও নজরুল ইসলাম উভয়ই
রামকৃষ্ণ বেদান্ত মঠে
স্বামী অভেদানন্দের কাছে সন্যাসে দীক্ষা নিতে এসেছিলেন। কিন্তু তখনও সময় হয়নি
বলে অভেদানন্দজী তাঁদের অপেক্ষা করতে উপদেশ দিয়েছিলেন
নজরুলের সঙ্গীত রচনার প্রথম পর্বের সূচনা হয়েছিল লেটো গানের মধ্য দিয়ে। এই পর্যায়ে
লেটো পালার জন্য রচনা করেছিলেন
ভক্তি-গীতি। এর অধিকাংশ ইসলামী গান ও রাধা-কৃষ্ণ বিষয়ক গান। আর প্রথম যুদ্ধের শেষে
পল্টন-ফেরত নজরুল ভক্তি পর্যায়ের প্রথম গান। এই গানের প্রভু কোনো বিশেষ ধর্মের মতের
নয়। মূলত ব্রিটিশ ভারতে পরাধীনতার গ্লানি থেকে উদ্ধারের জন্য প্রভুর কাছে ভক্তের
প্রার্থনা। তাই এই গানের পর্যায় বিশ্লেষণে বলা যেতে পারে- ভক্তি (সাধারণ, প্রার্থনা,
স্বদেশ)।
প্রকাশ-উৎসের বিচারে নজরুলের শাক্ত সঙ্গীতকে
যে ভাবে শ্রেণিকরণ করা যায়, তা হলো-
-
রেকর্ডে প্রকাশিত শাক্ত সঙ্গীত
-
শ্রীমন্ত
[শ্রুতি নাটক]। ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবর (আশ্বিন-কার্তিক ১৩৪২) মাসে এইচএমভি রেকর্ড কোম্পানি নজরুলের রচিত শ্রীমন্তী নাটক প্রকাশ করেছিল। এই নাটকে দুটি শাক্ত সঙ্গীত অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।
-
সুরথ উদ্ধার। ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বর
(কার্তিক-অগ্রহায়ণ ১৩৪৩) মাসে, রেকর্ডে মন্মথ রায়ের রচিত 'সুরথ উদ্ধার' নাটক
প্রকাশিত হয়েছিল। 'হিজ মাস্টার্স ভয়েস'-এর প্রচার পুস্তিকায় এই নাটকের গানের বাণী
মুদ্রিত হয়েছিল। এই নাটকে নজরুলের রচিত শাক্ত-সঙ্গীত
ব্যবহৃত হয়েছিল।
-
বেতারে প্রকাশিত শাক্ত-সঙ্গীত
-
আগমনী:
নজরুল ইসলামের রচিত গীতিচিত্র। ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দে ৬ অক্টোবর (রবিবার ২০ আশ্বিন ১৩৪৭),
সন্ধ্যা ৭.২০টায় কলকাতা বেতার কেন্দ্র থেকে দুর্গাপূজা উপলক্ষে এই
গীতিচিত্রটি প্রচারিত হয়েছিল। এর বিষচয়বস্তু ছিল দুর্গার আগমনী
গান। এই গীতিচিত্রে মোট ৬টি গান অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।
-
এস মা
(শ্যামা-সঙ্গীত বৈচিত্র্য)
-
দেবীস্তুতি:
নজরুল ইসলামের রচিত গীতি-আলেখ্য। ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ শে জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার
১৩ মাঘ ১৩৪৪), ৬.২১টা থেকে ৭.৫০টা পর্যন্ত, কলকাতা বেতারকেন্দ্র থেকে নজরুলের রচিত 'দেবস্তুতি' নামক গীতি আলেখ্য
প্রচারিত হয়। এই অনুষ্ঠানের ব্যাখ্যা করেছিলেন নজরুল ইসলাম। সঙ্গীত পরিচালনায় ছিলেন
নিতাই ঘটক। এতে যন্ত্রসঙ্গীতে ছিল বাসন্তী যন্ত্রীকুঞ্জ। গীতি-আলেখ্যে নজরুলের রচিত মোট ১১টি গান প্রচারিত হয়েছিল।
-
বিজয়া
[শ্রুতি নাটক]।
কাজী
নজরুল ইসলামের রচিত গীতি-আলেখ্য। ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দ ২২ অক্টোবর (রবিবার, ৫ কার্তিক ১৩৪৬),
দুর্গা পূজার দশমী উপলক্ষে- কলকাতা-ক এর প্রথম অধিবেশনে সকাল ৯টায় এটি প্রচারিত হয়েছিল 'বিজয়া
দশমী' নামে। রচনা এবং প্রযোজনায় ছিলেন
কাজী
নজরুল ইসলাম। সহযোগী হিসেবে ছিলেন অমরেন্দ্রনাথ অধিকারী এবং
সুশীলরঞ্জন সরকার। এই গীতি-আলেখ্যে মোট ৬টি শাক্ত-সঙ্গীত প্রচারতি হয়েছিল।
- মঞ্চ নাটক
- সতী:
মন্মথ রায়ের রচিত এই নাটকটি ১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ এপ্রিল (বুধবার, ১৫ বৈশাখ ১৩৪৪), কলকাতার
নাট্যনিকেতন মঞ্চে অভিনীত হয়েছিল। এই নাটকে নজরুলের রচিত ১০টি গান ব্যবহৃত
হয়েছিল। এর ভিতরে শাক্ত-সঙ্গীত ছিল ৯টি।
-
গ্রন্থাদিতে প্রকাশিত শাক্ত-সঙ্গীত:
-
রাঙাজবা:
নজরুলের রচিতে শাক্ত-সঙ্গীতের সবচেয়ে বড় সংকলন । নজরুলের জীবদ্দশায় এই নামে কোনো গ্রন্থ প্রকাশিত হয় নি।
নজরুলের অসুস্থ অবস্থায়
১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম দিকে নজরুলের শাক্ত সঙ্গীতের সংকলন হিসাবে গ্রন্থ প্রকাশের
উদ্যোগ নিয়েছিল হরফ প্রকাশনী। এই গ্রন্থে গানের সংখ্যা ১০০ থাকলেও, ৯৯টি গান
স্থান পেয়েছিল। কারণ, 'কেন আমায় আনিলি মাগো' গানটি দুইবার (গান সংখ্যা ৬৪ ও ৯৫)
অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
এছাড়া, অন্যান্য গীতি- সংকলনে বহু শাক্ত-সঙ্গীত অন্তরভুক্ত হয়েছিল।
-
পত্রিকায় প্রকাশিত শাক্ত-সঙ্গীত: বেতার-জগৎ,
সঙ্গীতবিজ্ঞান প্রবেশিকা পত্রিকা ইত্যদিতে বহু শাক্ত সঙ্গীত প্রকাশিত হয়েছিল।
নজরুলের শাক্ত-সঙ্গীতের বিষয়-ভিত্তিক শ্রেণিকরণ
নজরুলের শাক্তসঙ্গীতে শিব এবং দুর্গাকে নানা নামে পাওয়া যায়।
শিবের বন্দনা বা মহিমা প্রকাশক গানগুলোকে সাধারণভাবে 'শৈব সঙ্গীত' পর্যায়ে
অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু দুর্গা-বষয়ক গানগুলোর এরূপ কোনো সাধারণ নাম নেই। একে
সাধারণ ভাবে এই গানগুলোকে দুর্গা-বিষয়ক গান বলা যেতে পারে।
শৈবসঙ্গীত: শিব-বিষয়ক
গানগুলোকে সাধারণভাবে শৈবসঙ্গীত বলা হয়। বিষয়াঙ্গের বিচারে এই গানগুলোকে নানা উপবিভাগে বিভাজিত করা যায়। যেমন- বন্দনা,
- বন্দনা: শিবের রূপ বর্ণনার মধ্য দিয়ে শিবকে উপস্থাপন করা হয়েছে এই জাতীয় গানে। এই রূপবর্ণনার মধ্য
দিয়ে মূলত শিবকে বন্দনা করা হয়েছে। তাই এই গানগুলোকে- সাধারণভাবে বন্দনা
উপবিভাগের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এই জাতীয় গানের একটিতে রয়েছে বিরূপ দৃষ্টিভঙ্গীতে শিবের
রূপবর্ণা কতা হয়েছে। গানটি হলো- ' বিরূপ আঁখির কি রূপই তুই আঁকলি'
- আজি নাচে নটরাজ [তথ্য]
- ওঁ শঙ্কর হর হর শিব সুন্দর [তথ্য]
- কে শিব সুন্দর [তথ্য]
- বিরূপ আঁখির কি রূপই তুই আঁকলি
[তথ্য]
- প্রার্থনা : এই জাতীয়
গানে শিবের কাছে বিশেষ চাওয়ার আবেদন- প্রার্থনা-রূপে উপস্থাপন করা হয়েছে।
- সৃজন ছন্দে আনন্দে নাচো নটরাজ
[তথ্য]
- ধ্বংস ও কল্যাণ
- এসো এসো এসো ওগো মরণ [তথ্য]
- এসো শঙ্কর ক্রোধাগ্নি [তথ্য]
- রঙ্গ-ব্যঙ্গ:
- একদা সব সুরাসুরের খেয়াল হল [তথ্য]
-
বাবার হলো বিয়ে [তথ্য]
দুর্গা-বিষয়ক সঙ্গীত
সনাতন হিন্দু পৌরাণিক কাহিনী অনুসরণ করলে দেখা যায় দুর্গা হলেন- আদ্যাশক্তি।
পৌরাণিক কাহিনিগুলোতে রয়েছে নানা ভাবে, নানা নামে তাঁর সরব উপস্থিতি।
দুর্গা নাম: অভিধান ও পৌরাণিক গ্রন্থাদি অনুসারে জানা যায়- দুর্গা শব্দটি
এসেছে দুর্গ শব্দ থেকে। দুর্গকে বিনাশ করেন যিনি, তাকেই দুর্গা বলা হয়েছে।
শব্দকল্পদ্রুম অনুসারে, দুর্গ
শব্দটির রূপতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ হলো-
'দুর্গং নাশয়তি যা নিত্যং সা দুর্গা বা
প্রকীর্তিতা' অর্থাৎ, দুর্গ নামক অসুরকে যিনি বধ করেন
তিনিই নিত্য দুর্গা নামে প্রকীর্তিতা।
মোট কথা দুর্গ নামক দৈত্যকে দমন করে তিনি দুর্গা নাম
প্রাপ্ত হন। দুর্গা শব্দের বর্ণবইশ্লেষণে- এই গ্রন্থে বলা হয়েছে-
'দ' অক্ষর
দৈত্যনাশক, উ-কার বিঘ্ননাশক, 'রেফ' রোগনাশক,
'গ' অক্ষর পাপনাশক ও অ-কার
ভয়-শত্রুনাশক। অর্থাৎ, দৈত্য, বিঘ্ন, রোগ, পাপ ও ভয়-শত্রুর হাত থেকে যিনি
রক্ষা করেন, তিনিই দুর্গা।
পৌরাণিক কাহিনিতে- দুর্গা
পৌরাণিক কাহিনী অনুসরণে, নজরুল দুর্গাকে উপস্থাপন করেছেন নানা ভাবে, নানা নামে।
এসকল নামের সাথে জড়িয়ে আছে পৌরাণিক উপাখ্যান। কখনো দুর্গাকে নানা বিশেষণ-বাচক শব্দে
অভিহিত করা হয়েছে। নজরুলের রচিত শাক্তসঙ্গীতে ভাবানুসন্ধানে এই সকল উপাখ্যান এবং
শব্দার্থের মূল্য অপরিসীম। তাই পৌরাণিক কাহিনি অবলম্বনে দুর্গাবিষয়ক
উপাখ্যানভিত্তিক আবশ্যকীয় তথ্য দেওয়া হলো।
আদ্যাশক্তি: খ্রিষ্টীয় তৃতীয় শতাব্দীতে
বেদব্যাস (বেদবিভাজক বেদব্যাস নয়)-কর্তৃক রচিত মার্কণ্ডেয় পুরাণ মতে - আদিকালে
যখন যোগনিদ্রায় ছিলেন, তখন বিষ্ণুর কর্ণমল থেকে উৎপন্ন মধু ও কৈটভ
[মধুকৈটভ]
নামক দুটি ভয়ঙ্কর
অসুর
ব্রহ্মাকে ভক্ষণ করতে উদ্যত হয়েছিল। এই যোগনিদ্রায়ই ছিলেন দেবী মহামায়া। এই
সময়
ব্রহ্মা
বিষ্ণুর নাভিমূলে আশ্রয় নিয়ে যোগনিদ্রারূপী এই দেবীকে বন্দনা করেন। এই
বন্দনার একাংশে
ব্রহ্মা বলেন যে, - তিনি (ব্রহ্মা),
বিষ্ণু ও
মহাদেব এই দেবীর প্রভাবে শরীর লাভ করেছেন। তিনি
মহাদেবের শক্তি হিসেবে বিরাজ করেন।
ব্রহ্মার বন্দনায় সন্তুষ্ট হয়ে, যোগমায়ারূপী এই দেবী, চোখ, মুখ, নাক, বাহু,
হৃদয় ও বক্ষস্থল থেকে বাহির হয়ে, দেবীরূপে আবির্ভূতা হন।
২. আদ্যাদেবী রূপ সতী
বিভিন্ন পুরাণ মতে– এই দেবী দক্ষের কন্যা হিসাবে সতী নামে পরিচিতা। কালিকা
পুরাণ মতে– দক্ষ মহামায়াকে [দুর্গা] কন্যারূপে পাওয়ার জন্য কঠোর তপস্যা করেন।
দক্ষের তপস্যায় সন্তুষ্ট হয়ে মহামায়া দক্ষকে বলেন, –তিনি অবিলম্বে তাঁর
(দক্ষের) পত্নীর গর্ভে তাঁর কন্যারূপ জন্মগ্রহণ করবেন এবং
মহাদেব-এর স্ত্রী হবেন। তবে তাঁকে (দুর্গাকে) যথাযথ সমাদর না করলে তিনি
দেহত্যাগ করবেন। এরপর দক্ষ অসিক্লী-কে বিবাহ করেন। বীরিণী'র গর্ভে মহামায়া
জন্মগ্রহণ করেন। দক্ষ এঁর নাম রাখেন সতী। [১-৪৪। অষ্টমোহধ্যায়, কালিকাপুরাণ]
৩. মহিষাসুর উপাখ্যান:
মার্কেণ্ডয় পুরাণের ৮২তম অধ্যায়ে রয়েছে- মহিষাসুর উপাখ্যান। এই
উপাখ্যানে পাওয়া যায়- মহিষাসুর নামক অসুর স্বর্গ থেকে দেবতাদের বিতারিত করে
স্বর্গ অধিকার করেছিল। পরাজিত দেবতারা এর প্রতিকারের জন্য ব্রহ্মার শরণাপন্ন
হন। তাঁরা সবিস্তারে অসুরেদের অত্যাচারের কথা ব্যক্ত করেন। দেবতাদের এই অভিযোগ
শোনার পর- ব্রহ্মাবিষ্ণু মহেশ্বর ক্রোধান্বিত হলে, তাঁদের তেজ প্রকাশিত হয়। এই
সময় অন্যান্য দেবতারাও তাঁদের তেজ ত্যাগ করেন। এই সম্মলিত তেজরাশি থেকে দুর্গার
আবির্ভাব হয়েছিল। দেবতার তেজ থেকে এই দুর্গার শরীরের বিভিন্ন অংশ তৈরি হয়েছিল।
এ রূপগুলো হলো– মহাদেবের তেজে মুখ, যমের তেজে চুল, বিষ্ণুর তেজে বাহু, চন্দ্রের
তেজে স্তন, ইন্দ্রের তেজে কটিদেশ, বরুণের তেজে জঙ্ঘা ও উরু, পৃথিবীর তেজে
নিতম্ব, ব্রহ্মার তেজে পদযুগল, সূর্যের তেজে পায়ের আঙ্গুল, বসুদের তেজে হাতের
আঙ্গুল, কুবেরের তেজে নাসিকা, প্রজাপতির তেজে দাঁত, অগ্নির তেজে ত্রিনয়ন,
সন্ধ্যার তেজে ভ্রূ, বায়ুর তেজে কান এবং অন্যান্য দেবতাদের তেজে শিবারূপী
দুর্গার সৃষ্টি হয়েছিল।
৪. শুম্ভ-নিশুম্ভ বধ উপখ্যান
মার্কেণ্ডয় পুরাণের মতে- শুম্ভ-নিশুম্ভ নামে দুই
অসুর ইন্দ্রপুরী দখল করে ত্রিলোক অধিকার করে। এরা সূর্য ও চন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ
গ্রহণ করে। এছাড়া কুবের, যম, বরুণ , অগ্নি, ও বায়ুর অধিকার লাভ করে। এরপর
দেবতারা মাতঙ্গ মুনির আশ্রমে এসে- দুর্গার আরাধনা করেন। আরাধনায় তুষ্ট হয়ে এই
দেবী প্রথমে মাতঙ্গ মুনির স্ত্রীর রূপ ধরে দেবতাদের কাছে আসেন এবং পরে একটি
বিশেষ মূর্তি ধারণ করেন। এই মূর্তিতে এঁর চার হাত ও গলায় নরমুণ্ডমালা ছিল। এই
মূর্তি মাতঙ্গ মুনির স্ত্রীর রূপ মাতঙ্গী'র দেহরূপ থেকে নির্গত হয়েছিল বলে– এর
নাম হয়েছিল মাতঙ্গী। এই মূর্তীতে দুর্গার মাথায় একটি মাত্র জটা থাকায় ইনি একজটা
নামে অভিহিত হয়ে থাকেন।
মার্কেণ্ডেয় পুরাণের মতে, হিমালয়ে গিয়ে দেবতারা দেবীর স্তব করেছিলেন। এই সময়
পার্বতী জাহ্নবী নদীতে স্নান করতে অগ্রসর হলে, দেবতাদের জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা
কার স্তব করছো। এই বাক্য শেষ হওয়ার সাথে সাথে, পার্বতীর শরীরকোষ থেকে দুর্গা
দেবী প্রকাশিত হলেন। এই কারণে, দেবীর অপর নাম কৌষিকী। এরপর পার্বতী কৃষ্ণকায়
মূর্তি ধারণ করলেন। এই রূপের জন্য তিনি কালিকা নামে অভিহিত হলেন।
নজরুল সঙ্গীতে দুর্গাবিষয়ক গানের শ্রেণিকরণ:
পৌরাণিক কাহিনি অনুসরণে নজরুলে গানে দুর্গাকে স্বনামে দুই শ্রেণির গান। এর একটি
হলো সাধারণ পর্যায় অপরটি দুর্গা পূজার গান। দুর্গা স্বনামের গানে পাওয়া যায় প্রধান দুটি প্রধান ধারার গান।
এর একটি হলো- সাধারণ, অপরটি আনুষ্ঠানিক গান। এই ধারার অন্যতম অধ্যায় হলো-
দুর্গাপূজার গান।
- সাধারণ: এই জাতীয় গানে কোন উপলক্ষ ছাড়াই সাধারণভাবে দুর্গাকে উপস্থাপন করা হয়েছে।
বা এই জাতীয় গানে দেবী কোনো বিশেষ নামে (শ্যামা, কালী, ইত্যাদি) সম্বোধিতা হন নি।
এ সকল গানে দেবী সাধারণভাবে মাতৃরূপিণী হয়ে পূজিতা হয়েছেন।
- মাতৃরূপিণী: এই জাতীয় গানের জগৎ-জননী
প্রকৃত নাম জানা যায় না, সাধকের কাছে তাঁর একমাত্র সম্বোধিত নাম -'মা'।
মূলত এসকল গানে তিনি
'মাতৃরূপেণ সংস্থিতা'। এসকল গানে জগৎ-জননী রূপে পূজিতা হয়ে থাকেন স্বনামে বা বিশেষিত নামে।
এই জাতীয় গানের উপস্থাপনের প্রকৃতি অনুসারে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন-
- বন্দনা : এই জাতীয় গানে গানে শুধু
দেবীর রূপ ও মহিমার বর্ণনা পাওয়া যায়। এর ভিতর ভক্তি রয়েছে কিন্তু দেবীর
কাছে কোনো প্রার্থনা নেই।
-
আয় সবে ভাই বোন [তথ্য]
- ওগো মাগো আজো বেঁচে আছি [তথ্য]
- কে তোরে কি বলেছে মা [তথ্য]
- তোরা মা বলে ডাক [তথ্য]
- জয় দুর্গা, দুর্গতি নাশিনী [তথ্য]
- ভবানী শিবানী দশপ্রহরণধারিণী [তথ্য]
- বন্দনা ও প্রার্থনা : এই
জাতীয় গানে পাওয়া যায়, দুর্গার মহিমা বন্দনা এবং প্রার্থনার
সমন্বিত রূপ । এই জাতীয়
গানে পাওয়া যায়- দেবী-সঙ্গের প্রার্থনা এবং জগৎকল্যাণ রূপিণী দেবীর কাছে প্রার্থনা ।
জগৎ
জননী
রূপিণী দুর্গার শাশ্বত
রূপ হলো- জগৎকল্যাণী। রূপ-বৈচিত্রের ধারায় জগৎকল্যাণীর দুটি রূপ রয়েছে। এর
একটি হলো- মানুষ তার যাপিত জীবনে নানা রোগ, শোক, দুঃখ-বেদনায় অসহায় হয়ে পড়ে।
এই অবস্থায় দেবী ভয়ঙ্করী না হয়ে- মায়ের মতো কাছে টেনে নেন।দেবীর অপর রূপ হলো-
অকল্যাণ, অশুভ বিনাশিনী ভয়ঙ্করী রূপ। আপাত দৃষ্টিতে দেবী ভয়ঙ্করা হলেও,
তাঁর লক্ষ্য হলো জগতের কল্যাণ প্রতিষ্ঠা।
নজরুলের গানে জগৎ-কল্যাণী রূপকে দুই ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এই ধরন
দুটি হলো- এর একটি ধারায় রয়েছে পস্থাপন এন জাতীয় গানে দেবীর কাছে পার্থনা করা হয়- দুটি এই জাতীয় গানে
মূলত দুর্গার জগৎকল্যাণীর রূপের আহ্বান করা হয়েছে। এর ভিতরে কিছু গানে
পাওয়া যায়- ভক্তের নিজের ভিতরে দেবীর প্রার্থনা
- সাধারণ
- জয় দুর্গা, জননী
[তথ্য]
- ও মা নির্গুনের প্রসাদ দিতে [তথ্য]
- কেন আমায় আনিলি মাগো [তথ্য]
- খড়ের প্রতিমা পূজিস রে তোরা(মাটির প্রতিমা)
[তথ্য]
- দেবীশক্তির প্রার্থনা: ভক্ত নিজেই জগতের
কল্যাণে উদ্যোগী হবেন দেবীশক্তির সাহায্যে।
- আঁধার ভীত এ চিত যাচে [তথ্য]
- ও মা দনুজ-দলনী (হ্রীঙ্কার রূপিনী মহালক্ষ্মী) [তথ্য]
- অসুরনাশিনী দেবীর আহ্বান: জগতের কল্যাণে দেবী স্বয়ং
আবির্ভূতা হওয়ার প্রার্থ না ।
- এই পৃথিবীতে এত শক্তির খেলা (পৃথিবীতে এত) [তথ্য]]
- এবার নবীন-মন্ত্রে হবে জননী তোর উদ্বোধন [তথ্য]
- মাগো চিন্ময়ী রূপ ধরে আয় [তথ্য]
- দশমহাবিদ্যারূপিণী মহামায়ার নামস্মরণ ও প্রার্থনা
- কে জানে মা তব মায়া মহামায়ারূপিণী [তথ্য]
- দেবী-সঙ্গ: এই জাতীয় গানে পাওয়া যায়,
মাতৃরূপিণী দুর্গা সান্নিধ্য লাভের প্রার্থনা ।
- আমি বেলপাতা জবা দেব না [তথ্য]
- ও মা যা কিছু তুই দিয়েছিলি [তথ্য]
- অভিমান ও
অনুযোগ: এই জাতীয় গানে পাওয়া যায়- ভক্তের অভিব্যক্তিতে
মাতা-সন্তানের মান অভিমানের মধুর রূপ পাওয়া যায় অনুযোগের আঙ্গিকে
- ও মা তোর ভুবনে জ্বলে এত আলো [তথ্য]
- ওরে হতভাগী রক্ত-খাগী [তথ্য]
-
কি নাম ধরে ডাকব তোরে [তথ্য]
-
কোথায় গেলি মাগো আমার [তথ্য]
- আনুষ্ঠানিক গান (শারদীয় দুর্গাপূজার গান):
পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী, যজ্ঞস্থলে পিতা দক্ষ প্রজাপতির মুখে পতি
শিবের নিন্দাবাণী ও কটূক্তি শুনে ক্রোধে ও ক্ষোভে অধীরা সতী দেহত্যাগ
করেছিলেন এবং শিবকে আবার পতিরূপে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষায় গিরীরাজ হিমালয়ের
গৃহে দেবী মহামায়া তার কন্যা পার্বতীরূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন।
পুরাণে বর্ণিত মহিষাসরমর্দিনী চণ্ডিকা বা শুম্ভ নিশুম্ভ দলনি কৌশিকী এই সকল দেবী মাতা পার্বতীর অবতার।
অষ্টাদশ ও ঊনবিংশ শতাব্দীতে রচিত বাংলা আগমনী গানগুলিতে দুর্গারূপে শিবজায়া পার্বতীর সপরিবারে পিতৃগৃহে অবস্থানের এই আনন্দময় দিনগুলোর এবং তার বিবাহিত জীবনের অপূর্ব বর্ণনা পাওয়া যায়। এসব গানে একদিকে যেমন ফুটে উঠেছে কন্যা বিরহে কাতরা মা মেনকার গভীর অপত্যস্নেহ, অন্যদিকে তেমনি চিত্রিত হয়েছে স্বামী সোহাগিনী পার্বতীর গর্ব ও আনন্দের উচ্ছাস।
কখনো গৌরী হয়ে উঠেছেন জগজ্জননী এবং
কখনো বাংলার মাতৃরূপিণী
দেবী জনপদাবাসীর কাছে হয়ে উঠেছেন কন্যাসমা। আগমনী গানগুলি শাক্ত পদাবলীর অন্তর্গত; এগুলি রচয়িতাদের মধ্যে সাধক রামপ্রসাদ সেন, কমলাকান্ত চক্রবর্তী, দাশরথি রায় এবং পরবর্তীকালে নাট্যাচার্য গিরিশচন্দ্র ঘোষ, কাজী নজরুল ইসলাম প্রমুখ ব্যক্তিরা প্রভূত মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন।
সামগ্রিকভাবে দুর্গাপূজা উপলক্ষে গানগুলোর বিষয়ভিত্তিক তালিকায় পাওয়া যায়-
আগমনী
গান ও বিজয়ার গান। নজরুলের রচিত পূজার সময়ভিত্তিক ক্রমতালিকায় প্রথম পাওয়া
যায় আগমনী গান।
- এলো রে এলো ঐ রণ-রঙ্গিণী [তথ্য]
- এলো রে শ্রী দুর্গা [তথ্য]
- এসো আনন্দিতা ত্রিলোক-বন্দিতা [তথ্য]
রঙ্গার্থ:
- এবারের পূজা মাগো দশভূজা [তথ্য]
- ওমা পেঁচা যদি খ্যাঁচ খ্যাঁচায় মা মাচায় উঠিয়া বসি [তথ্য]
- বিজয়ার গান: দুর্গাপূজার সমাপ্তি ঘটে দেবী বিসর্জনের
মধ্য দিয়ে। সাধারণভাবে একে বলা হয়- বিজয়া দশমী। বিষয়ানুসারে
বিজয়া দশমীর গানকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়। ভাগ দুটি হলো- বিজয়ার গান
ও বিজয়োৎসব অন্তের গান।
- বিজয়োৎসব অন্তের গান। পৌরাণিক কাহিনি মতে- শারদীয় দুর্গপূজার
শেষে দুর্গ ফিরে যান কৈলাসে। এই উৎসবের সাথে সাথে দেবীর মহিমা বিসর্জিত হয়
না। তাঁর মহিমা বি রা জ করে স্বর্গ ও মর্তলোকে। এই ভাবনা থেকে কবি সৃষ্টি
করেছিলেন 'বিজয়া' নামক গীতি-আলেখ্য। এই গীতিআলেখ্যা পাওয়া কৈলাসবাসী ও
মর্তবাসীর আবেদন। এই সঙ্গীতালেখ্যের ৬টি গানের ভিতরে
১টি গান 'জগৎকল্যাণী রূপে দেবীর আহ্বান রয়েছেl এই গান গুলো হলো-
- এবার নবীন-মন্ত্রে হবে জননী তোর উদ্বোধন
['জগৎকল্যাণী]
[তথ্য]
- কে সাজালো মা-কে আমার [তথ্য]
- খড়ের প্রতিমা পূজিস রে তোরা [তথ্য]
- বিজয়োৎসব ফুরাইল মাগো [তথ্য]
- মাকে ভাসায়ে ভাটির স্রোতে [তথ্য]
- মোরা মাটির ছেলে [তথ্য]
- যাস্নে মা ফিরে,যাস্নে জননী [তথ্য]
- দুর্গার রূপ বৈচিত্র্যে
আদ্যাশক্তি হিসেবে অভিহিতা দুর্গাকে নানা প্রেক্ষাপটে
নানা নামে নজরুলের তাঁর গানে এনেছেন। এর ভিতরে সর্বাধিক রূপটি হলো- শ্যামা এবং কালী হিসেবে।
মোটা দাগে এই গানগুলোকে শ্যামা-সঙ্গীত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। দ্বিতীয় সারিতে রয়েছে-
দক্ষা কন্যা সতী হিসেবে। এর ভিতরে বাংলা গানে - 'শ্যামা-সঙ্গীত' একটি স্বতন্ত্র
অধ্যায় হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
রাসোৎসব ও শাক্ত-সঙ্গীত
রাসোৎসব
পালিত হয়ে থাকে বৈষ্ণব ধারায়- রাধাকৃষ্ণের লীলা অনুসরণে। এই সূত্রপাত ঘটেছিল
শিবপার্বতীর ইচ্ছানুসারে।ঔ
মণিপুরের উপকথা অনুসারে জানা যায়, শ্রীকৃষ্ণ একবার রাধাকে নিয়ে একটি
রাসলীলা ব্যবস্থা করেন। মহাদেব এই লীলা দেখার আগ্রহ প্রকাশ করলে, কৃষ্ণ তাঁকে
রাসলীলাস্থলের দ্বার রক্ষক হয়ে এই লীলা উপভোগের অনুমতি দেন। মহাদেব যথারীতি
দ্বাররক্ষক হয়েই এই লীলা উপভোগ করেন। এই নৃত্যলীলা উপভোগ করতে করতে মহাদেব
দ্বাররক্ষার কর্তব্য ভুলে যান। এই সময়, পার্বতী সেখানে উপস্থিত হন। মোহিত মহাদেবকে
ফাঁকি দিয়ে, পার্বতী এই লীলা উপভোগ করেন। এই অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর, পার্বতী
নিজেদের জন্য একটি রাসলীলার আয়োজন করার জন্য মহাদেবের কাছে আবদার করেন। মহাদেব তাতে
সম্মত হয়ে রাসলীলার উপযোগী স্থান নির্বাচন করার জন্য সারা পৃথিবী ঘুরে বেড়ালেন।
কিন্তু উপযুক্ত স্থান পেলেন না। অবশেষে তাঁরা ঘুরতে ঘুরতে মণিপুর রাজ্যে এলেন।
অবশেষে তিনি কোউব্রু পর্বত (কুমার পর্বত)-কে এই নাচের জন্য উপযুক্ত স্থান নির্বাচন
করেলন। পরে বিভিন্ন দেব-দেবীদের সহায়তায় এদের সমবেত চেষ্টায়
রাসলীলার ক্ষেত্র তৈরি হলে, সাতদিন সাতরাত শিব-পার্বতীর রাসলীলা অনুষ্ঠিত হয়।
এই
অনুষ্ঠানের সঙ্গীত সহযোগী ছিলেন গন্ধর্ব এবং অন্যান্য দেবতারা। রাত্রিবেলার
অনুষ্ঠানের জন্য নাগরাজ অনন্তদেব তাঁর মাথার মণি দান করেন। নাগদেবের মণির
নামানুসারে এই স্থানের নাম হয় মণিপুর। কথিত আছে, রাসলীলা শেষে দেবতারা মণিপুরকে
একটি জনপদের মর্যাদা দেন এবং এই অঞ্চলের প্রথম রাজা হন অনন্তদেব। এই থেকে মণিপুরে
নৃত্যগীতের সূচনা হয়। মণিপুরী নৃত্যের বিভিন্ন উপকরণের সাথে
নানা ধরনের উপাখ্যান জড়িয়ে আছে। এই উপাখ্যানগুলোও মণিপুরী নাচের মতই চিরায়ত কাহিনীতে
পরিণত হয়েছে। মণিপুরের সাঙ্গীতিক ঐতিহ্য সুপ্রাচীন। ধারণা করা এদের ঐতিহ্যগত লোক
নাচই কালক্রমে চিরায়ত নৃত্যধারায় পরিণত হয়েছে। এদের নৃত্যগীতের
প্রাচীন নমুনা হিসেবে উল্লেখ করা হয়−−
লাইহারাউবা নৃত্য।
- কে এলি মা টুকটুকে লাল [তথ্য]
- জ্যোতির্ম্ময়ী মা এসেছে
[তথ্য]
- মা এসেছে মা এসেছে [তথ্য]
- মমা হবি না মেয়ে হবি
- মাগো তোমার অসীম মাধুরী [তথ্য]
২.
দুরগা বন্দনা:
এই জাতীয় গানে
দেবী দুর্গাকে বন্দনা করা হয়েছে। এই শ্রেণির গানে দুর্গা-বন্দনা উপস্থাপিত হয়েছে
দুটি ধারায়।
- প্রত্যক্ষ বন্দনা: দুর্গার বহুবিধ রূপ বর্ণার মধ্য দিয়ে এই শ্রেণির
গানে সরাসরি দুর্গা বন্দনা করা হয়েছে। এসকল গানে দুর্গাকে নানাবিধ নামে অভিহিত
করা হয়েছে। যেমন- কালী,
চণ্ডিকা, দুর্গা, নিশুম্ভ-বিনাশিনী, শ্যামা, মহাকলি, মহাসরস্বতী, যোগমায়া,
রক্তদন্তিকা, হরপ্রিয়া।
- কে তোরে কি বলেছে মা [তথ্য]
- কে পরালো মণ্ডু-মালা [তথ্য]
- কে বলে মোর মাকে কালো [তথ্য]
- দেখে যা রে রুদ্রাণী মা সেজেছে [তথ্য]
- তোর কালো রূপ লুকাতে মা [তথ্য]
- নাচেরে মোর কালো মেয়ে
- মহাকালের কোলে এসে [তথ্য]
- মহাবিদ্যা আদ্যাশক্তি পরমেশ্বরী [তথ্য]
- মাগো আজো বেঁচে আছি
- মাত্ল গগন অঙ্গনে ঐ
[তথ্য]
- মায়ের অসীম রূপ (অসীম রূপ সিন্ধুতে
রে) [তথ্য]
- শ্মশান-কালীর নাম শুনে রে ভয় কে পায়] [তথ্য]
- পরোক্ষ বন্দনা: এই শ্রেণির গানে শ্যামা বা দুর্গাকে বন্দনা করা হয়েছে-
দুর্গা-ভক্তির উপকরণাদির মাধ্যমে। এই বন্দনার মাধ্যম হিসেবে দেখা যায় ব্যক্তি,
ফুল ইত্যাদি ভিতরে রয়েছে যেমন-
- পুষ্প বন্দনা: বল্ রে জবা বল্ [তথ্য]
৪.পরমভক্তি: এই জাতীয় গানে ভক্ত দেবীর কাছে পরমভক্তিতে সমর্পিত।
শত-সহস্র আঘাত, দুঃখ-বেদনার মধ্যেও ভক্ত দেবী-ভক্তি থেকে বিচ্যুত হয় না। যেমন-
- মাগো আমি তান্ত্রিক নই [তথ্য]
- মোরে আঘাত যত আঘাত যত হান্বি শ্যামা
৫. প্রার্থনা:
সংসারের মোহ থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে- নিজের
অপারগতা প্রকাশ করে, দেবীর কাছে আত্মসমর্পণ করে মুক্তি প্রার্থনা করা হয়েছে এই
জাতীয় গানে। পরম দুঃখকে অবহেলা করে দেবীকে পাওয়ার আনন্দই যেন এই গানের ভক্তিরস।
এ ছাড়া এই জাতীয় গানে অতীতের কৃত্কর্মে জন্য অনুতপ্ত হয়ে, দেবীর কাছে ক্ষমা
প্রার্থনা করা হয় এই জাতীয় গানে।
- আঁধার ভীত এ চিত যাচে
[তথ্য]
- আমায় আর কত দিন মহামায়া
[তথ্য]
- আমার মুক্তি নিয়ে (মাগো আমার মুক্তি নিয়ে)
[তথ্য]
- ওমা দুঃখ অভাব ঋণ যত মোর
[তথ্য]
- দুঃখ অভাব শোক দিয়েছ
[তথ্য]
- ভুল করেছি ও মা শ্যামা
[তথ্য]
- যে নামে মা ডেকেছিল
[তথ্য]
৬. অনুযোগ: যাপিত জীবনের বহু দুঃখের কারণ অজ্ঞাত থাকে। এই কারণ অনুসন্ধানে
ব্যর্থ হয়ে কখনো কখনো ভক্ত তার আরাধ্য প্রভুর কাছে অনুযোগ প্রকাশ করে থাকে। এই
জাতীয় শাক্তসঙ্গীতে এই অনুভাবের উপস্থাপন করা হয়েছে।
- ফিরিয়ে দে মা ফিরিয়ে দে [তথ্য]
৭. আত্মবোধন: এই জাতীয় গানে নিজের উপলব্ধিকে নিজেকে সংশোধনের জন্য নির্দেশিত
করে। এই শ্রেণির গানের বাণীর তুই, তোর ইত্যাদি হলো ভক্ত নিজেই। যেমন-
- দুর্গতি -নাশিনী আমার [তথ্য]
৮. শৈব-সঙ্গীত: শাক্ত সঙ্গীতের মূল দেবী দুর্গা। কিন্তু দুর্গার স্বামী
হিসেবে দুর্গার শিবের অংশভাগী। তাই শিব-বন্দনাও শাক্ত-সঙ্গীতের অংশ হিসেবে বিবেচনা
করা হয়। যেমনি-
- ওঁ শঙ্কর হর হর শিব সুন্দর [তথ্য]
- জয় উমানাথ শিব মহেশ্বর [তথ্য]
- জয় ভূতনাথ হে দেব প্রলঙ্কর [তথ্য]
- নাচিছে নটরাজ, শঙ্কর মহাকাল
[তথ্য]
৯.
হাস্যরসাত্মক শাক্তসঙ্গীত: এই জাতীয় গানে- সামাজিক ও পৌরাণিক নানা অসঙ্গতিকে ব্যঙ্গা
করে হাস্যরসোদ্দীপক রচিত কিছু শাক্তসঙ্গীতও রচনা করেন। যেমন-
ৱ
নজরুলের শাক্তসঙ্গীতে ব্যবহৃত রাগ
শাক্তসঙ্গীতে রাগসমূহ:
নজরুলের রচিত শাক্তসঙ্গীতের সংখ্যা ২৩৮। এর ভিতরে
রাগের নাম পাওয়া যায় মোট ৫২টি এই রাগগুলো হলো-
এরমধ্যে ভৈরবী রাগে ৬টি, দেশ
রাগে ৫টি, বাগেশ্রী রাগে ৪টি, কাফি-সিন্ধুরাগে ৪টি, দরবাড়ী কানড়া, জৌনপুরী ও কৌশিক
কানাড়া রাগে ২টি করে এবং বাকি রাগগুলোতে ১টি করে গান পাওয়া যায়।
-
আনন্দ ভৈরব,
আশাবরী,
ইমন,
কাফি-সিন্ধু, কামোদ,
কৌশিকী কানাড়া,
জৌনপুরী,
তিলং
দরবারী-কানাড়া,
দুর্গা,
দেশ,
দেশী, নটনারায়ণ,
নারায়ণী পঞ্চম,
বাগেশ্রী,
ভূপালী,
ভৈরব,
ভৈরবী,
বাগেশ্রী-বাহার, বেহাগ-কামোদ,
মালকোষ,
যোগিয়া
শিবমত ভৈরব,
শিবরঞ্জনী,
শিবমত ভৈরব, বঙ্গাল,
বারোয়া,
হাম্বীর।
নজরুলের শাক্তসঙ্গীতের তাল
নজরুলের রচিত শাক্ত সঙ্গীতের বর্ণানুক্রমিক তালিকা
- এলো রে শ্রী দুর্গা
[তথ্য]
- এলো শিবানী-উমা এলো
[তথ্য]
- এসো আনন্দিতা ত্রিলোক-বন্দিতা
[তথ্য]
- এসো মা দশভুজা
[তথ্য]
- এসো মা পরমা শক্তিমতী
[তথ্য]
- ও মা তুই আমারে ছেড়ে আছিস্
[তথ্য]
- ও মা খড়্গ নিয়ে মাতিস রণে
- ও মা তোর ভুবনে জ্বলে এত আলো
[তথ্য]
- ও মা ত্রিনয়নী! সেই চোখ দে
[তথ্য]
- ও মা দনুজ-দলনী (হ্রীঙ্কার রূপিনী মহালক্ষী)
[তথ্য]
- ও মা দুঃখ অভাব ঋণ যত মোর
[তথ্য]
- ও মা নির্গুনের প্রসাদ দিতে
[তথ্য]
- ও মা বক্ষে ধরেন শিব যে চরণ (বক্ষে ধরেন)
[তথ্য]
- ও মা যা কিছু তুই দিয়েছিলি
[তথ্য]
- ওঁ শঙ্কর হর হর শিব সুন্দর
[তথ্য]
- ওগো মাগো আজো বেঁচে আছি [তথ্য]
- ওরে আজই না হয় (কালী কালী বলতে হবে)
[তথ্য]
- ওরে আলয়ে আজ মহালয়া (এলো মা আমার মা)
[তথ্য]
- ওরে যোগ-সাধনা পরে হবে
[তথ্য]
- ওরে সর্বনাশী মেখে এলি
[তথ্য]
- ওরে হতভাগী রক্ত-খাগী
[তথ্য]
- কমলা রূপিণী শক্তি-স্বরূপিনী
[তথ্য]
- করুণা তোর জানি মাগো
[তথ্য]
- কালী কালী মন্ত্র জপি
[তথ্য]
- কালী সেজে ফির্লি ঘরে (ও মা)
[তথ্য]
- কি নাম ধরে ডাকব তোরে
[তথ্য]
- কী দশা হয়েছে মোদের
[তথ্য]
- কেঁদো না কেঁদো না মাগো
[তথ্য]
- কে এলি মা টুকটুকে লাল
[তথ্য]
- কে তোরে কি বলেছে মা
[তথ্য]
- কে পরালো মণ্ডু-মালা
[তথ্য]
- কে বলে মোর মাকে কালো
[তথ্য]
- কে সাজালো মা-কে আমার
[তথ্য]
- কেন আমায় আনিলি মাগো
[তথ্য]
- কোথায় গেলি মাগো আমার
[তথ্য]
- খড়ের প্রতিমা পূজিস রে তোরা (মাটির প্রতিমা)
[তথ্য]
- ঘর ছাড়াকে বাঁধতে এলি কে মা
[তথ্য]
- জগৎ জুড়ে জাল ফেলেছিস মা
[তথ্য]
- জয় উমানাথ শিব মহেশ্বর
[তথ্য]
- জয় দুর্গা,জননী,দাও শক্তি (ওম্ সর্বমঙ্গল)
[তথ্য]
- জয় দুর্গা,দুর্গতি নাশিনী
[তথ্য]
- জয় বিবেকানন্দ সন্ন্যাসী বীর
[তথ্য]
- জয় ভূতনাথ হে দেব প্রলঙ্কর
[তথ্য]
- জয় মহাকালী,জয় মধু-কৈটভ
[তথ্য]
- জয় রক্তম্বরা রক্তবর্ণা জয় মা
[তথ্য]
- জয় হরপ্রিয়া শিবরঞ্জনী
[তথ্য]
- জাগো দেবী দুর্গা চণ্ডিকা মহাকালী
[তথ্য]
- জাগো যোগমায়া জাগো
[তথ্য]
- জাগো শ্যামা জাগো শ্যামা
[তথ্য]
- জাগো হে রুদ্র, জাগো রুদ্রাণী
[তথ্য]
- জ্বালো দেয়ালী জ্বালো
[তথ্য]
- জ্যোতির্ম্ময়ী মা এসেছে
[তথ্য]
- তুই জগৎ-জননী শ্যামা (জগৎ-জননী শ্যামা)
[তথ্য]
- তুই পাষাণ গিরির মেয়ে
[তথ্য]
- তুই কালী মেখে জ্যোতি ঢেকে
[তথ্য]
- তুই বলহীনের বোঝা বহিস্
[তথ্য]
- (তুই) মা হ'বি না মেয়ে হ'বি [তথ্য]
- তোমার আঘাত শুধু দেখলো ওরা
[তথ্য]
- তোর কালো রূপ দেখতে মা গো
[তথ্য]
- তোর কালো রূপ লুকাতে মা
[তথ্য]
- তোর জননীরে কাঁদাতে
[তথ্য]
- তোর নামেরই কবচ দোলে
[তথ্য]
- তোর মেয়ে যদি থাকতো উমা
[তথ্য]
- তোর রাঙা পায়ে নে মা শ্যামা
[তথ্য]
- তোরা মা বলে ডাক
[তথ্য]
- ত্রিংশ কোটি তব সন্তান ডাকে তোর
[তথ্য]
- ত্রিজগৎ আলোক'রে আছে
[তথ্য]
- ত্রিভুবনবাসী যুগল মিলন
[তথ্য]
- থির হয়ে তুই বস্ দেখি মা
[তথ্য]
- দীনের হতে দীন-দুঃখী অধম যেথা থাকে
[তথ্য]
- দুঃখ অভাব শোক দিয়েছ (ওমা)
[তথ্য]
- দুর্গতি -নাশিনী আমার
[তথ্য]
- দেখে যা রে রুদ্রাণী মা সেজেছে
[তথ্য]
- দেব আর্শীবাদ- লহ সতী পুণ্যবতী
[তথ্য]
- দেবী তোমার চরণ কমল
[তথ্য]
- ধরো হাত নামিয়া এসো শিব-লোক
[তথ্য]
- নন্দলোক হতে (আনন্দলোক)আমি এনেছি
[তথ্য]
- নমো নমো নমো নমঃ হে নটনাথ
[তথ্য]
- নাচিছে নটরাজ, শঙ্কর মহাকাল
[তথ্য]
- নাচে নাচে রে মোর কালো মেয়ে
[তথ্য]
- নারায়ণী উমা খেলে হেসে হেসে
[তথ্য]
- নিপীড়িতা পৃথিবী ডাকে
[তথ্য]
- নিপীড়িতা পৃথিবীকে করো করো ত্রাণ
[তথ্য]
- নিশি কাজল শ্যামা
[তথ্য]
- নীলবর্ণা নীলোৎপল-নয়না
[তথ্য]
- নৃত্যকালী শঙ্কর সঙ্গে নাচে
[তথ্য]
- নৃত্যময়ী নৃত্যকালী নিত্য নাচে
[তথ্য]
- পরমা প্রকৃতি দুর্গে শিবে
[তথ্য]
- পাষাণী মেয়ে! আয়, আয় বুকে আয়
[তথ্য]
- পুণ্য মোদের মায়ের আসন
[তথ্য]
- প্রণমামী শ্রীদুর্গে নারায়ণী
[তথ্য]
- ফিরিয়ে দে মা ফিরিয়ে দে
[তথ্য]
- বরষ গেল আশ্বিন এলো উমা এলো কই [তথ্য]
- বল্ মা শ্যামা বল্ তোর বিগ্রহ
[তথ্য]
- বল্ রে জবা বল্
[তথ্য]
- বাজো বাঁশরি বাজো বাঁশরি বাজো [তথ্য]
- বাবার হলো বিয়ে [তথ্য]
- বিজয়োৎসব ফুরাইল মাগো
[তথ্য]
- বিরূপ আঁখির কি রূপই তুই আঁকলি [তথ্য]
- বুঝি চাঁদের আর্শিতে মুখ দেখেছে
[তথ্য]
- ব্রহ্মময়ী পরাৎপরা ভবভয় [তথ্য]
- ভবানী শিবানী কালী করালী মুণ্ডমালী [তথ্য]
- ভবানী শিবানী দশপ্রহরণধারিণী
[তথ্য]
- ভাগীরথীর ধারার মত সুধার সাগর
- ভিখারিনী করে পাঠাইলি মোরে
[তথ্য]
- ভুবনময়ী ভবনে এসো
[তথ্য]
- ভুবনের নাথ! এ নব ভবনে
[তথ্য]
- ভুল করেছি ও মা শ্যামা
[তথ্য]
- মহাকালের কোলে এসে
[তথ্য]
- মহাদেবী উমারে আজি সাজাবো
[তথ্য]
- মহাবিদ্যা আদ্যাশক্তি পরমেশ্বরী
[তথ্য]
- মা! আমি তোর অন্ধ ছেলে
[তথ্য]
- (মা) একলা ঘরে ডাক্ব না
- মা এলো রে মা এলো [তথ্য]
- মা এসেছে মা এসেছে
[তথ্য]
- মা কবে তোরে পারবো দিতে
[তথ্য]
- মা খড়গ নিয়ে মাতিস রণে (খড়গ নিয়ে)
[তথ্য]
- মা তোর কালো রূপের মাঝে [তথ্য]
- মা তোর চরণ-কমল ঘিরে
[তথ্য]
- মা ব্রহ্মময়ী জননী তোর
[তথ্য]
- মা, মাগো, মা তুমি করেছ মোর লাজ নিবারণ
[তথ্য]
- মা মেয়েতে খেল্ব পুতুল
[তথ্য]
- মাকে আদর করে কালী বলি
[তথ্য]
- মাকে আমার দেখেছে যে
[তথ্য]
- মাকে ভাসায়ে জলে (মাকে ভাসায়ে ভাটির স্রোতে)
[তথ্য]
- মাগো আমি আর কি ভুলি
[তথ্য]
- মাগো আমি তান্ত্রিক নই
[তথ্য]
- মাগো আমি মন্দমতি তবু যে সন্তান
[তথ্য]
- মাগো কে তুই,কার নন্দিনী
[তথ্য]
- মাগো চিন্ময়ী রূপ ধরে আয়
[তথ্য]
- মাগো তোমার অসীম মাধুরী [তথ্য]
- মাগো তোরি পায়ের নূপুর বাজে
[তথ্য]
- মাগো ভুল করেছ [তথ্য]
- মাগো মহিষাসুর সংহারিণী
[তথ্য]
- মাত্ল গগন অঙ্গনে ঐ
[তথ্য]
- মাতৃ নামের হোমের শিখা [নজরুল ইসলাম]
[তথ্য]
- মায়ের অসীম রূপ (অসীম রূপ সিন্ধুতে রে)
[তথ্য]
- মায়ের আমার রূপ দেখে যা
[তথ্য]
- মায়ের চেয়েও শান্তিময়ী
[তথ্য]
- মোরে আঘাত যত আঘাত যত হান্বি শ্যামা
- মাগো আজো বেঁচে আছি
- মাগো আমি তান্ত্রিক নই
[তথ্য]
- মাগো তোমার অসীম মাধুরী
[তথ্য]
- মোর আদরিণী কালো মেয়ে
[তথ্য]
- মোরা মাটির ছেলে
[তথ্য]
- মোরে মায়া ডোরে বাঁধিস যদি ম
[তথ্য]
- যাস্নে মা ফিরে,যাস্নে জননী
[তথ্য]
- যার মেয়ে ঘরে ফিরল না
[তথ্য]
- যারা আজ এসেছে (ওরা আমার কেহ নয়)
[তথ্য]
- যে কালীর চরণ পায় রে
[তথ্য]
- যে নামে মা ডেকেছিল
[তথ্য]
- যোগী শিব শঙ্কর
[তথ্য]
- রক্ষাকালীর রক্ষা কবচ
[তথ্য]
- রাঙা জবার বায়না ধ'রে
[তথ্য]
- রোদনে তোর বোধন বাজে
[তথ্য]
- লুকোচুরি খেলতে হরি
[তথ্য]
- শক্তের তুই ভক্ত শ্যামা (তোরে) যায় না পাওয়া কেঁদে
[তথ্য]
- শঙ্কর অঙ্গলীনা যোগ মায়া
[তথ্য]
- শঙ্কর সাজিল প্রলঙ্কর সাজে
[তথ্য]
- শঙ্কাশূন্য লক্ষ কন্ঠে বাজিছে শঙ্খ ঐ
[তথ্য]
- শিব অনুরাগিণী গৌরী জাগে
[তথ্য]
- শূন্য বুকে ফিরে আয় ফিরে আয় উমা [তথ্য]
- শ্মশান-কালীর নাম শুনে রে ভয় কে পায়]
[তথ্য]
- শ্মশান চণ্ডাল, শ্মশান চণ্ডাল শোন, বলি গো তোমারে
[তথ্য]
- শ্মশানে জাগিছে শ্যামা
[তথ্য]
- শ্যামা তুই বেদেনীর মেয়ে
[তথ্য]
- শ্যামা তোর নাম যার জপমালা
[তথ্য]
- শ্যামা নামের ভেলায় চ'ড়ে
[তথ্য]
- শ্যামা নামের লাগল আগুন
[তথ্য]
- শ্যামা বড় লাজুক মেয়ে (আমার শ্যামা বড়)
[তথ্য]
- শ্যামা বলে ডেকেছিলাম
[তথ্য]
- সংসারেরি দোলনাতে মা
[তথ্য]
- সতী মা কি এলি ফিরে
[তথ্য]
- সন্ধ্যার আঁধার ঘনাইল মাগো [তথ্য]
- সর্বনাশী! মেখে এলি একোন চুলার ছাই
- সুরধূনী-ধারার মত (ভাগীরথীর ধারার মত)
[তথ্য]
- সৃজন ছন্দে আনন্দে নাচো নটরাজ
[তথ্য]
- সোনার আলো ঢেউ খেলে যায়
[তথ্য]
- হর হর শঙ্কর! জয় শিব শঙ্কর
[তথ্য]
- হে পরমাশক্তি পরা প্রেমময়ী তোমারি
[তথ্য]
- হে মরণ -লক্ষ্মী! খোলো অবগুণ্ঠন
[তথ্য]